দুনিয়া ধ্বংস হয়ে পরকালের জীবন শুরু হলে, সে জীবন হবে অনন্ত কালের। অন্তহীন হবে জান্নাত, অন্তহীন হবে জান্নাতীরা। না জান্নাত ধ্বংস হবে, আর না জান্নাতীরা বৃদ্ধ ও মরণাপন্ন হবে। বরং তারা চিরতরের জন্য ইচ্ছাসুখে সেখানে বসবাস করবে। মহান আল্লাহ বলেন,
لَا يَذُوقُونَ فِيهَا الْمَوْتَ إِلَّا الْمَوْتَةَ الْأُولَىٰ ۖ وَوَقَاهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ
অর্থাৎ, (ইহকালে) প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করবে না। আর তিনি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করবেন। (দুখানঃ ৫৬)
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا (107) خَالِدِينَ فِيهَا لَا يَبْغُونَ عَنْهَا حِوَلًا (108)
অর্থাৎ, নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্য আছে ফিরদাউসের উদ্যান। সেথায় তারা স্থায়ী হবে; এর পরিবর্তে তারা অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়া কামনা করবে না। (কাহ্ফঃ ১০৭-১০৮)
إِنَّ هَٰذَا لَرِزْقُنَا مَا لَهُ مِن نَّفَادٍ
অর্থাৎ, নিশ্চয় এটি আমার (দেওয়া) রুযী; যার কোন শেষ নেই। (স্বাদঃ ৫৪)
مَّثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ أُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا ۚ تِلْكَ عُقْبَى الَّذِينَ اتَّقَوا ۖ وَّعُقْبَى الْكَافِرِينَ النَّارُ
অর্থাৎ, সাবধানীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার বিবরণ এইরূপঃ ওর পাদদেশে নদী প্রবাহিত, ওর ফলমূলসমূহ ও ছায়া চিরস্থায়ী; যারা সাবধানী এটা তাদের পরিণাম। আর অবিশ্বাসীদের পরিণাম হল জাহান্নাম। (রা’দ ৩৫)
মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, সে চিরসুখে থাকবে, সে কোন কষ্ট পাবে না, তার পরিচ্ছদ পুরাতন হবে না এবং তার যৌবনও শেষ হবে না।” (মুসলিম ২৮৩৬নং)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, জান্নাতীরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, তখন একজন ঘােষণাকারী ঘােষণা করবে যে, তোমাদের জন্য এখন অনন্ত জীবন; তোমরা আর কখনো মরবে না। তোমাদের জন্য এখন চির সুস্বাস্থ্য; তোমরা আর কখনো অসুস্থ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির যৌবন; তোমরা আর কখনো বৃদ্ধ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির সুখ ও পরমানন্দ; তোমরা আর কখনো দুঃখ-কষ্ট পাবে না। (মুসলিম)।
এ ছাড়া হাদীসে এসেছে যে, মৃত্যুকে দুম্বার আকারে নিয়ে এসে যবেহ করা হবে এবং বলা হবে, হে জান্নাতীগণ! তোমরা চিরকাল বাস কর, আর কোন মৃত্যু নেই৷ হে জাহান্নামীগণ! তোমরা চিরকাল বাস কর, আর কোন মৃত্যু নেই।’ (বুখারী-মুসলিম)
প্রকাশ থাকে যে,
فَأَمَّا الَّذِينَ شَقُوا فَفِي النَّارِ لَهُمْ فِيهَا زَفِيرٌ وَشَهِيقٌ (106) خَالِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ إِلَّا مَا شَاءَ رَبُّكَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ (107) وَأَمَّا الَّذِينَ سُعِدُوا فَفِي الْجَنَّةِ خَالِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ إِلَّا مَا شَاءَ رَبُّكَ ۖ عَطَاءً غَيْرَ مَجْذُوذٍ (108)
অর্থাৎ, অতএব যারা দুর্ভাগ্যবান, তারা তো হবে দোযখে; তাতে তাদের চীৎকারও আর্তনাদ হতে থাকবে। তারা অনন্তকাল সেখানে থাকবে, যতকাল আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে; যদি না তোমার প্রতিপালকের অন্য ইচ্ছা হয়। নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা করেন, তা সম্পাদনে সুনিপুণ। পক্ষান্তরে যারা সৌভাগ্যবান, তারা থাকবে বেহেস্তে। সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে, যতকাল আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে; যদি না তোমার প্রতিপালকের অন্য ইচ্ছা হয়। এ হবে অফুরন্ত অনুদান। (হূদঃ ১০৬-১০৮)
এই আয়াতসমূহ দ্বারা কিছু মানুষ এই বিভ্রান্তির শিকার হয়েছে যে, জাহান্নামের আযাব কাফেরদের জন্যও চিরস্থায়ী নয়; বরং সাময়িক। অর্থাৎ, ততদিন থাকবে, যতদিন আকাশ ও পৃথিবী থাকবে। (তারপর শেষ হয়ে যাবে।) কিন্তু এই কথা ঠিক নয়। কারণ এখানে (مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ) কথাটি আরববাসীদের দৈনন্দিন কথাবার্তা ও পরিভাষা অনুযায়ী অবতীর্ণ হয়েছে। আরববাসীদের অভ্যাস ছিল যে, যখন তারা কোন বস্তুর চিরস্থায়িত্ব প্রমাণ করার উদ্দেশ্য হত, তখন তারা বলত, (هذا دائم دوام السموات والارض) “এই বস্তু আকাশ ও পৃথিবীর মত চিরস্থায়ী।” সেই পরিভাষাকে কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে, যার অর্থ কাফের ও মুশরিকরা চিরকালব্যাপী জাহান্নামে থাকবে, যা কুরআন বিভিন্ন স্থানে, (خالدين فيها) শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছে। তার দ্বিতীয় এক অর্থ এও করা হয়েছে যে, আকাশ ও পৃথিবী থেকে উদ্দেশ্য হল ‘জিনস’ (শ্রেণী)। অর্থাৎ, ইহলৌকিক আকাশ ও পৃথিবী; যা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু এ ছাড়া পারলৌকিক আকাশ ও পৃথিবী পৃথক হবে। যেমন কুরআনে তার পরিষ্কার বর্ণনা এসেছে (يَوْمَ تُبَدَّلُ الْأَرْضُ غَيْرَ الْأَرْضِ وَالسَّمَاوَاتُ) অর্থাৎ, যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও।” (ইব্রাহীম ৪৮) আর পারলৌকিক উক্ত আকাশ ও পৃথিবী, জান্নাত ও জাহান্নামের মত চিরস্থায়ী হবে। এই আয়াতে সেই পারলৌকিক আকাশ-পৃথিবীর কথা বলা হয়েছে, ইহলৌকিক আকাশ-পৃথিবীর কথা নয়, যা ধ্বংস হয়ে যাবে। (ইবনে কাসীর) এই উভয় অর্থের যে কোন অর্থ নেওয়া হলে আয়াতের উদ্দেশ্য পরিস্ফুটিত হয়ে যাবে এবং উপস্থাপিত সমস্যা দূর হয়ে যাবে। ইমাম শওকানী (রঃ) এর আরো কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করেছেন, যা জ্ঞানীরা দেখতে পারেন। (ফাতহুল কাদীর)।
আয়াতে উল্লিখিত ব্যতিক্রমের কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। তার মধ্যে সব থেকে সঠিক অর্থ এই যে উক্ত ব্যতিক্রম তওহীদবাদী মুমিন পাপীদের জন্য। এই অর্থ অনুযায়ী এর পূর্ব আয়াতে (شقي) (দুর্ভাগ্যবান) শব্দটি ব্যাপক ধরতে হবে। অর্থাৎ কাফের ও পাপী মু’মিন উভয়কে বুঝাবে। আর (إِلَّا مَا شَاءَ رَبُّكَ) দ্বারা পাপী মু’মিনরা ব্যতিক্রম হয়ে যাবে। আর مَا شَاءَ তেمَا হরফটিمن এর অর্থে ব্যবহার হয়েছে। দ্বিতীয় ব্যতিক্রমটিও পাপী মুমিনদের জন্য। অর্থাৎ, অন্য মু’মিনদের মত এই গোনাহগার মু’মিনরা প্রথম থেকে শেষ অবধি জান্নাতে থাকবে না। বরং শুরুতে কিছু দিন তাদেরকে জাহান্নামে থাকতে হবে, পরে আল্লাহর ইচ্ছায় আম্বিয়া ও মুমিনদের সুপারিশে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যেমন সহীহ হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত।
(غَيْرَ مَجْذُوذٍ) এর অর্থ হল (غير مقطوع) অর্থাৎ, এমন অফুরন্ত অনুদান যা শেষ হওয়ার নয়। এই বাক্য দ্বারা এই কথা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, যে সকল পাপী মুমিনদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তারা ক্ষণস্থায়ী নয়, বরং চিরস্থায়ী হবে এবং সকল জান্নাতীগণ আল্লাহ প্রদত্ত অনুদান ও তার নিয়ামত দ্বারা উপকৃত হতে থাকবে, তা কোন কালে কখনও শেষ হবে না। (তফসীর আহসানুল বায়ান)
If you're planning to give your car a new look, one of your first questions…
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…