জান্নাতের মাটি
জান্নাতের মাটি বিভিন্ন ধরনের হবে। কোথাও কস্তুরীর মত সুগন্ধময়। (বুখারী-মুসলিম)। আবার কোথাও জাফরানের মত। (আহমাদ, তিরমিযী, দারেমী)। আবার কোথাও হবে সাদা ধবধবে মিহি আটার মত। (মুসলিম, আহমাদ)
জান্নাতের নদীমালা
জান্নাত মানে বাগান। আর বাগানে অবশ্যই নদী প্রবাহিত থাকবে। প্রথমতঃ তার পানি পান করা যাবে। আর দ্বিতীয়তঃ তাতে বাগানের শোভা-সৌন্দর্য চিত্তাকর্ষী হবে। মহান আল্লাহ জান্নাতের সেই বিবরণ দিয়েই বান্দার মনকে আকৃষ্যমান করেছেন। সুতরাং যেখানেই তিনি জান্নাতের কথা বলেছেন, প্রায় সেখানেই নদীমালার কথা উল্লেখ করেছেন। যেমনঃ
وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
অর্থাৎ, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদের শুভ সংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত; যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। (বাক্বারাহঃ ২৫)
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ يَهْدِيهِمْ رَبُّهُم بِإِيمَانِهِمْ ۖ تَجْرِي مِن تَحْتِهِمُ الْأَنْهَارُ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ
অর্থাৎ, নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করেছে এবং ভাল কাজ করেছে তাদের প্রতিপালক তাদের বিশ্বাসের কারণে তাদেরকে পথ প্রদর্শন করবেন, শান্তির উদ্যানসমূহে তাদের (বাসস্থানের) তলদেশ দিয়ে নদীমালা প্রবাহিত থাকবে। (ইউনুসঃ ৯)
أُولَٰئِكَ لَهُمْ جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهِمُ الْأَنْهَارُ
অর্থাৎ, তাদেরই জন্য আছে স্থায়ী জান্নাত; যার নিম্নদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। (কাহফঃ ৩১)।
মহানবী (সাঃ) মিরাজে গিয়ে জান্নাতের চারটি নদী দর্শন করেছিলেন। দু’টি বাহ্যিক ও দু’টি আভ্যন্তরিক। বাহ্যিক নদী দু’টি দুনিয়ায় প্রবহমান, নীল ও ফুরাত। (মুসলিম ১৬৪নং)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, রাসুলল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “(শামের) সাইহান ও জাইহান, (ইরাকের) ফুরাত এবং (মিসরের) নীল প্রত্যেক নদীই জান্নাতের নদ-নদীসমূহের অন্যতম। (মুসলিম ২৮৩৯নং)।
উক্ত নদীগুলি জান্নাতের মানে হল, সেগুলির মূল জান্নাতের; যেমন মানুষের মূল হল জান্নাত। অথবা উক্ত নদীগুলির বিশেষ বকতের জন্য জান্নাতের নদী বলা হয়েছে। আর আল্লাহই ভাল জানেন।
জান্নাতের নদীমালার মধ্যে একটির নাম কাউষার; যা শেষ নবী (সাঃ)-কে হওযরূপে দান করা হয়েছে। (সুরা কাউষার) এ নদীর মাটি-কাদাও কস্তুরী। (বুখারী) যেখান হতে মহানবী (সাঃ) তাঁর উম্মতকে কিয়ামতে পানি পান করাবেন।
সুর্ববৃহৎ হওয ও কাউসার নহর (অমৃত নদী) থাকবে জান্নাতী শারাবে পরিপূর্ণ। যে পবিত্র শারাব বা পানীয় দুগ্ধ হতেও সাদা, বরফ হতেও শীতল, মধু হতেও মিষ্ট এবং মিসক চেয়েও সুগন্ধময়। যে একবার সে পানি পান। করবে তাকে আর কোনদিন পিপাসা স্পর্শ করবে না। (বুখারী ৬৫৭৯নং)
জান্নাতের নিম্নদেশে চারটি নহর প্রবাহিত। নির্মল পানির নহর, দুগ্ধের নহর; যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, সুস্বাদু সুধার নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। মহান আল্লাহ বলেন,
مَّثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ فِيهَا أَنْهَارٌ مِّن مَّاءٍ غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِّن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى ۖ وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ
অর্থাৎ, সাবধানীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হলঃ ওতে আছে নির্মল পানির নদীমালা, আছে দুধের নদীমালা যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নদীমালা, আছে পরিশোধিত মধুর নদীমালা। আর সেখানে তাদের জন্য আছে বিবিধ ফলমূল ও তাদের প্রতিপালকের ক্ষমা। সাবধানীরা কি তাদের মত, যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং যাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি; যা তাদের নাড়ীভুড়ি ছিন্ন-ভিন্ন করে দেবে? (মুহাম্মাদঃ ১৫)।
এই চার শ্রেণীর নদীর কথা হাদীসেও রয়েছে। (আহমাদ, তিরমিযী) তবে হাদীসের শব্দে ‘বাহর’ বলা হয়েছে, যার অর্থ হয় সমুদ্র। অবশ্য ‘বাহর’ মানে বড় নদও করা হয়। আর সমুদ্র হলে সেটাই হবে নদীর উৎস, যেমন হাদীসে সে কথার উল্লেখ এসেছে।
জান্নাতের পানি, দুধ, শারাব, মধু প্রভৃতি দুনিয়ার মত নয়। এসব কিছুরই স্বাদ ভিন্ন এবং অপরিবর্তনীয়, বিনষ্ট হয় না, শারাবে জ্ঞান শূন্য হয় না, কোন শিরঃপীড়ায় ধরে না। (ওয়াক্বিআহঃ ১৯)।
জান্নাতের একটি নদীর নাম ‘বা-রিক্ব’। এটি জান্নাতের দ্বারপ্রান্তে অবস্থিত। এরই নিকটে শহীদগণের আত্মা অবস্থান করবে। (আহমাদ, হাকেম, ইবনে হিব্বান)
জান্নাতের ঝরনাসমূহ
জান্নাতের আছে বিভিন্ন পানীয় ও স্বাদের ঝরনা। বাগানে ঝরনাও সৃষ্টি করে আকর্ষণীয় দৃশ্য। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ
অর্থাৎ, নিশ্চয় সাবধানীরা বাস করবে উদ্যান ও প্রস্রবণসমূহে। (হিজরঃ ৪৫, যারিয়াতঃ ১৫)
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي ظِلَالٍ وَعُيُونٍ
অর্থাৎ, আল্লাহ-ভীরুরা থাকবে ছায়া ও ঝরনাসমূহে। (মুরসালাতঃ ৪১)
فِيهِمَا عَيْنَانِ تَجْرِيَانِ
অর্থাৎ, উভয় (বাগানে) রয়েছে প্রবহমান দুই প্রস্রবণ। (রাহমানঃ ৫০)
فِيهِمَا عَيْنَانِ نَضَّاخَتَانِ
অর্থাৎ, উভয় বাগানে আছে উচ্ছলিত দুই প্রস্রবণ। (রাহমানঃ ৬৬)
জান্নাতের একটি ঝরনার পানি কপূর-মিশ্রিত। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الْأَبْرَارَ يَشْرَبُونَ مِن كَأْسٍ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُورًا (5) عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا عِبَادُ اللَّهِ يُفَجِّرُونَهَا تَفْجِيرًا (6)
অর্থাৎ, নিশ্চয় সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানীয় যার মিশ্রণ হবে কপূর। এমন একটি ঝরনা; যা হতে আল্লাহর দাসরা পান করবে, তারা এ (ঝরনা ইচ্ছামত) প্রবাহিত করবে। (দাহরঃ ৫-৬)।
অন্য একটি ঝরনা কস্তুরী-মিশ্রিত; যা তাসনীম’ নামে প্রসিদ্ধ। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ (22) عَلَى الْأَرَائِكِ يَنظُرُونَ (23) تَعْرِفُ فِي وُجُوهِهِمْ نَضْرَةَ النَّعِيمِ (24) يُسْقَوْنَ مِن رَّحِيقٍ مَّخْتُومٍ (25) خِتَامُهُ مِسْكٌ ۚ وَفِي ذَٰلِكَ فَلْيَتَنَافَسِ الْمُتَنَافِسُونَ (26) وَمِزَاجُهُ مِن تَسْنِيمٍ (27) عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا الْمُقَرَّبُونَ (28)
অর্থাৎ, পুণ্যবানগণ তো থাকবে পরম স্বাচ্ছন্দ্যে। তারা সুসজ্জিত আসনে বসে দেখতে থাকবে। তুমি তাদের মুখমন্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবে। তাদেরকে মোহর আঁটা বিশুদ্ধ মদিরা হতে পান করানো হবে। এর মোহর হচ্ছে কস্তুরীর। আর তা লাভের জন্যই প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতা করুক। এর মিশ্রণ হবে তাসনীমের (পানির)। এটা একটি প্রস্রবণ, যা হতে নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পান করবে। (মুত্বাফফিফীনঃ ২২-২৮)। আরো একটি ঝরনা ‘সালসাবীল’ নামে প্রসিদ্ধ। যার পানি আদার সুগন্ধমিশ্রিত। মহান আল্লাহ বলেন,
وَيُسْقَوْنَ فِيهَا كَأْسًا كَانَ مِزَاجُهَا زَنجَبِيلًا (17) عَيْنًا فِيهَا تُسَمَّىٰ سَلْسَبِيلًا (18)
অর্থাৎ, সেখানে তাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে শুঠ-মিশ্রিত পানীয়। জান্নাতের এমন এক ঝরনার, যার নাম সালসাবীল”। (দাহরঃ ১৭-১৮)।
জান্নাতের অট্টালিকা ও তাবুর বিবরণ
জান্নাতীরা জান্নাতে বড় বড় অট্টালিকায় বসবাস করবে। তা হবে একাধিক কক্ষবিশিষ্ট ও বহুতল। তা হবে সুখের বাসা ও সৌন্দর্যময়।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ۚ وَرِضْوَانٌ مِّنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থাৎ, আল্লাহ বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীদেরকে এমন উদ্যানসমূহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন, যেগুলোর নিম্নদেশে বইতে থাকবে নদীমালা, সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। আরও (প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন) চিরস্থায়ী উদ্যানসমূহে (জান্নাতে আদনে) পবিত্র বাসস্থানসমুহের। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি হচ্ছে সর্বাপেক্ষা বড় (নিয়ামত)। এটাই হচ্ছে অতি বড় সফলতা। (তওবাহঃ ৭২)।
وَمَا أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُم بِالَّتِي تُقَرِّبُكُمْ عِندَنَا زُلْفَىٰ إِلَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَأُولَٰئِكَ لَهُمْ جَزَاءُ الضِّعْفِ بِمَا عَمِلُوا وَهُمْ فِي الْغُرُفَاتِ آمِنُونَ
অর্থাৎ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আমার নৈকট্য লাভের সহায়ক হবে না। তবে (নৈকট্য লাভ করবে) তারাই যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে এবং তারা তাদের কাজের জন্য পাবে বহুগুণ পুরস্কার। আর তারা কক্ষসমূহে নিরাপদে বসবাস করবে। (সাবা’ : ৩৭)
أُولَٰئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوا وَيُلَقَّوْنَ فِيهَا تَحِيَّةً وَسَلَامًا
অর্থাৎ, তাদেরকে ধৈর্যাবলম্বনের প্রতিদান স্বরূপ (বেহেস্তের) কক্ষ দেওয়া হবে এবং তাদেরকে সেখানে অভিবাদন ও সালাম সহকারে অভ্যর্থনা জানানো হবে। (ফুরক্বানঃ ৭৫)
لَٰكِنِ الَّذِينَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ غُرَفٌ مِّن فَوْقِهَا غُرَفٌ مَّبْنِيَّةٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ وَعْدَ اللَّهِ ۖ لَا يُخْلِفُ اللَّهُ الْمِيعَادَ
অর্থাৎ, তবে যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের জন্য বহুতলবিশিষ্ট নির্মিত প্রাসাদ রয়েছে; যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত। (এটি) আল্লাহর প্রতিশ্রুতি, আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না। (যুমারঃ ২০)
জান্নাতে এমন কক্ষ থাকবে, যা স্বচ্ছ স্ফটিক-নির্মিত।
মহানবী (সাঃ) বলেন, “জান্নাতের মধ্যে এমন কক্ষ আছে, যার বাহিরের অংশ ভিতর থেকে এবং ভিতরের অংশ বাহির থেকে দেখা যাবে।” তা শুনে আবু মালেক আশআরী (রাঃ) বললেন, ‘সে কক্ষ কার জন্য হবে, হে আল্লাহর রসুল?’ তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি উত্তম কথা বলে, অন্নদান করে ও লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন নামাযে রত হয়; তার জন্য।” (ত্বাবারানী, হাকেম, সহীহ তারগীব ৬১১নং)
জান্নাতে রয়েছে বড় বড় তাবু। জান্নাতীরা সস্ত্রীক সেই তাঁবুতে বাস করবে। মহান আল্লাহ বলেন,
حُورٌ مَّقْصُورَاتٌ فِي الْخِيَامِ
অর্থাৎ, তারা তাবুতে সুরক্ষিত হুর। (রাহমানঃ ৭২)।
মহানবী (সাঃ) বলেছেন, নিশ্চয় জান্নাতে মুমিনদের জন্য একটি শূন্যগর্ভ মোতির তাঁবু থাকবে, যার দৈর্ঘ্য হবে ষাট মাইল। এর মধ্যে মুমিনদের জন্য একাধিক স্ত্রী থাকবে। যাদের সকলের সাথে মু’মিন সহবাস করবে। কিন্তু তাদের কেউ কাউকে দেখতে পাবে না। (বুখারী-মুসলিম)
এই তাবু হবে একটি মোতির। সে মোতি কত বিশাল যে, তার ভিতরের জায়গা হবে ষাট মাইল!
জান্নাতে বিশেষ কিছু লোকের জন্য বিশেষ ধরনের অট্টালিকা থাকবে। যেমন মা খাদীজা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা)র জন্য থাকবে বংশ-নির্মিত প্রাসাদ। অবশ্য সে বংশ বা বাশ হবে মনি-মুক্তার। আল্লাহর রসূল (সাঃ) জিবরীলের পক্ষ থেকে খাদীজা (রাদ্বিয়াল্লাহু আহা)কে জান্নাতে (তার জন্য মুক্তার বাঁশ বা) ফাঁপা মুক্তা নির্মিত একটি অট্টালিকার সুসংবাদ দান করেছেন; যেখানে কোন হট্টগোল ও ক্লান্তি থাকবে না। (বুখারী ও মুসলিম)
জান্নাতে উমার (রাঃ)-এর প্রাসাদ মহানবী (সাঃ) দর্শন করেছেন। (বুখারী-মুসলিম)।
জান্নাতে অতিরিক্ত ঘর নির্মাণ করার জন্য কিছু অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। যেমনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে কোন মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহর (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য প্রত্যহ ফরয নামায ছাড়া বারো রাকআত সুন্নত নামায পড়ে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ করেন অথবা তার জন্য জান্নাতে একটি গৃহ নির্মাণ করা হয়।” (মুসলিম)।
আল্লাহর রসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি (কাতারের মাঝে) কোন ফাঁক বন্ধ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তাকে একটি মর্যাদায় উন্নীত করেন এবং তার জন্য জান্নাতে এক গৃহ নির্মাণ করেন।” (ত্বাবারানীর আওসাত্ব, সহীহ তারগীব ৫০২নং)।
নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি কুল হুঅল্লা-হু আহাদ’ শেষ পর্যন্ত ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে একটি মহল নির্মাণ করবেন।” (আহমাদ, প্রমুখ, সিসিলাহ সহীহাহ ৫৮৯নং)।
রাসূলল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যখন কোন বান্দার সন্তান মারা যায়, তখন মহান আল্লাহ স্বীয় ফিরিশাদেরকে বলেন, তোমরা আমার বান্দার সন্তানের জীবন হনন করেছ কি? তারা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তোমরা তার হৃদয়ের ফলকে হনন করেছ কি? তারা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, সে সময় আমার বান্দা কি বলেছে? তারা বলে, সে আপনার হামদ (প্রশংসা) করেছে ও ‘ইন্না লিল্লাহি অইন্না ইলাইহি রাজিউন’ (অর্থাৎ, আমরা তোমার এবং তোমার কাছেই অবশ্যই ফিরে যাব) পাঠ করেছে। মহান আল্লাহ বলেন, আমার (সন্তানহারা) বান্দার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ কর, আর তার নাম রাখ, বায়তুল হামদ’ (প্রশংসাভবন)।” (তিরমিযী হাসান)।
আল্লাহর রসুল (সাঃ) বলেছেন, “অন্যায়ের সপক্ষে থেকে যে ব্যক্তি তর্ক পরিহার করে তার জন্য জান্নাতের পার্শ্বদেশে এক গৃহ নির্মাণ করা হয়। ন্যায়ের সপক্ষে থেকেও যে ব্যক্তি তর্ক পরিহার করে তার জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে এক গৃহ নির্মাণ করা হয়। আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সুন্দর করে তার জন্য জান্নাতের উপরিভাগে এক গৃহ নির্মাণ করা হয়।” (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, বাইহাকী, সহীহ তারগীব ১৩৩নং)।
আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি বাজারে প্রবেশ করে (নিম্নের দুআ) বলে, আল্লাহ তার জন্য দশ লক্ষ নেকী লিপিবদ্ধ করেন, দশ লক্ষ গোনাহ মোচন করে দেন, তাকে দশ লক্ষ মর্যাদায় উন্নীত করেন এবং বেহেস্তে তার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করে দেন।”
‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু, য়্যুহয়ী অয়ুমীতু, অহুয়া হাইয়ুল লা য্যামূতু, বিয়াদিহিল খাইরু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। (সহীহ তিরমিযী ২৭ ২৬ নং, সহীহ ইবনে মাজাহ ১৮১৭ নং)
নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর (সন্তুষ্টি লাভের) উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেয়, আল্লাহ তার জন্য বেহেশ্যে একটি ঘর বানিয়ে দেন।” (বুখারী, মুসলিম, মিঃ ৬৯৭নং)