গোটা বিশ্বের মুসলিমদের নিকট জুমার দিনটি অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আলাদা। এটা বান্দা নয়, স্বয়ং মহান আল্লাহ তায়ালা দিনটিকে আলাদা মর্যাদা দান করেছেন।
পৃথিবীব্যাপী মানুষের চাওয়ার অন্ত নেই। প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ স্রষ্টার আনুকূল্য লাভ করতে চায়। এ জন্য তারা পবিত্র জুমার দিনটিকে দোয়া কবুলের জন্য বেছে নিয়ে থাকেন। কেননা, আল্লাহ তায়ালা কোরআনে জুমার দিনটিকে শ্রেষ্ঠ দিনের মর্যাদা দিয়েছেন। এটি এমন একটি দিন যাকে কোরআনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নামকরণ করা হয়েছে একটি সূরাও। স্বাভাবিকভাবে আল্লাহর বান্দার কাছে দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সূর্য ওঠা দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন।’ (মুসলিম)
জুমার শপথ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘শপথ সেই দিনের, যে উপস্থিত হয় এবং যাতে উপস্থিত হয়।’ সূরা বুরুজ, আয়াত ৩।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘যে উপস্থিত হয় অর্থ জুমার দিন আর যাতে উপস্থিত হয় অর্থ আরাফার দিন।’
এ জুমার দিনে মহাজগৎ-সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি রয়েছে। এ দিনে আল্লাহ আসমান-জমিন সৃষ্টির পূর্ণতাবিধান করেছেন।
আল্লাহর ইরশাদ, ‘তোমাদের রব তিনি, যিনি আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন।’ সূরা আরাফ, আয়াত ৫৪।
ইবনে কাসির (রহ.) এ আয়াতের তাফসিরে বলেন, ‘এ দিনে অর্থাৎ জুমার দিনে সব সৃষ্টি একত্রিত হয়েছে।’
উল্লিখিত কোরআনের এসব আয়াত ও হাদিস দ্বারা জুমার দিনের বিশেষত্ব আমরা সহসাই বুঝতে পারি।
হাদিসে এসেছে, এ দিনের কিছু সময়ে আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন সময়ের কথা উল্লেখ হয়েছে। তবে জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময় কোনটি সে সম্পর্কে মতানৈক্য থাকলেও দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের সঙ্গে একদিন শুক্রবারের ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়টায় যদি কোনও মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুল (সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি)
আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে বলেছেন, ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিই সেই বিশেষ মুহূর্ত। (মুসলিম, মিশকাত)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম মিম্বরে বসা থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত।’ (মুসলিম, ইবনু খুজাইমা, বয়হাকি)
রাসুল (সা.) থেকে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, জুমার দিনে ১২ ঘণ্টা রয়েছে। তাতে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাস করো। (আবু দাউদ, হাদিস নং : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস নং : ১৩৮৯)
আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বর্ণনা করেন, শুক্রবারে আছরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত সিরাতগ্রন্থ যাদুল মাআ’দ-এ বর্ণিত আছে, জুমার দিন আছরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। (২/৩৯৪)। ইমাম আহমদ (রহ.)-ও একই কথা বলেছেন। (তিরমিজির ২য় খণ্ডের ৩৬০ নং পৃষ্ঠায় কথাটি উল্লেখ আছে)
মোটকথা, জুমার দিনে বান্দা দোয়া কবুলের একটি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে, যখন আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। এসময় সম্পর্কে আরো কিছু অভিমত তুলে ধরা হলো-
জুমার নামাজে সুরা ফাতিহার পর আমিন বলার সময়। আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে। মুয়াজ্জিন আজান দেয়ার সময়। জুমার দিন সূর্য ঢলে পড়ার সময়। ইমাম খুতবা দেয়ার জন্য মিম্বরে দাঁড়ানোর সময়। উভয় খুতবার মধ্যবর্তী সময়। জুমার দিন ফজরের আজানের সময়। প্রত্যেক জুমায় আলাদা আলাদা সময়ে।
গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, দোয়া কবুলের সময়টি পুরোদিনের ভেতর লুকিয়ে আছে। পুরোপুরি নির্ধারিত না করার উদ্দেশ্য হলো, বান্দা যেন জুমার দিন সর্বদা ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ায় মশগুল থাকে।
জুমার দিনে মর্যাদা বৃদ্ধি ও গুনাহ মাফ হওয়ার ঘোষণা রয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও এক জুমা থেকে অন্য জুমা মাঝের সব গুনাহকে মাফ করে দেয়; যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়।’ মুসলিম।
তিনি আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, সে সময়টিতে একজন মুসলমান যে কল্যাণের দোয়া করবে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।’ (মুসলিম)
আর এটি আসরের একেবারে শেষ সময়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা আসরের পরে একবারে শেষ সময়ে দোয়া করো।’ আবু দাউদ।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পৃথিবীতে জুমার দিন বনি আদম ছাড়া সব প্রাণী কিয়ামত হয়ে যাওয়ার ভয়ে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত কান পেতে থাকে।’ নাসায়ি।
জুমার দিনের ফজিলত মোমিনের জন্য জান্নাত পর্যন্ত বিস্তৃত। জান্নাতে তাদের জন্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত হলো আল্লাহর দর্শন লাভ।
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…
If you’re a fan of anime and are curious about the stranger, more supernatural side…