মুজদালিফায় অবস্থানের ফজিলত ও বিধান।

মুজদালিফায় অবস্থানের ফজিলত ও বিধানমুজদালিফার খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন হাজিরা, সংগৃহীত

মক্কা নগরী থেকে: হজের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে ৯ জিলহজ রাত ও ১০ জিলহজ সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব।

মুজদালিফায় অবস্থান প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে আল্লাহ উল্লেখ করেন, ‘যখন তোমরা আরাফা থেকে প্রত্যাবর্তন করো তখন আল্লাহকে স্মরণ করো (মাশয়ারুল হারামে) মুজদালিফায়। স্মরণ করো যেভাবে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তো ইতোপূর্বে পথভ্রষ্ট ছিলে।

’ সূরা বাকারা: ১৯৮।

আরাফাতের ময়দান ছেড়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার অতিক্রম করার পর মুজদালিফা। তারপর ওয়াদিয়ে মুহাসসার এর পরে মিনা। ওয়াদিয়ে মুহাসসার (হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের স্থান) ব্যতীত পুরো মুজদালিফা এলাকায় অবস্থান করা যায়।

মুজদালিফায় অবস্থানের ওয়াজিবসমূহ:
১. ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো মুহূর্ত অবস্থান করা ওয়াজিব। কেউ যদি সূর্য উদয়ের পরে অথবা সুবহে সাদিকের পূর্বে অবস্থান করেন তবে তার অবস্থান শুদ্ধ হবে না।

২. মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করা ওয়াজিব। ইহরামে থাকা ও আরাফাতে অবস্থান করার শর্তে।

মুজদালিফার অবস্থানে সুন্নত সময়
১. সুবহে সাদিক থেকে উত্তমরূপে ফর্সা হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা যায়। এই পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা।

২. মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

মুজদালিফায় অবস্থানে মুস্তাহাবসমূহ
১. পায়ে হেঁটে মুজদালিফায় প্রবেশ করা।
২. সম্ভব হলে গোসল করা।
৩. মসজিদ মাশয়ারুল হারামের কাছাকাছি অবস্থান করা।
৪. ফজরের নামাজ মসজিদে মাশয়ারুল হারামের ইমামের সঙ্গে আদায় করা।
৫. ফজরের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফজরের নামাজ আদায় করা।
৬. অবস্থানের স্থলে বসে দোয়া, কোরআন তেলাওয়াত, তাকবির, জিকির, দরূদ শরিফ, অধিক পরিমাণে তালবিয়া পাঠ করা ও উভয় হাত তুলে দোয়া করা।
৭. ফজরের নামাজের পরে অবস্থান করা।

মুজদালিফার বিবিধ মাসয়ালা
১. মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজের জন্য এক আজান এক ইকামত যথেষ্ট।
২. কিন্তু আরাফায় প্রত্যেক নামাজের জন্য ইকামত জরুরি কেন না আরাফাতে দ্বিতীয় নামাজ হচ্ছে আসরের নামাজ যা জোহরের ওয়াক্তে আগে পড়তে হচ্ছে। তাই সবার অবগতির জন্য দ্বিতীয় ইকামত দিতে হয়। কিন্তু মুজদালিফার দ্বিতীয় নামাজ হলো এশার, যা ওয়াক্ত মতোই পড়া হচ্ছে, তাই নতুন ঘোষণার প্রয়োজন নেই।
৩. সময় সংকীর্ণ হওয়ার কারণে যদি মুজদালিফায় পৌঁছানোর পূর্বে সুবহে সাদিক হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় তাহলে উভয় নামাজ পথিমধ্যে আদায় করে নেবেন। তা নাহলে কাজা হয়ে যাবে।
৪. বিশেষ প্রয়োজনে নারীরা ফজরের সময়ের পূর্বে মুজদালিফা ছেড়ে মিনা অভিমুখে রওয়ানা হয়ে গেলে কোনো ক্ষতি নাই, জায়েয আছে।

মুসলিম উম্মাহর হজ পালন

Leave a Comment