আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক তৈরি করার অন্যতম প্রধান উপায় হল তার সন্তুষ্টি অর্জন করা। আর যিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে তার এই ক্ষনস্থায়ী পৃথিবীতে আর কিছুর প্রয়োজন নেই। কেননা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক তৈরি হয়। আর আল্লাহর সাথে যখন সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাবে তখন তার নিকট দুনিয়া এবং আখেরাত দুটিই শান্তির যায়গা হয়ে যাবে।
আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার পথ অবলম্বনের মাধ্যমে আমাদের অন্তরের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা থেকে আত্মার প্রশান্তি লাভ করে। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করবো? আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করার অনেক উপায় রয়েছে, যার মধ্য থেকে আজকের লেখায় কিছু বিষয় আলোচনা করা হবে ইনশা আল্লাহ।
আল্লাহর সান্নিধ্য এবং তাঁর সাথে সম্পর্ক করার জন্য আপনার মনের প্রচেষ্টা থাকা অপরিহার্য। আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য় যে গুণাবলি গুলো থাকা দরকার:
প্রথমত আল্লাহর কাছে আপনার গুরুত্ব বিবেচনা করতে হবে। আপনি বা আমরা যদি আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী হতে চাই, তাহলে প্রথমেই একটা প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি!
আমরা কি আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করছি নাকি তাঁকে হতাশ করছি?
যেকোন ভাল জিনিস অর্জন করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে এবং কঠিন পরিশ্রমের ফলাফলও ভাল পাওয়া যায়। আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য অবশ্যই সময় লাগবে। আমরা সামান্য কিছু কাজ করে জাদুকরী ভাবে সবকিছু আশা করতে পারিনা । আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা রাখতে হবে। সর্বদা বিশ্বাস করতে হবে যে, তিনি যা পরিকল্পনা করেছেন তা আমাদের জীবন এবং পরকালের জন্য সর্বোত্তম। যাইহোক এখান আল্লাহ সুবহানাল্লাহু ওয়া তায়ালার নিকটবর্তী হওয়ার কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হল।
আমরা ভুলে যাই যে আমাদের দিক নির্দেশনার জন্য় আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রয়োজন। যখন আমরা দুনিয়ার জীবনে জটিলতায় পরি তখন প্রায়ই আমরা মনে করি আমরা আল্লাহর সাহায্য ছাড়া নিজেরাই এর সমাধান করতে পারবো। আমাদের জানা দরকার যে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কিছুই করা সম্ভব না।
আল্লাহর ইবাদাতের মাধ্যমে আমাদের তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। আমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। যেমনটা আল্লাহ কুরআনের সূরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতে বলেছেন।
খারাপ জিনিসকে জীবনের বাইরে রাখতে হবে। নানা ধরনের খারাপি রয়েছে যা আল্লাহ তা’আলা পছন্দ করেনা, সেসকল জিনিস থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে আত্মাকে সংশোধন করতে হবে। যদি আপনার চারপাশে এমন বন্ধু থাকে যে আপনাকে পাপ কাজে লিপ্ত করে, তবে তার থেকে দূরে সরে যান।
আপনি কিভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবেন, যদি আপনি তাকে ভাল ভাবে না জানেন? আমরা মানুষকে ভালোবাসি কারণ আমরা জানি এবং বুঝি যে তাদের মধ্য বিদ্যমান সুন্দর গুণ এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
আল্লাহ সকল কিছুর স্রষ্টা। তার সম্পর্কে আপনার স্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে। আপনাকে তাঁর সম্পর্কে আরও জানতে হবে। আপনাকে সৃষ্টিকর্তার প্রেমে পড়া শিখতে হবে। আল-ওয়াদুদ নাম দিয়ে শুরু করুন,যার অর্থ বন্ধুত্বপূর্ণ। আপনার জন্য আল্লাহর ভালবাসা নিঃশর্ত। তিনি কখনো আপনার কাছ থেকে বিনিময়ে কিছু চাইবেন না। তিনি আপনাকে ভালবাসেন এবং তাই তিনি আপনার ওপর তার রহমত অব্যাহত রাখেন। এমনকি যদি আপনি তাকে অমান্যও করে থাকেন। আল্লাহকে তাঁর সুন্দর নামের মধ্য দিয়ে ডাকুন।
ইনি আল্লাহ, যে আপনার সবচেয়ে নিকটতম (قريبة)। সুতরাং আপনি তাঁর নিকটতম হওয়ার জন্য দোয়া করুন। আল-ওয়াদুদ নামের মাধ্যমে তাঁকে ডাকুন। আপনাকে ভালবাসতে বলুন এবং আপনিও তাকে আরও ভালবাসুন। আমরা ভুলে যাই যে আমরা যদি আল্লাহ কাছে আশ্রয় চাই, তিনি আমাদের উপর সবকিছু সহজতর করে দিবেন।
আল্লাহকে সব সময় স্মরণ করা দ্বারা খুব সহজেই তাঁর সাথে সম্পর্ক করা যায়। আপনি তাকে স্মরণ রাখতে পারেন জিকির এবং তাসবীহর (প্রশংসা) দ্বারা। আপনার গুনাহ মাফের জন্য প্রতিনিয়ত বলুন আস্তাগফিরুল্লাহ! বলুন আলহামদুলিল্লাহ, যার দ্বারা আল্লাহ আপনাকে আরও দান করবেন। আপনার চোখ মেলে বাইরের চার দিকে দেখুন এবং তাঁর সুন্দর সৃষ্টি সম্পর্কে বলুন সুবহান-আল্লাহ।
আল্লাহকে স্মরণ করার সবচেয়ে মার্জিত রূপ তাঁর সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে তাকে স্মরণ করা। যখন আপনি গাড়িতে কিংবা হাঁটার মত কাজের মধ্যে থাকবেন তখন আপনি আল্লাহকে স্মরণ করতে পারেন। আল্লাহর গৌরবান্বিত ও মহিমান্বিত ইসলামিক ওয়াজ-নসিহত এবং ঈমানী বয়ান শুনুন। যারা আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, তাদের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখুন।
মসজিদে ধর্মীয় দাওয়াতের কাজে যোগ দিন। যত বেশি আপনি আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করবেন, তিনিও তত বেশি আপনার উপর শান্তি বর্ষণ করবেন। যখন আপনি আল্লাহর জিকিরে বসে আছেন তখন একবার অনুভব করে দেখুন আপনার অন্তরে কেমন অনুভব হয়।
আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুসরণ করে আল্লাহর ভালবাসা অর্জন করা যায়। আমরা যখন আল্লাহর ভালবাসা লাভ করি, তখনই আমরা তাঁর নিকটবর্তী হই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সকল সুন্নত অনুসরণের মাধ্যমে আপনি একজন মুমিন বান্দা হয়ে উঠবেন। আপনার মধ্যে ভাল আচরণ তথা ইসলামী আখলাকের প্রতিফলন হবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আরও জানুন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালবাসুন। সর্বোপরি, তিনি সমস্ত মানবজাতির জন্য একটি রহমত। যা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আল ইমরানের ৩১ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন।
বেশী বেশী কুরআন তিলওয়াত করার দ্বারা যেমন যিকিরের কাজ হয়ে যায় তেমনি কুরআন পাঠ করার সওয়াবও পাওয়া যায়।শুধুমাত্র কুরআন মাজীদ পাঠ বা মুখস্থ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। বরং এটি বুঝে পড়তে হবে। কুরআনে যা বলা হয়েছে তা করার জন্য আপনার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। আল কুরআনের প্রতিটি আয়াতের অর্থ প্রতিফলিত করতে হবে নিজের জীবনে। কুরআনের মাধ্যমে আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনের জটিলতার উত্তর পাবেন।
যখন আপনি কোরআন পড়বেন এবং এটি আরও ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবেন, তখন আপনি সব সময় সবচেয়ে সঠিক কাজটি করতে চাইবেন।
আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে হলে আপনাকে এখনই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। যত বেশি আপনি আল্লাহ তা’আলাকে ভালবাসবেন , তত বেশি আপনি তাঁর নিকটবর্তী হয়ে যাবেন। আর আল্লাহ তায়ালা আপনার সমস্ত কাজে বরকত দিবেন। যত বেশি আপনি সুন্নাহ এবং কুরআন সম্পর্কে জানবেন, তত বেশি আপনি মানবজাতির উচ্চ স্তরে পৌঁছাতে পারবেন। যখন আপনি সেই উচ্চ স্তরে পৌঁছবেন, তখন আপনি আল্লাহ তা’য়ালার ভালবাসা পাবেন এবং তিনি যা কিছু দিবেন তাতেই আপনি সন্তুষ্ট থাকবেন। আপনি আপনার জীবনে যা কিছু করবেন তাতেই আত্মবিশ্বাসী থাকবেন; কারণ আপনি সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এমন পথে পরিচালিত করুক যা আমাদের তাঁর নিকটবর্তী করে। আমীন।
দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।
If you're planning to give your car a new look, one of your first questions…
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…