ফিলিস্তিনের প্রাণকেন্দ্র জেরুজালেম। অসংখ্য নবী-রাসূলের ইসলামী দাওয়াতের কেন্দ্র ছিল বলে দুনিয়ার মুসলমানদের কাছেও তা অতি প্রিয় স্থান।
এ পবিত্র শহরে রয়েছে আল-আকসা মসজিদ যা বিশ্ব মুসলিমদের প্রথম কিবলা হিসেবে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। এখান থেকেই শুরু হয় রাসূল সা. এর মিরাজের আকাশমুখী সফর। এ মসজিদে ইবাদতের উদ্দেশ্যে সফর করার জন্য রাসূল সা. বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন।
কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, আজ এ শহর ও মসজিদ উভয়ই ইহুদীদের করতলগত। ইহুদীরা এ মসজিদ ধ্বংস করে এখানে তাদের নিজস্ব ইবাদতগাহ তৈরীর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
এক নজরে জেরুজালেম শহর:
জেরুজালেম শহর মুসলমানদের নিকট ‘আল কুদস’ নামে অধিক পরিচিত। এর অন্য নাম ‘বাইতুল মাকদাস’ “বাইতুলা মাকদাস” তবে প্রথম নামেই এটি অধিক প্রসিদ্ধ।
এ শহরটি ৩৪০ অক্ষাংশ ও ৩১.৫২ দ্রাঘিমাংশের উত্তরে অবস্থিত। এর চারদিকে রয়েছে পাহাড়। তন্মধ্যে ‘ মোরিয়া’ পাহাড়ের উপরেই এ মসজিদ অবস্থিত।
এর পূর্বে রয়েছে ‘বাইতুল বা তূর পাহাড়। এছাড়াও রয়েছে সাহইউন পাহাড়, আকরা পাহাড়, যাইতা পাহাড়, গাওল পাহাড়, সামউইল পাহাড় ইত্যাদি।
এ শহর প্রাকৃতিকভাবে দুই ভাগে বিভক্ত। যার বর্তমান আয়তন ১১০ বর্গ কি.মি.। এর চারদিকে দেয়াল ঘেরা। এ শহরের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। গড় তাপমাত্রা ১৮ সেন্টিগ্রেড। সর্বোচ্চ তাপমাত্র ২৫ সেন্টিগ্রেড ও সর্বনিম্ন ৪ সেন্টিগ্রেড।
মসজিদে আকসার গুরুত্ব ও ফযীলত:
এ মসজিদের মোট নাম ৭টি। তন্মধ্যে একটি মসজিদে আকসা। এর অর্থ : দূরবর্তী মসজিদ। মক্কার হেরেম শরীফ থেকে মেরাজ শুরু হয়। আর মক্কা থেকে এ মসজিদ দূরে বলেই সম্ভবত: এর নাম আকসা রাখা হয়েছে। যা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা অভিহিত করেছেন সূরা ইসরায়।
এর আগে এর নাম ছিল বাইতুল মাকদাস। এর অন্য নামগুলো হলো: ৩. আল কুদ্স ৪. মসজিদে ইলিয়া ৫. সালাম ৬. উরুশলেম ও ৭. ইয়াবুস।
হযরত ইবরাহীম আ. থেকে মুহাম্মদ সা. পর্যন্ত প্রায় সকল নবী এখানে ইবাদত করেছেন। এখান থেকেই মিরাজ সংঘঠিত হয় আর মিরাজে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয হয়। তাই নামাযের সাথে এ স্থানের বিশেষ সর্ম্পক রয়েছে।
কুরআনে যে দুটি মসজিদের নাম এসেছে তার মধ্যে এটি একটি। এর সাথে দুটি বিশেষ ঘটনা সংশ্লিষ্ট। আর তা হল:
আর এ মসজিদের ফযীলত সম্পর্কে রাসূল সা. উল্লেখ করেন, এ মসজিদে নামায পড়লে ৫ শত গুণ বেশী সাওয়াব হয়।
মসজিদে আকসার বর্ণনা:
জেরুজালেমের পরিবেষ্টিত এলাকার দক্ষিণাংশে মসজিদে আকসার বর্তমান ভবন অবস্থিত। এটি মসজিদে সাখরা থেকে ৫শত মিটার দক্ষিণে অবস্থিত। পশ্চিমের দেয়াল থেকে মসজিদের উত্তর-পশ্চিম কোনের দূরত্ব প্রায় ৭০ মিটার। এ মসজিদের পূর্বে ‘জামে উমার’ নামে আরেকটি মসজিদ আছে।
মসজিদে আকসার অনেকগুলো গম্বুজ আছে। সেগুলো হলো: ১.সিলসিলাহ গম্বুজ ২.সুলাইমান গম্বুজ ৩. নাহওইয়া গম্বুজ ৪ শেখ খলীল গম্বুজ ৫.খিদির গম্বুজ ৬.মেরাজ গম্বুজ ৭.মূসা গম্বুজ ৮.ইউসুফ গম্বুজ ও ৯ মেহরাবুন্নবী গম্বুজ।
এর যে কয়েকটা মিনারা আছে সেগুলো হলো: ১.বাবুল আসবাত মিনারা, ২.বাবুল মাগারেবা বা বাবুল গাওয়ানিমা মিনারা ৩.বাবুল সিলসিলাহ মিনারা।
এ মসজিদের দরজা মোট ১১টি যার মধ্যে উত্তর দিকে ৭টি, পূর্বে ১টি, পশ্চিমে ২টি ও দক্ষিণে ১টি। সেগুলোর নাম হলো: ১.বাবুল আসবাত ২. বাবুল মাগারেবা ৩.বাবুল গাওয়ানিমা ৪.বাবুস সিলসিলাহ ৫.বাবুল হামস ৬.বাবুল নাযির ৭.বাবুল কাত্তান ৮.বাবে হিত্তাহ ও ৯.বাবে শারফিল আম্বিয়া বা বাবে ফয়সাল ইত্যাদি।
দক্ষিণে মহিলাদের জন্য ‘জামে আন্নিসা’ নামে একটি দরজা আছে।
মসজিদের দৈর্ঘ্য ৮০ মিটার ও প্রস্থ ৫৫ মিটার। এর পশ্চিম দেয়ালকে ‘বোরাক শরীফ’ বলা হয়। কেননা মিরাজের সময় রাসূল সা. এখানে বোরাককে বেঁধেছিলেন ‘ইহুদীরা এটাকে ‘আল হায়েত আল মাবকী’ বলে।
মসজিদে আকসার ভূমিকা:
মসজিদে আকসা ইসলামের সুমহান নেতৃস্থানীয় মসজিদসমূহের মধ্যে অন্যতম। অতীতে এ মসজিদ বহুমুখী ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষা, রাজনীতি ও সামাজিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে মসজিদটি অনন্য বৈশিষ্ট্যের দাবীদার।
হযরত ইবরাহীম আ. কর্তৃক পুন:নির্মাণের পর হাজার হাজার বছর ধরে এটি ছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ কেন্দ্র, যাকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করা যায়।
এ মসজিদের অন্তর্গত বিভিন্ন মাদরাসায় শেখ আবুল ফাতহ্ আল মাকদেসীর ন্যায় বিশেষ পণ্ডিতেরা শিক্ষা দান করেছেন। ইমাম গাজালী ও আবু বকর বিন আল আরাবী সেখানে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
আজ এ মসজিদ ইহুদীদের জবরদখলে। তাই সেখানে পূর্বের ভূমিকা এখন আর নেই। মসজিদ আবার ইহুদীদের জবরদখল থেকে মুক্ত হতে পারলে পূর্বের ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে, ইনশা আল্লাহ।
মসজিদে আকসার বর্তমান প্রয়োজন:
সম্প্রতি অধিকৃত আরব এলাকার ‘লাজনাতুল কুদ্স ওয়াদ দিফা আনিল মুকাদ্দাসাত’ (জেরুজালেম ও পবিত্র স্থান প্রতিরক্ষা কমিটি) মসজিদে আকসাকে রক্ষার জন্য যে সকল কাজের উদ্দ্যেগ নিয়েছে তা হল:-
তবে এসকল ব্যাপারে কমিটিকে সহায়তা করা প্রয়োজন। আর তাই পরিশেষে বলা যায় যে,
এমতাবস্থায় নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজস্ব শক্তি সমন্বিত করে ইসলামের ভূমি উদ্ধারের জন্য অগ্রসর হওয়াই মুসলমানদের কর্তব্য। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা. এর একটি ভবিষৎবানী রয়েছে। তিনি বলেছেন,
এমন একদিন আসবে যখন ইহুদীদের পাইকারীভাবে হত্যা করা হবে। এমনকি গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ইহুদীকে গাছ দেখিয়ে দিয়ে বলবে, তাকে হত্যা কর।
দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।
If you're planning to give your car a new look, one of your first questions…
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…