আখিরাত

জান্নাতের জ্যোতি, সুগন্ধি, বৃক্ষরাজি ও ফলমূল

জান্নাতের জ্যোতি

জান্নাতে থাকবে নিরবচ্ছিন্ন আলো। সেখানে চন্দ্র-সূর্য নেই, রাত-দিন নেই। সূর্যের তাপ নেই। মহান আল্লাহ বলেন,

وَأَنَّكَ لَا تَظْمَأُ فِيهَا وَلَا تَضْحَىٰ

অর্থাৎ, সেখানে তুমি পিপাসার্ত হবে না এবং রোদ্র-ক্লিষ্টও হবে না। (ত্বাহাঃ ১১৯)।

مُّتَّكِئِينَ فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ ۖ لَا يَرَوْنَ فِيهَا شَمْسًا وَلَا زَمْهَرِيرًا

অর্থাৎ, সেখানে তারা সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসবে, তারা সেখানে রৌদ্রতাপ অথবা অতিশয় শীত বোধ করবে না। (দাহরঃ ১৩)

প্রয়োজনে হয়তো দরজা বা পর্দা লাগিয়ে অন্ধকার করা যাবে। অবশ্য বিশেষ জ্যোতি দ্বারা সকাল-সন্ধ্যা চেনার অন্য ব্যবস্থা থাকবে। (দ্রঃ ইবনে কাসীর ৪/৪৭১, মাজমুউ ফাতাওয়া ৪/৩১২)

জান্নাতের সুগন্ধি

জান্নাত সুগন্ধময় জায়গা। তার সুগন্ধ কেবল ভিতরেই নয়, বরং তার বাইরে বহু দুরবর্তী স্থান থেকে পাওয়া যাবে। কত দূরবর্তী জায়গা থেকে পাওয়া যাবে, তার উল্লেখ কতিপয় হাদীসে এসেছে।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, দুই প্রকার জাহান্নামী আমি (এখন পর্যন্ত) প্রত্যক্ষ করিনি (অর্থাৎ, পরে তাদের আবির্ভাব ঘটবে) : (১) এক সম্প্রদায় যাদের কাছে গরুর লেজের মত চাবুক থাকবে, যা দিয়ে তারা জনগণকে প্রহার করবে। (২) এক শ্রেণীর মহিলা, যারা (এমন নগ্ন) পোশাক পরবে যে, (বাস্তবে) উলঙ্গ থাকবে, (পর পুরুষকে) নিজেদের প্রতি আকর্ষণ করবে ও নিজেরাও (পর পুরুষের প্রতি) আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা হবে উটের হিলে যাওয়া কুঁজের মত। এ ধরনের মহিলারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার সুগন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ এত এত দূরত্বের পথ থেকে পাওয়া যাবে। (মুসলিম)

আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি পরের বাপকে নিজের বাপ বলে দাবী করে, সে ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ তার সুগন্ধি ৫০০ বছরের দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে।” (আহমাদ ২/১৭ ১, ইবনে মাজাহ ২৬১১, সহীহুল জামে ৫৯৮৮নং)

আহমাদের এক বর্ণনায় আছে ৭০ বছরের দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে। (সঃ তারগীব ১৯৮৮নং)

আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি কোন সন্ধি অথবা চুক্তিবদ্ধ (যিম্মী) মানুষকে হত্যা করবে, সে ব্যক্তি জান্নাতের সুবাসও পাবে না। অথচ তার সুবাস ৪০ বছরে অতিক্রম্য দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে।” (আহমাদ, বুখারী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, সহীহুল জামে’ ৬৪৫৭নং)

এক বর্ণনায় ৭০ ও ১০০ বছরে অতিক্রম্য দূরবর্তী স্থানের কথা আছে। (সঃ তারগীব ২০৪৪নং)

জান্নাতের বৃক্ষরাজি ও ফলমূল

জান্নাতের আছে, সারি সারি নানা রকম বৃক্ষরাজি। আছে নানা রকমের ফলমূল। কিছু বৃক্ষ ও ফলমূলের কথা উল্লেখ করে মহান আল্লাহ বলেছেন,

إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ مَفَازًا (31) حَدَائِقَ وَأَعْنَابًا (32)

অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আল্লাহভীরুদের জন্যই রয়েছে সফলতা; উদ্যানসমূহ ও নানাবিধ আঙ্গুর। (নাবা’ ৩১-৩২) ।

فِيهِمَا مِن كُلِّ فَاكِهَةٍ زَوْجَانِ

অর্থাৎ,উভয় (বাগানে) রয়েছে প্রত্যেক ফল দুই প্রকার। (রাহমানঃ ৫২)

فِيهِمَا فَاكِهَةٌ وَنَخْلٌ وَرُمَّانٌ

অর্থাৎ, সেখানে রয়েছে ফলমূল খেজুর ও ডালিম। (রাহমানঃ ৬৮)

وَأَصْحَابُ الْيَمِينِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِينِ (27) فِي سِدْرٍ مَّخْضُودٍ (28) وَطَلْحٍ مَّنضُودٍ (29)

অর্থাৎ, আর ডান হাত-ওয়ালারা, কত ভাগ্যবান ডান হাত-ওয়ালারা! (যাদেরকে ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে। তারা থাকবে এক বাগানে) সেখানে আছে কাটাহীন কুলগাছ। কাঁদি ভরা কলাগাছ। (ওয়াক্বিআহঃ ২৭-২৯)

وَفَاكِهَةٍ مِّمَّا يَتَخَيَّرُونَ

অর্থাৎ, তাদের পছন্দ মত ফলমূল। (ওয়াক্বিআহঃ ২০)।

مُتَّكِئِينَ فِيهَا يَدْعُونَ فِيهَا بِفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ وَشَرَابٍ

অর্থাৎ, সেখানে তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা যত খুশী ফলমূল ও পানীয়ের জন্য আদেশ দেবে। (স্বাদঃ ৫১)

يَدْعُونَ فِيهَا بِكُلِّ فَاكِهَةٍ آمِنِينَ

অর্থাৎ, সেখানে তারা নিশ্চিন্তে বিবিধ ফলমূল আনতে বলবে। (দুখনঃ ৫৫)

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي ظِلَالٍ وَعُيُونٍ (41) وَفَوَاكِهَ مِمَّا يَشْتَهُونَ (42) كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ (43) إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ (44)

অর্থাৎ, আল্লাহ-ভীরুরা থাকবে ছায়া ও ঝরনাসমূহে। তাদের বাঞ্ছিত ফলমুলের প্রাচুর্যের মধ্যে। তোমরা তোমাদের কর্মের পুরস্কার স্বরূপ তৃপ্তির সাথে পানাহার কর। এভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। (মুরসালাতঃ ৪১-৪৪)

জান্নাতের ফলসমূহের নাম দুনিয়ার ফলের মত হলেও, সে সবের স্বাদ কিন্তু এক নয়। যেহেতু জান্নাতের সবকিছুই অতুলনীয়, বেনযীর।

وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ كُلَّمَا رُزِقُوا مِنْهَا مِن ثَمَرَةٍ رِّزْقًا ۙ قَالُوا هَٰذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِن قَبْلُ ۖ وَأُتُوا بِهِ مُتَشَابِهًا

অর্থাৎ, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদের শুভ সংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত; যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, যখনই তাদের ফলমূল খেতে দেওয়া হবে, তখনই তারা বলবে, আমাদেরকে (পৃথিবীতে অথবা জান্নাতে) পূর্বে জীবিকারূপে যা দেওয়া হত, এ তো তাই। তাদেরকে পরস্পর একই সদৃশ ফল দান করা হবে। (বাক্বারাহঃ ২৫)

(সদৃশ) এর অর্থ হয়তোবা জান্নাতের সমস্ত ফলের আকার-আকৃতি এক রকম হবে অথবা তা দুনিয়ার ফলের মত দেখতে হবে। তবে এ সাদৃশ্য কেবল আকার ও নাম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। নচেৎ জান্নাতের ফলের স্বাদের সাথে দুনিয়ার ফলের স্বাদের কোন তুলনাই নেই। জান্নাতের নিয়ামতের ব্যাপারে হাদীসে এসেছে, “(এমন নিয়ামত) যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষের অন্তরে তার সঠিক ধারণা উদয় হয়নি।”

জান্নাতের সমস্ত ফল-গাছই বারোমেসে। জান্নাতের ফল এমন মৌসমী ফল হবে না যে, মৌসম শেষ হয়ে গেলেই সেই ফল আগামী মৌসম পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে যাবে। জান্নাতের ফল এ ধরনের ফুল-মুকুলের ঋতুর অধীনস্থ হবে না। বরং তা সদা-সর্বদা পাওয়া যাবে। যেমন মহান আল্লাহ বলেছেন,

وَفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ (32) لَّا مَقْطُوعَةٍ وَلَا مَمْنُوعَةٍ (33)

অর্থাৎ, প্রচুর ফলমূল; যা শেষ হবে না ও নিষিদ্ধও হবে না। (ওয়াক্বিআহঃ ৩২-৩৩)।

مَّثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ أُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا ۚ تِلْكَ عُقْبَى الَّذِينَ اتَّقَوا ۖ وَّعُقْبَى الْكَافِرِينَ النَّارُ

অর্থাৎ, সাবধানীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার বিবরণ এইরূপ ও ওর পাদদেশে নদী প্রবাহিত, ওর ফলমূলসমূহ ও ছায়া চিরস্থায়ী; যারা সাবধানী এটা তাদের পরিণাম। আর অবিশ্বাসীদের পরিণাম হল জাহান্নাম। (রা’দঃ ৩৫)

জান্নাতের ফল গাছের ডালে ঝুলে থাকলেও তা জান্নাতীর হাতের নাগালের মধ্যে থাকবে। তা পেড়ে খেতে কোন প্রকারের কষ্টবরণ বা শ্রমব্যয় করতে হবে না। মহান আল্লাহ বলেন,

قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ

অর্থাৎ, যার ফলরাশি ঝুলে থাকবে নাগালের মধ্যে। (হা-ক্বাহঃ ২৩)

وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَالُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوفُهَا تَذْلِيلًا

অর্থাৎ, সন্নিহিত বৃক্ষছায়া তাদের উপর থাকবে এবং ওর ফলমূল সম্পূর্ণরূপে তাদের আয়ত্তাধীন করা হবে। (দাহরঃ ১৪)

مُتَّكِئِينَ عَلَىٰ فُرُشٍ بَطَائِنُهَا مِنْ إِسْتَبْرَقٍ ۚ وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ

অর্থাৎ, সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে পুরু রেশমের আস্তরবিশিষ্ট বিছানায়, দুই বাগানের ফল হবে তাদের নিকটবর্তী। (রাহমানঃ ৫৪)

জান্নাতের বৃক্ষের শাখা-প্রশাখা ও পত্র-পল্লবের কথাও মহান আল্লাহর আল-কুরআনে উল্লেখ করেছেন। এক স্থানে বলেছেন,

ذَوَاتَا أَفْنَانٍ

অর্থাৎ, উভয়ই বহু ডালপালাবিশিষ্ট (গাছে পরিপূর্ণ)। (রাহমানঃ ৪৮)

অন্য স্থানে বলেছেন,

مُدْهَامَّتَانِ

অর্থাৎ, ঘন সবুজ এ (জান্নাতের) বাগান দু’টি। (রাহমানঃ ৬৪)

আর তার জন্যই তার ছায়া হবে ঘন। ছায়ার কথা উল্লেখ করে মহান আল্লাহ বলেছেন,

وَنُدْخِلُهُمْ ظِلًّا ظَلِيلًا

অর্থাৎ, তাদেরকে চিরস্নিগ্ধ ঘন ছায়ায় স্থান দান করব। (নিসাঃ ৫৭)

জান্নাতে সূর্য নেই। সুতরাং সেখানে সর্বদা সর্বস্থানে ছায়া আর ছায়া। মহান আল্লাহ বলেন,

وَظِلٍّ مَّمْدُودٍ

অর্থাৎ, সম্প্রসারিত ছায়া। (ওয়াক্বিআহঃ ৩০)

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي ظِلَالٍ وَعُيُونٍ

অর্থাৎ, আল্লাহ-ভীরুরা থাকবে ছায়া ও ঝরনাসমূহে। (মুরসালাতঃ ৪১)।

هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْأَرَائِكِ مُتَّكِئُونَ

অর্থাৎ, তারা এবং তাদের স্ত্রীগণ সুশীতল ছায়ায় থাকবে এবং হেলান দিয়ে বসবে সুসজ্জিত আসনে। (ইয়াসীনঃ ৫৬)

জান্নাতে আছে বিশাল বিশাল গাছ। একটি গাছের কথা উল্লেখ করে নবী (সাঃ) বলেছেন, “জান্নাতের মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ আছে, যার ছায়ায় কোন আরোহী উৎকৃষ্ট, বিশেষভাবে প্রতিপালিত হালকা দেহের দ্রুতগামী ঘােড়ায় চড়ে একশো বছর চললেও তা অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না।” (বুখারী-মুসলিম)।

জান্নাতে ‘তুবা’ নামের একটি গাছ আছে। এ গাছটি ১০০ বছরের অতিক্রম্য জায়গা জুড়ে অবস্থিত। এর মোছা থেকে জান্নাতীদের বস্ত্র নির্মিত হবে। (আহমাদ, সিঃ সহীহাহ ১৯৮৫নং)।

জান্নাতুল মাওয়ার কাছে ‘সিদরাতুল মুন্তাহা’র কথা কুরআনে এসেছে,

وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ (13) عِندَ سِدْرَةِ الْمُنتَهَىٰ (14) عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ (15) إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ (16) مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ (17) لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ (18)

অর্থাৎ, নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল। সিদরাতুল মুনতাহার নিকট। যার নিকট অবস্থিত (জান্নাতুল মাওয়া) বাসােদ্যান। যখন (বদরী) বৃক্ষটিকে, যা আচ্ছাদিত করার ছিল তা আচ্ছাদিত করল, তার দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি, দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যুতও হয়নি। নিঃসন্দেহে সে তার প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছিল। (নাজমঃ ১৩-১৮)

এটা হল মিরাজের রাতে যে জিবরীল (আঃ)-কে তাঁর আসল আকৃতিতে দেখেছিলেন, তারই বর্ণনা। এই সিদৰাতুল মুন্তাহা’ হল ষষ্ঠ বা সপ্তম আসমানে অবস্থিত একটি কুল (বরই) গাছ। যার ফলগুলি কলসের মত বড় বড় এবং পাতাগুলি হাতির কানের মত ঢােলা ঢােলা। (বুখারী-মুসলিম)

Jahirul.Islam

View Comments

  • You should be a part of a contest for one of the best websites on the web. I will highly recommend this website! Gabie Bud Enoch

  • It is actually a great and helpful piece of info. I am happy that you shared this helpful information with us. Please stay us informed like this. Thanks for sharing. Ginger Giles Hennie

  • Hey there. I found your website by means of Google while looking for a comparable subject, your site got here up. It seems to be great. I have bookmarked it in my google bookmarks to visit then. Leigh Spenser Noach

  • Hi! I just want to give you a huge thumbs up for your great information you have here on this post. I am returning to your blog for more soon. Meg Tibold Devi

Share
Published by
Jahirul.Islam

Recent Posts

How Much Paint to Paint a Car?

If you're planning to give your car a new look, one of your first questions…

5 hours ago

How Much Does It Cost to Build a Barndominium in 2025

If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…

5 days ago

How Long Does It Take to Charge a Car Battery

A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…

6 days ago

How Can I Plan a Trip to PR by Myself

Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…

7 days ago

How to Teach My Four Year Old to Share

Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…

7 days ago

How to Dispose of Old Gasoline Safely and Legally

Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…

7 days ago