মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না আনাযী (রহঃ) … যুরারা (রহঃ) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, সা’দ ইবনু হিশাম ইবনু আমির (রহঃ) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার ইচ্ছা করে মদিনায় এলেন এবং সেখানে তাঁর একটি সম্পত্তি বিক্রি করে তা যূদ্ধাস্ত্র ও ঘোড়া সংগ্রহে ব্যয় করার এবং মৃত্যু পর্যন্ত রোমানদের বিরুদ্ধে জিহাদে আত্ননিয়োগ করার সংকল্প করলেন। মদিনায় আসার পর মদিনাবাসী কিছু লোকের সাথে সাক্ষাত হলে তাঁরা ঐ কাজ করতে নিষেধ করলেন এবং তাঁকে জানালেন যে, ছয় জনের একটি দল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় এরূপ ইচ্ছা করেছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিষেধ করেন এবং বলেন, “আমার মধ্যে তোমাদের জন্য কি কোন আদর্শ নেই”?
মদিনাবাসীরা তাঁকে এ ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি নিজের স্ত্রীর সাথে রাজ’আত, (পুনরায় স্ত্রীত্বে বরণ) করলেন। কেননা তিনি তাঁকে তালাক দিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর এ রাজ’আতের ব্যাপারে সাক্ষীও রাখলেন। এরপর তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাঁকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিতর সম্পর্কে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক বিজ্ঞ ব্যাক্তি সম্পর্কে কি তোমাকে বলে দিব না? তিনি বললেন, তিনি কে? ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি আয়িশা (রাঃ)। তাঁর কাছে গিয়ে তুমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করবে পরে আমার কাছে এসে তোমাকে দেওয়া তার জবাব সম্পর্কে অবহিত করবে।
আমি তখন তাঁর কাছে রওয়ানা হলাম। আর হাকীম ইবনু আফলাহ (রাঃ) এর কাছে গিয়ে আমার সঙ্গে আয়িশা (রাঃ) এর কাছে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম। তিনি বললেন, আমি তো তাঁর নিকট যাই না। কেননা (বিবাদমান) দু’দল সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে আমি তাকে নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি তাতে অংশগ্রহণ না করতে অস্বীকার করেন। সা’দ (রাঃ) বলেন, তখন আমি তাঁকে কসম দিলাম। তখন তিনি তৈরি হলেন। আমরা আয়িশা (রাঃ)-এর উদ্দেশ্যে চললাম এবং তাঁর কাছে গিয়ে অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাদের অনুমতি দিলেন।
আমরা তাঁর ঘরে প্রবেশ করলে তিনি বললেন, হাকীম না কি? তিনি তাঁকে চিনে ফেলেছিলেন। উত্তরে হাকীম (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। আয়িশা (রাঃ) বললেন, তোমার সঙ্গে কে? হাকীম (রাঃ) বললেন, সা’দ ইবনু হিশাম। আয়িশা (রাঃ) বললেন, কোন হিশাম? হাকীম (রাঃ) বললেন, ইবনু আমির। তখন আয়িশা (রাঃ) তাঁর জন্য রহমতের দুআ করলেন এবং তাঁর সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করলেন। রাবী কাতাদা (রহঃ) বলেছেন, আমির (রাঃ) উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। আমি (সা’দ) বললাম, হে, উম্মুল মুমিনীন! আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আখলাক সম্পর্কে অবহিত করুন! তিনি বললেন, তুমি কি কুরআন পাঠ কর না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চরিত্র তো ছিল আল কুরআনই।
সা’দ (রহঃ) বলেন, তখন আমার ইচ্ছে ছিল যে, উঠে যাই এবং মৃত্যু পর্যন্ত কাউকে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা করব না। পরে আবার মনে হল (আরো কিছু জিজ্ঞাসা করি) তাই আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাতের ইবাদত সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন! তিনি বললেন, তুমি কি সূরা “ইয়া আয়্যুহাল মুয্যামিল” পড় না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ এ সূরার প্রথমাংশ (ইবাদত) রাত্রি জাগরণ ফরয করে দিয়েছিলেন। তখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ এক বছর যাবত (তাহাজ্জুদের জন্য) রাত্রি জাগরণ করলেন। আর আল্লাহ তা’আলা এ সূরার শেষ অংশ বার মাস পর্যন্ত আসমানে রুখে রাখেন। অবশেষে এ সূরার শেষ অংশ নাযিল করে সহজ করে দিলেন। ফলে রাত্রি জাগরণ ফরয হওয়ার পরে নফলে পরিণত হয়।
সা’দ (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, উাম্মুল হে মুমিনীন! আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সম্পর্কে অবহিত করুন! তিনি বললেন, আমরা তাঁর জন্য তাঁর মিসওয়াক ও ওযুর পানি প্রস্তুত রাখতাম। রাতের যে সময় আল্লাহর ইচ্ছা হত তাকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি তখন মিসওয়াক ও ওযু করতেন এবং নয় রাক’আত সালাত আদায় করতেন। তিনি এর মাঝে আর বসতেন না অষ্টম রাক’আত ব্যতীত। তখন তিনি আল্লাহর যিকর করতেন, তাঁর হামদ করতেন এবং তাঁর কাছে দু’আ করতেন। তারপর সালাম না করেই উঠে পড়তেন এবং নবম রাক’আত আদায় করে বসতেন এবং আল্লাহর যিকির ও তাঁর হামদ ও তাঁর কাছে দুআ করতেন। পরে এমন ভাবে সালাম বলতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। সালাম করার পরে বসে দু’রাকআত সালাত আদায় করতেন। বৎস, এ হল মোট এগার রাকআত।
পরে যখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বায়োঃবৃদ্ধ হয়ে গেলেন এবং তিনি স্থুলদেহী হয়ে গেলেন, তখন সাত রাকআত দিয়ে বিতর আদায় করতেন। আর শেষ দু’ রাক’আতে তাঁর আগের আমলের অনুরূপ আমল করতেন। বৎস, এভাবে হল নয় রাক’আত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সালাত আদায় করতেন তখন তাতে স্থায়িত্ব রক্ষা করা পছন্দ করতেন। আর কখনো নিদ্রা বা কোন ব্যাধি তাঁর রাত জেগে ইবাদতের ব্যাপারে তাঁকে সংঘাত ঘটালে দিনের বেলা বার রাক’আত সালাত আদায় করে নিতেন।
আর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই রাতে পূর্ণ কুরআন পড়েছেন বলে আমার জানা নেই এবং তিনি ভোর পর্যন্ত সারা রাত সালাত আদায় করেননি এবং রমযান ব্যতীত অন্য কোন পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেননি।
সা’দ (রহঃ) বলেন, পরে আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং আয়িশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীস তাঁর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, ঠিকই বলেছেন। আমি যদি তাঁর কাছে যেতাম, অথবা বললেন, আমি যদি তাঁর সঙ্গে যেতাম তাহলে অবশ্যই আমি তাঁর কাছে গিয়ে সরাসরি তার মুখে এ হাদীস শুনতাম। সা’দ (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, আমি যদি জানতাম যে, আপনি তাঁর কাছে যান না, তবে তাঁর হাদীস আমি আপনাকে শোনাতাম না।
باب صَلاَةِ اللَّيْلِ وَعَدَدِ رَكَعَاتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ الْوِتْرَ رَكْعَةٌ وَأَنَّ الرَّكْعَةَ صَلاَةٌ صَحِيحَةٌ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، أَرَادَ أَنْ يَغْزُوَ، فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ فَأَرَادَ أَنْ يَبِيعَ عَقَارًا لَهُ بِهَا فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلاَحِ وَالْكُرَاعِ وَيُجَاهِدَ الرُّومَ حَتَّى يَمُوتَ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ لَقِيَ أُنَاسًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ فَنَهَوْهُ عَنْ ذَلِكَ وَأَخْبَرُوهُ أَنَّ رَهْطًا سِتَّةً أَرَادُوا ذَلِكَ فِي حَيَاةِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَهَاهُمْ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ” أَلَيْسَ لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ ” . فَلَمَّا حَدَّثُوهُ بِذَلِكَ رَاجَعَ امْرَأَتَهُ وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا وَأَشْهَدَ عَلَى رَجْعَتِهَا فَأَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ عَائِشَةُ . فَأْتِهَا فَاسْأَلْهَا ثُمَّ ائْتِنِي فَأَخْبِرْنِي بِرَدِّهَا عَلَيْكَ فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهَا فَأَتَيْتُ عَلَى حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ فَاسْتَلْحَقْتُهُ إِلَيْهَا فَقَالَ مَا أَنَا بِقَارِبِهَا لأَنِّي نَهَيْتُهَا أَنْ تَقُولَ فِي هَاتَيْنِ الشِّيعَتَيْنِ شَيْئًا فَأَبَتْ فِيهِمَا إِلاَّ مُضِيًّا . – قَالَ – فَأَقْسَمْتُ عَلَيْهِ فَجَاءَ فَانْطَلَقْنَا إِلَى عَائِشَةَ فَاسْتَأْذَنَّا عَلَيْهَا فَأَذِنَتْ لَنَا فَدَخَلْنَا عَلَيْهَا . فَقَالَتْ أَحَكِيمٌ فَعَرَفَتْهُ . فَقَالَ نَعَمْ . فَقَالَتْ مَنْ مَعَكَ قَالَ سَعْدُ بْنُ هِشَامٍ . قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ فَتَرَحَّمَتْ عَلَيْهِ وَقَالَتْ خَيْرًا – قَالَ قَتَادَةُ وَكَانَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ . فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ خُلُقَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ الْقُرْآنَ . – قَالَ – فَهَمَمْتُ أَنْ أَقُومَ وَلاَ أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَىْءٍ حَتَّى أَمُوتَ ثُمَّ بَدَا لِي فَقُلْتُ أَنْبِئِينِي عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ ( يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ) قُلْتُ بَلَى . قَالَتْ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ افْتَرَضَ قِيَامَ اللَّيْلِ فِي أَوَّلِ هَذِهِ السُّورَةِ فَقَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ حَوْلاً وَأَمْسَكَ اللَّهُ خَاتِمَتَهَا اثْنَىْ عَشَرَ شَهْرًا فِي السَّمَاءِ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ فِي آخِرِ هَذِهِ السُّورَةِ التَّخْفِيفَ فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ فَرِيضَةٍ . – قَالَ – قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لاَ يَجْلِسُ فِيهَا إِلاَّ فِي الثَّامِنَةِ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يَنْهَضُ وَلاَ يُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي التَّاسِعَةَ ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ وَهُوَ قَاعِدٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَىَّ فَلَمَّا أَسَنَّ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ وَصَنَعَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِثْلَ صَنِيعِهِ الأَوَّلِ فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَىَّ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا وَكَانَ إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ أَوْ وَجَعٌ عَنْ قِيَامِ اللَّيْلِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً وَلاَ أَعْلَمُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ وَلاَ صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ وَلاَ صَامَ شَهْرًا كَامِلاً غَيْرَ رَمَضَانَ . – قَالَ – فَانْطَلَقْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسِ فَحَدَّثْتُهُ بِحَدِيثِهَا فَقَالَ صَدَقَتْ لَوْ كُنْتُ أَقْرَبُهَا أَوْ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لأَتَيْتُهَا حَتَّى تُشَافِهَنِي بِهِ . – قَالَ – قُلْتُ لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ حَدِيثَهَا .
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…
If you’re a fan of anime and are curious about the stranger, more supernatural side…