Arabic:
اللّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاء وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَؤُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيم
উচ্চারণঃ আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বিয়্যুম লা তা’খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিছছামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্। মান যাল্লাযী ইয়াস ফায়ু ইন দাহু ইল্লা বি ইজনিহি ইয়া লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খল ফাহুম ওয়ালা ইউ হিতুনা বিশাই ইম্ মিন ইল্ মিহি ইল্লা বিমা সাআ ওয়াসিয়া কুরসিইউ হুস ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল আলিয়্যূল আজীম।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়।
তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
পবিত্র কোরআনে বিশেষ বিশেষ কিছু আয়াত ও সূরা রয়েছে, যা খুবই ফজিলতপূর্ণ। তন্মধ্যে আয়াতুল কুরসি অন্যতম। আয়াতুল কুরসির ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে অনেক বর্ণনা রয়েছে।
ইমাম আহমদ (রহ.) বর্ণনা করেন, একদিন উবাই ইবনে কাবকে নবী করিম (সা.) জিজ্ঞেস করেন, কোরআনের মধ্যে কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? তিনি বলেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই তা বেশি জানেন। নবী করিম (সা.) আবার জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আয়াতুল কুরসি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে আবুল মানজার! তোমাকে এই উত্তম জ্ঞানের জন্য ধন্যবাদ। সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার আত্মা। এর একটি জিহ্বা ও দু’টি ঠোঁট রয়েছে, যা দিয়ে সে আরশের অধিকারীর পবিত্রতা বর্ণনা করে।
নিয়মিত আয়াতুল কুরসি পাঠে দুষ্টু জিনদের কবল থেকে হেফাজতে থাকা যায় বলে হাদিসে বর্ণনা এসেছে। আয়াতুল কুরসি কোরআনের এক-চতুর্থাংশ।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, একটি বন্দি জিন আমাকে বলেছে, যখন আপনি বিছানায় শুতে যাবেন, তখন ‘আয়াতুল কুরসি’র প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। তাহলে আপনি সেই রাতে এক মুহূর্তের জন্যও আল্লাহর হেফাজতের বহির্ভূত হবেন না। আর সকাল পর্যন্ত শয়তানও আপনার নিকটবর্তী হতে পারবে না। উপরন্তু সেই রাতে যা কিছু হবে, সবই কল্যাণকর হবে। পরিশেষে রাসূল (সা.) বললেন, সে মিথ্যাবাদী হলেও এটা সে সত্যই বলেছে। তবে হে আবু হুরায়রা! জানো কি, তুমি এ তিন রাত কার সঙ্গে কথা বলেছিলে? আমি বললাম, না। রাসূল (সা.) বললেন, সে ছিল শয়তান।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূরা বাকারার মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যে আয়াতটি পুরো কোরআনের নেতাস্বরূপ। তা পড়ে ঘরে প্রবেশ করলে শয়তান বের হয়ে যায়। তা হলো- ‘আয়াতুল কুরসি’।
অন্য একটি হাদিসে আবু ইমামা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তাকে মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু বেহেশতে যেতে বাধা দেয় না।
হজরত আবু যর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা.) বলেন, একদিন আমি নবী (সা.)-এর কাছে এলে তাকে মসজিদে বসা দেখি এবং আমিও গিয়ে তার কাছে বসি। এরপর নবী (সা.) বলেন, হে আবু যর! নামাজ পড়েছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, ওঠো, নামাজ পড়ো। আমি উঠে নামাজ পড়ে আবারও গিয়ে বসলাম। রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে তখন বলেন, মানুষ শয়তান থেকে এবং জিন শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষও শয়তান হয় নাকি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! নামাজ সম্বন্ধে আপনি কী বলেন? তিনি বললেন, এটা একটি উত্তম বিষয়। তবে যার ইচ্ছা বেশি অংশ নিতে পারে এবং যার ইচ্ছা কম অংশ নিতে পারে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আর রোজা? তিনি বললেন, এটি একটি উত্তম ফরজ এবং তা আল্লাহর কাছে অতিরিক্ত হিসেবে জমা থাকবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সাদকা? তিনি বললেন, এটা বহুগুণ বিনিময় আদায়কারী। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কোন দান সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন, অল্প সংগতি থাকতে বেশি দেয়ার সাহস করা এবং দুস্থ মানুষকে গোপনে সাহায্য-সহযোগিতা করা। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সর্বপ্রথম নবী কে? তিনি বললেন, হজরত আদম (আ.)। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি কি নবী ছিলেন? রাসূল (সা.) বললেন, হ্যাঁ, তিনি আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথনকারী নবী ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! রাসূল কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, তারা হলেন ৩১০-এরও কিছু বেশি। তবে অন্য সময় রাসূল (সা.) বলেছিলেন, তারা ছিলেন ৩১৫ জন। এরপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল (সা.) বললেন, ‘আয়াতুল কুরসি।’ -নাসায়ি