দিস শরিফে বিতর নামাজ পড়ার কয়েকটি পদ্ধতি দেখা যায়। সেগুলোর আলোকে বিভিন্ন মাজহাবে একাধিক পন্থায় বিতর নামাজ আদায়ের পদ্ধতি পরিলক্ষিত হয়। তবে হানাফি মাজহাবে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, তা নিম্নরূপ :
বিতর নামাজ তিন রাকাত। অন্য ফরজ নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়বে। কিন্তু সালাম ফেরাবে না। তারপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলাবে। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর নিঃশব্দে দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু, সিজদার পর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে বিতরের নামাজ সমাপ্ত করবে।
বিতরের নামাজের এই পদ্ধতি হাদিস থেকে সুপ্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত তাহাজ্জুদের পর বিতর পড়তেন এবং বিতর তিন রাকাত পড়তেন। তিন রাকাতের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের জন্য বসতেন, কিন্তু সালাম ফেরাতেন না। সালাম ফেরাতেন সবশেষে তৃতীয় রাকাতে। যেমন—আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, রমজানে নবীজির নামাজ কেমন হতো? জবাবে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানে এবং রমজানের বাইরে ১১ রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কোরো না! এরপর আরো চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য! এরপর তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন। (সহিহ বুখারি : ১/১৫৪, হাদিস ১১৪৭; সহিহ মুসলিম : ১/২৫৪, হাদিস ৭৩৮; সুনানে নাসায়ি ১/২৪৮, হাদিস ১৬৯৭)।
সাদ ইবনে হিশাম (রহ.) বলেন, আয়েশা (রা.) তাঁকে বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। (সুনানে নাসায়ি ১/২৪৮; হাদিস ১৬৯৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৪/৪৯৪, হাদিস ৬৯১২)।
ইমাম হাকেম (রহ.) হাদিসটি বর্ণনা করার পর বলেন, হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক সহিহ।
আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)ও এভাবে বিতর পড়তেন এবং তাঁর সূত্রে মদিনাবাসীরা তা গ্রহণ করেছেন। (মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন ১/৩০৪, হাদিস : ১১৮১)
আবদুল্লাহ ইবনে আবি কাইস বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম যে নবীজি (সা.) বিতরে কত রাকাত পড়তেন? জবাবে তিনি বলেন, চার এবং তিন, ছয় এবং তিন, আট এবং তিন, ১০ এবং তিন। তিনি বিতরে সাত রাকাতের কম এবং ১৩ রাকাতের বেশি পড়তেন না। [সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩, হাদিস ১৩৫৭ (১৩৬২); তাহাবি শরিফ ১/১৩৯; মুসনাদে আহমদ ৬/১৪৯, হাদিস : ২৫১৫৯)]
এখানেও দেখুন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজ কখনো চার রাকাত, কখনো ছয় রাকাত, কখনো আট রাকাত, কখনো ১০ রাকাত পড়তেন; কিন্তু মূল বিতর সর্বদা তিন রাকাতই হতো।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) ‘ফাতহুল বারি’তে ৩/২৬-এ লেখেন, আমার জানামতে এটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বাধিক বিশুদ্ধ বর্ণনা। এ বিষয়ে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে যে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এর দ্বারা সেসবের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব। (ফাতহুল বারি : ৩/২৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তাহাজ্জুদ ও বিতর প্রত্যক্ষ করার জন্য আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক রাতে তাঁর খালা উম্মুল মুমিনিন মাইমুনা (রা.)-এর ঘরে অবস্থান করেন। তিনি যা যা প্রত্যক্ষ করেছেন তা বর্ণনা করেছেন, তাঁর সাগরেদরা সে বিবরণ বিভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেছেন। এখানে সুনানে নাসায়ি ও অন্য হাদিসের কিতাব থেকে একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করা হলো—‘মুহাম্মাদ ইবনে আলী তাঁর পিতা থেকে, তিনি তাঁর পিতা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে রাতে শয্যা থেকে উঠলেন, এরপর মিসওয়াক করেন, এরপর দুই রাকাত পড়েন, এরপর শুয়ে গেলেন। তারপর আবার শয্যা ত্যাগ করেন, মিসওয়াক করেন, অজু করেন এবং দুই রাকাত পড়েন; এভাবে ছয় রাকাত পূর্ণ করেন। এরপর তিন রাকাত বিতর পড়েন। এরপর দুই রাকাত পড়েন। (সুনানে নাসায়ি ১/২৪৯, হাদিস ১৭০৪; মুসনাদে আহমাদ ১/৩৫০, হাদিস ৩২৭১; ত্বহাবি শরিফ ১/২০১-২০২)
সুতরাং যার শেষ রাতে তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে, সে তাহাজ্জুদের পরে বিতর পড়বে। যদি বিতর রাতের শুরু ভাগে এশার পর পড়া হয়, তবু উত্তম এই যে দুই-চার রাকাত নফল নামাজ পড়ার পর বিতর আদায় করবে। মাগরিবের মতো আগে কোনো নফল ছাড়া শুধু তিন রাকাত বিতর পড়া পছন্দনীয় নয়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমরা শুধু তিন রাকাত বিতর পড়ো না, এতে মাগরিবের সাদৃশ্যপূর্ণ করে ফেলবে; বরং পাঁচ, সাত, নয়, ১১ বা এরও বেশি রাকাতে বিতর পড়ো। (মুস্তাদরাকে হাকেম ১/৩০৪, হাদিস ১১৭৮; সুনানে কুবরা বাইহাকি : ৩/৩১, ৩২)
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…
If you’re a fan of anime and are curious about the stranger, more supernatural side…