ঐ পঞ্চমাংশ, যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) গনীমতের মাল হতে নিতেন, কোথায় কোথায় তা বন্টন করতেন এবং নিকটাত্নীয়দের হক সম্পর্কে।


২৯৭৫. আহমদ ইবন সালিহ (রহঃ) ….. আবদুল মুত্তালিব ইবন রাবী’আ ইবন হারিছ ইবন আবদিল মুত্তালিব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তাঁর পিতা রাবী’আ ইবন হারিছ এবং আব্বাস ইবন আবদিল মুত্তালিব, আবদুল মুত্তালিব ইবন রাবী’আ এবং ফযল ইবন আব্বাস (রাঃ)-কে বলেন যে, তোমরা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হয়ে বলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের বয়স হয়েছে, সে সম্পর্কে তো আপনি অবহিত। আমরা বিবাহ করতে ইচ্ছুক।

আর হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি তো সকলের চাইতে অধিক নেককার ও পরোপকারী। আমাদের পিতার কাছে আমাদের বিবাহের দেনমোহর পরিশোধের মত অর্থ নেই। তাই আপনি আমাদের সাদকা আদায়ের অফিসার হিসাবে নিয়োগ করুন। অন্য অফিসাররা যা দিয়ে থাকে, আমরাও আপনাকে তা দেব এবং তার মুনাফা আমরা গ্রহণ করব।

রাবী বলেনঃ এ সময় আলী (রাঃ) সেখানে আসেন। আমরা যখন এ অবস্থায় ছিলাম, তখন আলী (রাঃ) আমাদেরকে বলেনঃ আল্লাহ্‌র শপথ করে বলি যে, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের কাউকেও সাদকা আদায়ের অফিসার নিয়োগ করবেন না। তখন রাবী’আ বলেনঃ এতো আপনি নিজের পক্ষ থেকে বলছেন। আপনি তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জামাতা হয়েছেন, এতে আমরা আপনার প্রতি ঈর্ষান্বিত নই। তখন আলী (রাঃ) তাঁর চাদর বিছিয়ে সেখানে শুয়ে পড়েন এবং বলেনঃ আমি আবুল হাসান, সকলের চাইতে জ্ঞানী। আল্লাহ্‌র শপথ! আমি এ স্থান পরিত্যাগ করব না যতক্ষণ না তোমাদের সন্তানেরা ঐ কাজ হতে বঞ্চিত হয়ে ফিরে আসে, যার জন্য তোমরা তাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রেরণ করেছ।

আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) বলেনঃ আমি এবং ফযল ইবন আব্বাস (রাঃ) যখন তাঁর নিকটে পৌছাই, তখন যুহরের সালাতের তাকবীর শুরু হয়ে যায়। তখন আমরা লোকদের সাথে (জামাআতে) সালাত আদায় করি। অতঃপর আমি এবং ফযল দ্রুত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হুজরার দিকে ধাবমান হই। এদিন তিনি যয়নব বিনত জাহশ (রাঃ)-এর ঘরে অবস্থান করছিলেন। আমরা দরওয়াযার নিকট দাঁড়ালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে এসে (স্নেহবশত) আমার ও ফযলের কান ধরে বললেনঃ বল তোমরা কি বলতে চাচ্ছ।

অতঃপর তিনি হুজরার মাঝে ফিরে যান এবং আমাকে ও ফযলকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেন। তখন আমরা ভিতরে প্রবেশ করি এবং একে অন্যকে কথা শুরু করার জন্য বলতে থাকি। অবশেষে আমি কথা শুরু করি অথবা ফযল শুরু করে। রাবী আবদুলাহ (রাঃ) এ ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আবদুল মুত্তালিব ইবন রাবী’আ বলেনঃ তখন ফযল ঐ কথা পেশ করেন, যা বলার জন্য আমাদের পিতা আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকেন এবং তাঁর দৃষ্টি ছাদের প্রতি নিবদ্ধ করেন। এভাবে অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ায় আমরা মনে করি যে, তিনি এখন কোন জওয়াব দিবেন না। এ সময় আমরা লক্ষ্য করি যে, যয়নব পর্দার পিছন হতে হাতের ইশারায় আমাদের বলছেন যে, আমরা যেন ব্যস্ত না হই। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ব্যাপারে চিন্তা করছিলেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা নীচু করে আমাদের বললেনঃ এ সাদকা তো মানুষের ময়লা-আবর্জনা (অর্থাৎ মালের ময়লা), যা মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের জন্য হালাল নয়। তোমরা নওফল ইবন হারিছকে আমার কাছে ডেকে আন। তখন তাঁকে তাঁর নিকট ডেকে আনা হয়। তিনি তাকে বলেনঃ হে নওফল! তুমি আবদুল মুত্তালিবকে তোমার মেয়ের সাথে বিয়ে দাও। তখন নওফল তার মেয়েকে আমার সাথে বিবাহ দেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা মুহমিয়্যা ইবন জাযাকে আমার কাছে ডেকে আন, যিনি ছিলেন যুবায়দ গোত্রের লোক। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মালে-গনীমতের খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) আদায়ের জন্য নিয়োগ করেন। (মুহমিয়্যা আসলে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেনঃ তুমি তোমার (মেয়ের সাথে) ফযলের বিয়ে দাও। তখন তিনি বিবাহ দিয়ে দেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি দাঁড়াও এবং খুমুস হতে এ পরিমাণ, এ পরিমাণ সস্পদ মোহর বাবদ দিয়ে দাও। (রাবী বলেন) আবদুল্লাহ্‌ ইবন হারিছ (রাঃ) আমার নিকট মোহরের পরিমাণ উল্লেখ করেননি।

باب فِي بَيَانِ مَوَاضِعِ قَسْمِ الْخُمُسِ وَسَهْمِ ذِي الْقُرْبَى

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ الْهَاشِمِيُّ، أَنَّ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ بْنَ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ رَبِيعَةَ بْنَ الْحَارِثِ وَعَبَّاسَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ قَالاَ لِعَبْدِ الْمُطَّلِبِ بْنِ رَبِيعَةَ وَلِلْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ ائْتِيَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُولاَ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ بَلَغْنَا مِنَ السِّنِّ مَا تَرَى وَأَحْبَبْنَا أَنْ نَتَزَوَّجَ وَأَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبَرُّ النَّاسِ وَأَوْصَلُهُمْ وَلَيْسَ عِنْدَ أَبَوَيْنَا مَا يُصْدِقَانِ عَنَّا فَاسْتَعْمِلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلَى الصَّدَقَاتِ فَلْنُؤَدِّ إِلَيْكَ مَا يُؤَدِّي الْعُمَّالُ وَلْنُصِبْ مَا كَانَ فِيهَا مِنْ مِرْفَقٍ ‏.‏ قَالَ فَأَتَى إِلَيْنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ وَنَحْنُ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ فَقَالَ لَنَا إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ وَاللَّهِ لاَ نَسْتَعْمِلُ مِنْكُمْ أَحَدًا عَلَى الصَّدَقَةِ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَ لَهُ رَبِيعَةُ هَذَا مِنْ أَمْرِكَ قَدْ نِلْتَ صِهْرَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ نَحْسُدْكَ عَلَيْهِ ‏.‏ فَأَلْقَى عَلِيٌّ رِدَاءَهُ ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَيْهِ فَقَالَ أَنَا أَبُو حَسَنٍ الْقَرْمُ وَاللَّهِ لاَ أَرِيمُ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْكُمَا ابْنَاكُمَا بِجَوَابِ مَا بَعَثْتُمَا بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قَالَ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَالْفَضْلُ إِلَى بَابِ حُجْرَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى نُوَافِقَ صَلاَةَ الظُّهْرِ قَدْ قَامَتْ فَصَلَّيْنَا مَعَ النَّاسِ ثُمَّ أَسْرَعْتُ أَنَا وَالْفَضْلُ إِلَى بَابِ حُجْرَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَوْمَئِذٍ عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَقُمْنَا بِالْبَابِ حَتَّى أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخَذَ بِأُذُنِي وَأُذُنِ الْفَضْلِ ثُمَّ قَالَ أَخْرِجَا مَا تُصَرِّرَانِ ثُمَّ دَخَلَ فَأَذِنَ لِي وَلِلْفَضْلِ فَدَخَلْنَا فَتَوَاكَلْنَا الْكَلاَمَ قَلِيلاً ثُمَّ كَلَّمْتُهُ أَوْ كَلَّمَهُ الْفَضْلُ – قَدْ شَكَّ فِي ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ – قَالَ كَلَّمَهُ بِالأَمْرِ الَّذِي أَمَرَنَا بِهِ أَبَوَانَا فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاعَةً وَرَفَعَ بَصَرَهُ قِبَلَ سَقْفِ الْبَيْتِ حَتَّى طَالَ عَلَيْنَا أَنَّهُ لاَ يَرْجِعُ إِلَيْنَا شَيْئًا حَتَّى رَأَيْنَا زَيْنَبَ تَلْمَعُ مِنْ وَرَاءِ الْحِجَابِ بِيَدِهَا تُرِيدُ أَنْ لاَ تَعْجَلاَ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي أَمْرِنَا ثُمَّ خَفَّضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ فَقَالَ لَنَا ‏”‏ إِنَّ هَذِهِ الصَّدَقَةَ إِنَّمَا هِيَ أَوْسَاخُ النَّاسِ وَإِنَّهَا لاَ تَحِلُّ لِمُحَمَّدٍ وَلاَ لآلِ مُحَمَّدٍ ادْعُوا لِي نَوْفَلَ بْنَ الْحَارِثِ ‏”‏ ‏.‏ فَدُعِيَ لَهُ نَوْفَلُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَالَ ‏”‏ يَا نَوْفَلُ أَنْكِحْ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ ‏”‏ ‏.‏ فَأَنْكَحَنِي نَوْفَلٌ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ ادْعُوا لِي مَحْمِيَةَ بْنَ جَزْءٍ ‏”‏ ‏.‏ وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي زُبَيْدٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَهُ عَلَى الأَخْمَاسِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِمَحْمِيَةَ ‏”‏ أَنْكِحِ الْفَضْلَ ‏”‏ ‏.‏ فَأَنْكَحَهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قُمْ فَأَصْدِقْ عَنْهُمَا مِنَ الْخُمُسِ كَذَا وَكَذَا ‏”‏ ‏.‏ لَمْ يُسَمِّهِ لِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ ‏.‏


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *