মৃত ব্যক্তির জন্য করণীয় ও বর্জনীয়


প্রতিটা মানুষের জন্যই মৃত্যু একটি সুনিশ্চিত বিষয় । আর প্রতিনিয়ত আমাদের মধ্য হতেই কেউ না কেউ মৃত্যুর সম্মুখীন হচ্ছে । আর একজন মুসলিম হিসেবে অপর মুসলিম ভাইয়ের মৃত্যুতে কিছু করণীয় বিষয় রয়েছে । তবে মৃত ব্যক্তিকে ঘিরে এমন কিছ বিষয়ের প্রচলনও রয়েছে, যা কুরআন-সুন্নাহতে নেই । এই বিষয়গুলো বর্জন করাও আমাদের দায়িত্ব । তাই নিচে মৃত ব্যক্তির জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলোঃ

● করণীয়:
১. মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে কলমা পাঠ করা ।
২. কারো মৃত্যু সংবাদ শোনার সাথে সাথে দু’আ পড়া ।
৩. শোকের আঘাতের শুরুতে ধৈর্য ধারণ করা ।
৪. মৃত ব্যক্তির জন্য অযথা কান্না-কাটি না করে দু’আ করা ।
৫. মৃত ব্যক্তির শরীর চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা ।
৬. মৃত ব্যক্তির চোখ খোলা থাকলে তা বন্ধ করে দেয়া ।
৭. মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন খারাপ মন্তব্য না করা ।
৮. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়া ।
৯. মৃত ব্যক্তিকে গোসলের পর কাফন পরানো ।
১০. ইহরামধারী হাজীকে তার ঐ ইহরামের কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া ।
১১. মৃত ব্যক্তির পরিবারের জন্য তার নিকটাত্মীয় খাবারের ব্যবস্থা করা (একদিন) ।
১২. মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনে বিলম্ব না করা ।
১৩. মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়া ।
১৪. মৃত ব্যক্তিকে দাফনের সময় নিকট আত্মীয়রাই কবরে নামানো এবং কবরে নামানোর সময় আগে পায়ের দিক থেকে নামানো ।
১৫. মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় দু’আ পাঠ করা ।
১৬. মৃত ব্যক্তির কবরে মাটি দেয়ার সময় প্রথমে দু’হাতে তিন আঁজলা মাটি দেয়া ।
১৭. মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার জন্য দু’আ করা ।

সূত্র: মৃত ব্যক্তির জন্য আমাদের করণীয়সমূহ; পৃ: ৭-১৯

● বর্জনীয়:
১. মৃত ব্যক্তির জন্য মাগফিরাত কামনার নামে তাহলীল পড়ানো ।
২. কুরআন খতম পড়ানো, মৃত ব্যক্তির চারপাশে বসে কুরআন পাঠ করা ।
৩. মৃত ব্যক্তিকে যেখানে গোসল দেয়া হয় সে স্থানে ৪ দিন কিংবা ৪০ দিন পর্যন্ত বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করা এবং রাতের বেলায় সেখানে মোম, হ্যারিকেন বা বৈদ্যুতিক বাতি দিয়ে আলোকিত করে রাখা ।
৪. জানাজা নিয়ে যাওয়ার সময় ‘আল্লাহু রাব্বী, মুহাম্মদ নবী’ কিংবা কলমা শাহাদত পাঠ করা ।
৫. কাফন পরানোর সময় নির্ধারিত পরিমাণের চাউল, বিস্কুট ও ফলের ব্যবস্থা করা এবং সেগুলো কবরস্থানে আগত ফকিরদের মাঝে বিলি করা ।
৬. জানাজা নেওয়ার সময় খাটিয়ার উপর আগর বাতি জ্বালানো এবং জানাযা যাত্রীদের উপর গোলাপজল ছিটানো ।
৭. জানাযা নামাজ শেষে “এ মানুষটি কেমন ছিল” উপস্থিত সবাই “বেশ ভালো ছিল” বলা ।
৮. জানাযার নামাযের পূর্বে মৃতব্যক্তির স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেয়া ।
৯. কবরের উপর পুষ্পস্তবক অর্পণ করা ।
১০. কোন কাপড়খন্ডের উপর কলমা লিখে ঐ কাপড় কবরে ভিতর মৃতের ডান পাশে রাখা ।
১১. কবর পাকা করা ।
১১. মৃত্যুর পর চারদিন পর্যন্ত কিংবা চল্লিশ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন ফাতিহা পড়ানো ।
১২. মৃত্যুর পূর্বে কবর খনন করে রাখা ।
১৩. মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় আযান দেয়া ।
১৪. মৃত ব্যক্তির কাযা কিংবা ছেড়ে দেয়া নামাজের জন্য আর্থিক কাফফারা দেয়া ইত্যাদি ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *