সুলতান আবদুল আজিজ মিসর সফরে আসছেন। সাড়া পড়ে গেছে গোটা মিসরে। মিসরের শাসক ইসমাঈল সম্বর্ধনার আয়োজনে মহাব্যস্ত। সুলতান খুশী হলে শুধু তার আসন পাকাপোক্ত হওয়াই নয়, বহু আকাক্সিক্ষত খেতাবও এবার মিলে যেতে পারে। সুলতানের জন্যে আড়ম্বরপূর্ণ সম্বর্ধনার ব্যবস্থা বরলেন। নির্দিষ্ট দিনে সুলতান আবদুল আজিজ মিসরে আসলেন। তাঁর সম্মানে বিশেষ দরবার বসানো হলো। সুলতানকে সম্মান প্রদর্শনের জন্যে আলেমদেরও একত্রিত করা হয়েছে। আলেমদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাঁরা অবনত মস্তকে দরবারে সুলতানের সামনে হাজির হবেন এবং মাথা ঝুঁকিয়ে কুর্নিশ করার পর পিছু হটে দরবার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, সুলতানকে পেছনে দেখিয়ে অসম্মান করা যাবে না কিচুতেই। সুলতান খুশী হে আলেমরা প্রচুর ইনাম পাবেন। একে একে আলেমরা দরবারে প্রবেশ করতে লাগলেন অবনত মস্তকে এবং কুর্নিশ করে পিছু হটে বেরিয়ে এলেন। আলেমদের মধ্যে ছিলেন শেখ হাসানুল আদাদী। সর্বশেষে এল তাঁর দরবারে প্রবেশের পালা। তিনি উন্নত শিরে দরবারে প্রবেশ করলেন। সুলতানকে কুর্নিশ না করে তিনি সালাম দিলেন। তারপর ঘুরে দাঁড়িয়ে যেভাবে দরবারে প্রবেশ করেছিলেন, সেইভাবে উন্নত শিরে দরবার থেকে বেরিয়ে এলেন। সুলতানের কাছে বসা ইসমাঈলের মন হায় হায় করে উঠল। সুলতান নিশ্চয় অপমানিত বোধ করেচেন এবং ভীষণ ক্ষুব্ধ হবেন নিশ্চয়। দরবার শুব্ধ সকলের মুখ শুকিয়ে গেল। মহামান্য সুলতান কি করেন সেই শংকা দেখা দিল সকলের মনে। দরবার থেকে বের হলে সকলেই শেখ হাসানুলকে ছেঁকে ধরলো। বলর তাঁকে, আপনি একি করলেন সবকিছু জানার পরেও। শেখ বললেন, একজন সুলতান হিসেবে যে সম্মান পাওয়া উচিত তাঁকে তা দিয়েছি। দরবার শেষ করার আগে সুলতান আবদুল আজিজ আলেমদের মধ্যে শুধু শেখ হাসানুল আদাদীকেই পুরস্কৃত করলেন এবং বললেন, ‘এই দরবারে শুধু এই একজন আলেমই রয়েছেন।’