ঝাড়-ফুঁক ইসলামে বৈধ। এ ঝাড়-ফুঁক হতে হবে সুন্নাত পদ্ধতিতে। ঝাড়-ফুঁক দিতে যেভাবে হাত বুলাতেন ও দোয়া পড়তেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে বর্ণনা ওঠে এসেছে হাদিসে।
কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে গেলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঝাড়-ফুঁক করতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব ক্ষেত্রে ঝাড়-ফুঁক করতেন বা যেভাবে ঝাড়-ফুঁক করতেন সেভাবে ঝাড়-ফুঁক করা নিষিদ্ধ নয়।
রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে অনেক দোয়া রয়েছে। এ সব দোয়ার আমলে জটিল ও কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পায় মুমিন।
ঝাড়-ফুঁক ও দোয়া
কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে গেলে প্রথমত তার চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি ওই ব্যক্তির দ্রুত রোগমুক্তির আশায় হাদিসে বর্ণিত দোয়া পড়ে ঝাড়-ফুঁকও করা যেতে পারে।
হজরত আব্দুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, ‘আমি ও সাবিত একবার হজরত আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে গেলাম। সাবিত বললেন, হে আবূ হামযা! আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তখন আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি কি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করেছিলেন তা দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করে দেব?
তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’। তখন হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু পড়লেন-
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি, মুজহিবাল বাসি, ইশফি আনতাশ-শাফি, লা শাফিয়া ইল্লা আনতা শিফায়ান লা ইয়ুগাদিরু সুক্বামা।’ (বুখারি)
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মানুষের রব, রোগ নিরাময়কারী। (আপনি) আরোগ্য দান করুন, আপনি আরোগ্য দানকারী। আপনি ছাড়া আর কেউ আরোগ্য দানকারী নেই। এমন আরোগ্য দান করুন, যা কোনো রোগ অবশিষ্ট রাখে না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোগ নিরাময়ে তার উম্মতের জন্য অনেক দোয়া তুলে ধরেছেন। প্রতিটি দোয়াই মানুষের রোগ মুক্তিতে কার্যকরী।
সুতরাং মানুষের কোনো জটিল বা কঠিন রোগ হলে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তবে পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো দোয়াগুলোর আমলও যথাযথভাবে করা জরুরি। আর তাতে আল্লাহর অনুগ্রহে মানুষ রোগ-ব্যাধি থেকে দ্রুত সুস্থতা লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।
ঝাড়-ফুঁকের ক্ষেত্রে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার ডান হাত রোগীর শরীরে বুলিয়ে দিতেন। আক্রান্ত স্থানে ডান হাত বুলাতেন আর দোয়া পড়ে ফুঁক দিতেন। অন্য হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ যখন অসুস্থ হতো তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ডান হাত রোগীর শরীরে বুলাতেন আর এ দোয়া পড়তেন।’ (বুখারি, মিশকাত)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাত পদ্ধতিতে রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে দোয়া ও ঝাড়-ফুঁক করার তাওফিক দান করুন। সুস্থতা লাভে বিশ্বনবির সুন্নাতগুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও সাবিত একবার আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর নিকট যাই। সাবিত বললেন, হে আবূ হামযা, আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তখন আনাস (রাঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে দেব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আনাস (রাঃ) পড়লেন হে আল্লাহ! তুমি মানুষের রব, ব্যথ্যা নিবারণকায়ী, শিফা দান করো তুমিই শিফা দানকারী। তুমি ব্যাতীত আর কেউ শিফা দানকারী নেই। এমন শিফা দাও যা কোন রোগ অবশিষ্ট রাখে না।
باب رُقْيَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَثَابِتٌ، عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فَقَالَ ثَابِتٌ يَا أَبَا حَمْزَةَ اشْتَكَيْتُ. فَقَالَ أَنَسٌ أَلاَ أَرْقِيكَ بِرُقْيَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَلَى. قَالَ “ اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا ”.