মক্কা বিজয় কিভাবে হয়েছে পড়ে নিন ভাল লাগবে।


৪৪৭৩। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান দীরেমী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু রাবাহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেন, আমরা ভ্রমন করে মুয়াবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান (রাঃ) এর নিকট গেলাম। আমাদের মধ্যে তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ)ও ছিলেন। প্রত্যেকেই এক দিন তার সাথীর জন্য খাবার তৈয়ার করতেন। একদিন আমার পালা আসল। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা! আজতো আমার পালা। অতএব, সকালেই আমার বাসস্থানে এলেন, তখনও খানা পাকানো শেষ হয় নাই। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা! আপনি যদি আমাদেরকে খানা তৈরির পূর্ব পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন হাদীস বর্ণনা করতেন! (তবে ভাল হতো)

অতএব, তিনি বললেনঃ আমরা মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)বাহিনীর কে ডান অংশের এবং যুবাইর (রাঃ) কেবাহিনীর বাম অংশের সেনাপতিত্ব প্রদান করলেন। আবূ উবায়দা (রাঃ) কে পদাতিক বাহিনীর এবং উপত্যকার নিম্নভুমির অধিনায়ক নিযুক্ত করলেন। এরপর তিনি বললেন, হে আবূ হুরায়রা! আনসারদেরকে আমার কাছে আসার জন্য আহবান কর। অতএব আমি তাদেরকে আহবান করলাম। এরপর তাঁরা দ্রুত আসলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আনসারগণ! তোমরা কি কুরাইশের বিভিন্ন (বিচ্ছিন্ন) দলের লোক দেখতে পাচ্ছ? তারা বললেন, হ্যাঁ।

তিনি বললেন, আগামীকাল যখন তোমরা (যুদ্ধক্ষেত্রে) তাদের মোকাবিলা করবে তখন তাদেরকে সম্পূর্ণ নির্মূল করে দেবে। তারপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে ইঙ্গিতে বললেন (তাদেরকে সমূলে বিনষ্ট করে দেবে)। তারপর বললেনঃ আমার সাথে তোমাদের (খালিদ বাহিনীর) একত্রিত হবার স্থান সাফা পাহাড়। বর্ণনাকারী বলেন, সেদিন যে কোন (বিধর্মী) তাদের (আনসারদের) লক্ষ্যস্থলে পড়েছে, তাকেই তারা নির্মুল করেছে। এরপরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফা পাহাড়ের উপর আরোহণ করলেন। তখন আনসারগণ তথায় উপনীত হয়ে সাফা পাহাড় ঘিরে ফেললো। তখন আবূ সুফিয়ান এলেন এবং বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কুরাইশদেরকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে আর কোন কুরাইশের অস্তিত্ব থাকবেনা।

এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি আবূ সুফিয়ানের বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। যে অস্ত্র ফেলে দিবে সেও নিরাপদ এবং যে স্বীয় গৃহের দরজা বন্ধ করে রাখবে সেও নিরাপদ। তখন আনসারগণ বলাবলি করছিল যে, এ লোকটিকে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে) স্বীয় গোত্রের আকর্ষণ এবং স্বদেশের অনুরাগ পেয়ে বসেছে।

এমতাবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ওহী নাযিল হল। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরাই কি বলেছিলে যে, “এ লোকটিকে (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে) তার গোত্রের ভালবাসা এবং স্বদেশের অনুরাগে পেছো বসেছে।” শোন! তাহলে আমার নামের মর্যাদা (ও অর্থ) কি? একথাটি তিনি তিনবার বলেছেন।

আমি হলাম মুহাম্মাদ, আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসুল। আমি আল্লাহর নির্দেশেই তোমাদের কাছে হিজরত করেছি। সুতরাং (আমার) জীবন (প্রশংসিত) তোমাদের জীবন (এবং আমার মৃত্যু তোমাদের মৃত্যু ওতপ্রোতভাবে জড়িত)। তখন তাঁরা বললো, আল্লাহর শপথ! আমরা একথা বলেছিলাম আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি বিশেষ লোভ এর কারণে। (যেন তিনি আমা দেরকে ছেড়ে না যান।) তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তোমাদের সত্য বলে গ্রহন করেছেন এবং তোমাদের ওযর কবুল করেছেন।

باب فَتْحِ مَكَّةَ ‏‏

حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ، بْنُ سَلَمَةَ أَخْبَرَنَا ثَابِتٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، قَالَ وَفَدْنَا إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ وَفِينَا أَبُو هُرَيْرَةَ فَكَانَ كُلُّ رَجُلٍ مِنَّا يَصْنَعُ طَعَامًا يَوْمًا لأَصْحَابِهِ فَكَانَتْ نَوْبَتِي فَقُلْتُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ الْيَوْمُ نَوْبَتِي ‏.‏ فَجَاءُوا إِلَى الْمَنْزِلِ وَلَمْ يُدْرِكْ طَعَامُنَا فَقُلْتُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ لَوْ حَدَّثْتَنَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يُدْرِكَ طَعَامُنَا فَقَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْفَتْحِ فَجَعَلَ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ عَلَى الْمُجَنِّبَةِ الْيُمْنَى وَجَعَلَ الزُّبَيْرَ عَلَى الْمُجَنِّبَةِ الْيُسْرَى وَجَعَلَ أَبَا عُبَيْدَةَ عَلَى الْبَيَاذِقَةِ وَبَطْنِ الْوَادِي فَقَالَ ‏”‏ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ادْعُ لِي الأَنْصَارَ ‏”‏ ‏.‏ فَدَعَوْتُهُمْ فَجَاءُوا يُهَرْوِلُونَ فَقَالَ ‏”‏ يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ هَلْ تَرَوْنَ أَوْبَاشَ قُرَيْشٍ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ انْظُرُوا إِذَا لَقِيتُمُوهُمْ غَدًا أَنْ تَحْصِدُوهُمْ حَصْدًا ‏”‏ ‏.‏ وَأَخْفَى بِيَدِهِ وَوَضَعَ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ وَقَالَ ‏”‏ مَوْعِدُكُمُ الصَّفَا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَمَا أَشْرَفَ يَوْمَئِذٍ لَهُمْ أَحَدٌ إِلاَّ أَنَامُوهُ – قَالَ – وَصَعِدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّفَا وَجَاءَتِ الأَنْصَارُ فَأَطَافُوا بِالصَّفَا فَجَاءَ أَبُو سُفْيَانَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أُبِيدَتْ خَضْرَاءُ قُرَيْشٍ لاَ قُرَيْشَ بَعْدَ الْيَوْمِ ‏.‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَلْقَى السِّلاَحَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَتِ الأَنْصَارُ أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَخَذَتْهُ رَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ وَرَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ ‏.‏ وَنَزَلَ الْوَحْىُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ قُلْتُمْ أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَخَذَتْهُ رَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ وَرَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ ‏.‏ أَلاَ فَمَا اسْمِي إِذًا – ثَلاَثَ مَرَّاتٍ – أَنَا مُحَمَّدٌ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ هَاجَرْتُ إِلَى اللَّهِ وَإِلَيْكُمْ فَالْمَحْيَا مَحْيَاكُمْ وَالْمَمَاتُ مَمَاتُكُمْ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا وَاللَّهِ مَا قُلْنَا إِلاَّ ضِنًّا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِنَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُصَدِّقَانِكُمْ وَيَعْذِرَانِكُمْ ‏”‏ ‏.‏


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *