আবু হুরায়রা (রা) এর উদ্দেশে হযরত মুহাম্মদ সা: এর দেয়া ১৮টি উপদেশ
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোটা মানবজাতির জন্য রহমত স্বরূপ। মানুষ তার জীবন কিভাবে পরিচালনা করবে তার বিস্তারিত নিয়ম কানুন রাসূল সা. নিজে করে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি বলে গেছেন কি করতে হবে আর কি করা যাবে না।
আর তার পরিপ্রেক্ষিতে হযরত মুহাম্মদ সা. আবু হুরায়রা রা: কে বেশ কিছু উপদেশ প্রদান করেছিলেন। এসব উপদেশ আমাদের জন্য অনুসরণীয়। নিচে এরকম ১৮টি উপদেশের তালিকা দেয়া হল।
১. আবু হুরায়রা! তুমি তোমার বিছানায় শয়ন করতে এলে তখন ডানপাশে শয়ন করবে এবং বলবে “বিসমিল্লাহ্, ওয়াল হামদু লিল্লাহ্।” এরূপ করলে ভোর পর্যস্ত ফেরেশতা তোমার হিফাযতের দায়িত্ব পালন করবেন।
২. আবু হুরায়রা! তুমি শয়নের সময় পড়বে:
সুবহানাল্লাহ্ ৩৩ বার, ওয়াল্-হামদু লিল্লাহ্ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৩ বার। আর একবার “ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ পড়ে একশ -বার পূর্ণ করে নিবে।
যে ব্যক্তি এ আমল করবে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য সে ব্যক্তির সমপরিমাণ সওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন, যে রাতে জাগ্রত থাকল ফজর পর্যন্ত দু’রাকাআত সালাতে।
৩. আবু হুরায়রা! তুমি শোয়ার সময় সূরা আত্ব-তারিক্ব ও সূরা তাকাসুরু পাঠ করবে। এতে আল্লাহ্ তা’আলা তোমার জন্য আসমানে নক্ষত্ররাজির পরিমাণ সওয়াব লিখবেন, আর তোমার সত্তরটি কবীরা গুনাহ মাফ করে দিবেন।
৪. আবু হুরায়রা! তুমি যখন পবিত্রতা অর্জন করতে ইচ্ছা কর এবং পানির জন্য হাত বাড়াও, তখন বলবে, ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি’। এতে ফেরেশতাগণ তোমার আমল নামায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত সওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন।
৫. আবু হুরায়রা! আহারের পূর্বে হাত ধৌত করলে খাদ্যদ্রব্য বরকত হয়, আর খাওয়ার পর হাত ধুলে জ্যোতি বৃদ্ধি পায় ও গুনাহ মাফ হয়, তুমি ছোট ছোট গ্রাসে আহার করবে, ভাল করে চিবিয়ে খাবে এবং পানি অল্প অল্প করে বিরতি দিয়ে পান করবে, বিরতিহীনভাবে এক ঢোকে গলাধঃকরণ করবে না।
৬. আবু হুরায়রা! কোন মু’মিন যখন পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে পানি ব্যবহার করে, তখন হায়যাব নামে এক শয়তান তার বা পাশে বসে তার মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে, এমনকি পানি বেশি খরচ করার জন্য তার অন্তরে ওয়াসওয়াসার সঞ্চার করে, সাবধান! তৃমি এ বিষয়ে শয়তানের অনুসরণ করবে না। কারণ, আমার উম্মতের সৎ ও আল্লাহ্ প্রেমিকগণ পবিত্রতা অর্জনে অপচয় করে না তারা পানি কম খরচ করে; যেমন তেল ব্যবহার করা হয়।
৭. আবু হুরায়রা! প্রতি মাসে একবার নখ কাটবে, কারণ নখের নিচে শয়তান লুকিয়ে থাকে।
৮. আবু হুরায়রা! মাথার মধ্যভাগে টিকি রাখবে না, কারণ তা হয় শয়তানের বাসস্থান।
৯. আবু হুরায়রা! তুমি পবিত্রতা অর্জন ও উভয় পা ধোয়ার পর ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল কদৃর (সূরাতুল কদর: ৯৭) পাঠ করবে।
১০. আবু হুরায়রা! তুমি ডান হাতে আহার করার সময় বা হাতে ঠেস দিয়ে বসবে না, কেননা তা হলো স্বেচ্ছাচারী ও অহংকারীদের কাজ।
১১. আবু হুরায়রা! তুমি পবিত্রতা অর্জন ও দু’পা ধোয়া সমাপ্ত করলে “ইন্না আনযালনাহু ফীলাইলাতুল কদর’ (সূরাতুল কদর) পাঠ করবে, যে এরূপ করবে আল্লাহ্ তা”আলা তার প্রত্যেক ইবাদতে এক বছরের ইবাদত- দিনে সওম পালন ও রাতে ইবাদতে জাগরণ-এর সওয়াব দান করবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে মুক্ত রাখবেন।
১২. আবু হুরায়রা! তুমি রাত ও দিনের প্রান্তে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আল্লাহ্ তাআলা তাঁর কোন বান্দার প্রতি অনুগ্রহ করার ইচ্ছা করলে তাকে রাত ও দিনের প্রান্তে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনার তৌফিক দান করেন।
১৩. আবু হুরায়রা! তুমি দুনিয়াতে দুঃখ-কষ্ট ও সংকোচনে ভুগলে বেশি বেশি ‘লাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল “আলিয়িল আজীম’ এ দু’আ পড়বে, এতে আল্লাহ তা“আলা তোমার দুঃখ-কষ্ট ও সংকট দূরীভূত করবেন এমন কি তুমি কাফিরদের কাছে বন্দী থাকলেও আল্লাহ্ তা’আলা তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করবেন।
১৪. আবু হুরায়রা! তুমি অবশ্যই “সালাতুয যোহা’ (বা চাশ্তের সালাত) আদায় করবে, কারণ জান্নাতে একটি বিশেষ দরজা আছে যার নাম “বাবুয যোহা” চাশতের সালাত আদায়কারিগণই এ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৫. আবু হুরায়রা! তুমি “সালাতুয যোহা’ আদায় করবে । যে দু’রাকাতে ‘সালাতুয যোহা’ আদায় করে তাকে যাকিরীন’ বা আল্লাহর স্মরণ কারিগণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যে ছয় রাকাআত আদায় করে তাকে “ফায়যীন’ বা সফলকামিগণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর যে আট রাকাআত আদায় করে তাকে সাদিকীন বা সত্যবাদিতার অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
১৬. আবু হুরায়রা! তুমি প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখে সওম পালন করবে, তা করলে আল্লাহ্ তা’আলা তোমার আমল নামায় পূর্ণ বছরের সওয়াব লিখবেন। আবু হুরায়রা! জান্নাতে একটি দরজা আছে যার নাম “বাব-ই-বাইয়্যান’, ‘আইয়্যামে বীয’-এর সওম পালনকারীরা সে দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৭. আবু হুরায়রা! যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করে সে স্থানে বসে আল্লাহর যিকর করবে, সে শয়তানের উপর প্রবল থাকবে, তার উপর শয়তান প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। আর তার আমল নামায় লেখা হবে এক হজ্জ, এক উমরা ও একজন দাস আযাদ করার সওয়াব ।
১৮. আবু হুরায়রা! হাই তোলার সময় মুখে হাত দিবে নতুবা শয়তান তোমার অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে । সূর্যের “সামনাসামনি তোমার সতর খুলবে না, কারণ এরূপ করলে সূর্য তাকে লানত করে। তিন বছর বয়সের ছেলে মেয়ের সামনে স্ত্রী সংগম করবে না, প্রতিটি চোখের থেকে তুমি সতরের হিফাযত করবে। কারণ আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের সতর আবৃত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
উপরে উল্লেখিত লেখা গুলো কেবল পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না বরং নিজের মধ্যে এসব উপদেশ বাস্তবায়ন করা জরুরি। পাশাপাশি এসব কথা উপর অনান্য মানুষের সাথে শেয়ার করাও জরুরি।
আর ইতোমধ্যে হযরত আলী (রা) এর উদ্দেশে হযরত মুহাম্মদ সা: এর দেয়া ১৮টি উপদেশের লেখা প্রকাশিত হয়েছে এই লেখাটিও পড়তে পারেন।
সূত্র:
নবী করীম সা: এর ওসিয়ত – আল্লামা আবুল ফযল আবদুর রহমান সুয়ূতী র:
দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…
If you’re a fan of anime and are curious about the stranger, more supernatural side…