আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে একাধিক আয়াতে তার প্রিয় নবী ও অলিদের সুপারিশ করার ক্ষমতা প্রদান করেছেন। কিন্তু তারা ওইসব আয়াতকে পাশ কাটিয়ে শুধু এই আয়াতটির ওপর নির্ভর করে নবী এবং অলি-আল্লাহদের সুপারিশ করার কোনো ক্ষমতা থাকবে না বলে যে ফতোয়া দেন তা সম্পূর্ণভাবে পবিত্র কোরআন ও হাদিসবিরোধী।
আরবি ‘শাফায়াত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে সুপারিশ। অনেক আলেম-ওলামা বিভিন্ন মিডিয়া ও ইসলামিক অনুষ্ঠানে নির্দ্বিধায় বলে থাকেন, হাশরের ময়দানে কারও সুপারিশ করার কোনো ক্ষমতা থাকবে না। এমনকি নবী করিমও [সা.] কারও জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না। তাদের এ দাবির সমর্থনে তারা পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার ৪৮নং আয়াতটি উল্লেখ করে থাকেন। যাতে বলা হয়েছে, ‘অলা ইউক্বাবালু মিনহা শাফা’ অর্থাৎ সেদিন কারও কোনো সুপারিশ কাজে আসবে না। এ আয়াতের ওপর ভিত্তি করে তারা নবী করিম [সা.]-এর সুপারিশ করার ক্ষমতাকেও অস্বীকার করেন। যার কারণে আজানের দোয়া থেকে কেয়ামতের দিন নবীজীর [সা.] সুপারিশের দোয়াটি বাদ দিয়েছেন।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে একাধিক আয়াতে তার প্রিয় নবী ও অলিদের সুপারিশ করার ক্ষমতা প্রদান করেছেন। কিন্তু তারা ওইসব আয়াতকে পাশ কাটিয়ে শুধু এই আয়াতটির ওপর নির্ভর করে নবী এবং অলি-আল্লাহদের সুপারিশ করার কোনো ক্ষমতা থাকবে না বলে যে ফতোয়া দেন তা সম্পূর্ণভাবে পবিত্র কোরআন ও হাদিসবিরোধী। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস [রা.] সূরা বাকারার ৪৮নং আয়াতটির ব্যাখ্যায় বলেছেন, ওই আয়াতে ‘অলা ইউক্বাবালু মিনহা শাফা’ অর্থাৎ সেদিন কারও কোনো সুপারিশ কাজে আসবে না বলে যে কথাটি বলা হয়েছে তা কাফের এবং মুশরিকদের বেলায় প্রযোজ্য। [দেখুন তফসিরে ইবনে কাছির, ইমাম কুরতুবিসহ আরও অনেক তফসির]। তার এ কথার সমর্থনে আমরা পবিত্র কোরআনে আরও কিছু আয়াত দেখতে পাই। যেমন- কাফেরদের জন্য কোনো সুপারিশকারী থাকবে না [সূরা আনআম : ৭০], মুশরিকদের উপাস্য কোনো সুপারিশ করতে পারবে না [সূরা আনআম : ১০], কাফেরদের উপাস্য কোনো সুপারিশ করতে পারবে না [সূরা রুম : ১৩], জালিমদের জন্য কোনো সুপারিশকারী নেই [সূরা মুমিন : ১৮] ইত্যাদি। সুতরাং পবিত্র কোরআন এ কথা নিশ্চিতভাবে ঘোষণা করছে, হাশরের দিন কাফের, মুশরিক ও জালেমদের কোনো সুপারিশকারী থাকবে না। কিন্তু এ কথাও আল্লাহতায়ালা পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছেন, আল্লাহতায়ালার অনুমতি সাপেক্ষে নবী এবং অলি-আল্লাহরা আল্লাহতায়ালার প্রিয় ব্যক্তিদের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন এবং আল্লাহতায়ালা তাদের সুপারিশ কবুল করবেন। [ছাবা : ২৩] পবিত্র কোরআনের আরেকটি আয়াতের প্রতি লক্ষ্য করুন, যাতে আল্লাহতায়ালা তার প্রিয়নবীকে [সা.] উম্মতের শাফায়াতের ক্ষমতা প্রদান করেছেন, ‘নিজেদের অবাধ্যতার পর ওরা আপনার নিকট এসে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে এবং আপনি ওদের জন্য ক্ষমা চাইলে তারা আল্লাহকে ক্ষমাকারী ও দয়ালু হিসেবে পাইবে [সূরা নিসা : ৬৪]’।
হাফেজ ইবনে কাছির তার বিখ্যাত তাফসিরে উপরোক্ত আয়াত শরিফের তাফসির করতে গিয়ে একটি বিখ্যাত ঘটনার বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আরব্য এক বেদুঈন পবিত্র কোরআনের উপরোক্ত আয়াতটি শুনতে পেয়ে দ্রুত মদিনা শরিফ রওনা হলেন এই উদ্দেশ্যে যে, নবী করিমকে [সা.] বলে তিনি তার পূর্ববর্তী সব গুনাহখাতা আল্লাহর কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেবেন। বেদুঈন লোকটি মদিনা শরিফে এসে জানতে পারলেন, কিছু দিন হল নবীজী [সা.] ওফাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি নবীজীর [সা.] রওজায় কাঁদতে কাঁদতে এই বলে ফরিয়াদ করলেন, ‘হে প্রিয় নবী [সা.], আমি পবিত্র কোরআনের এই শাফায়াতের আয়াতটি শুনতে পেয়ে অনেক আশা নিয়ে আপনার খেদমতে এসেছি আপনার শাফায়াতের মাধ্যমে আমি আমার সব গুনাহখাতা আল্লাহর কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেব বলে। কিন্তু আমার কপাল মন্দ, আমি আপনাকে পেলাম না, তাই অত্যন্ত ভগ্ন হৃদয়ে আপনার দরবার থেকে ফিরে যাচ্ছি।’ এ বলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে নবীজীর [সা.] দরবার থেকে ফিরে যাচ্ছিলেন। আতবী [রা.] নামের একজন সাহাবি নবীজীর [সা.] রওজা প্রাঙ্গণে ঘুমিয়ে ছিলেন। নবীজী [সা.] তাকে স্বপ্নে ডাক দিয়ে বললেন, ‘ওহে আতবী, আমার এক উম্মত অত্যন্ত নিরাশ হয়ে ভগ্ন হৃদয়ে আমার দরবার থেকে ফিরে যাচ্ছে। তুমি তাড়াতাড়ি তার পেছনে যাও এবং তাকে গিয়ে বল, নবীজী [সা.] তোমার ফরিয়াদ শুনেছেন এবং আল্লাহর দরবারে তোমার জন্য শাফায়াত করিয়েছেন। তুমি সন্তুষ্টচিত্তে বেহেশতের সুসংবাদ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাও।’
হজরত আবদুর রহমান জামী [রহ.] তার বিখ্যাত শাওয়াহেদুন নবুয়ত কিতাবে উল্লেখ করেন, ‘হজরত আলী [রা.] বলেন, আমরা যখন রাসূল [সা.]-এর দাফনকার্য সম্পাদন করছিলাম তখন এক বেদুঈন এসে নবীজীর [সা.] কবরে আছড়ে পড়ল এবং নিজ মাথায় মাটি নিক্ষেপ করতে করতে বলতে লাগল, ইয়া রাসূলুল্লাহ [সা.], আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘যদি তারা নিজেদের ওপর জুলুম করে অতঃপর আপনার কাছে এসে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলে আল্লাহ তাদের অপরাধ মার্জনা করবেন [সূরা নিসা : ৬৪]। এখন আমি আপনার দরবারে এই উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়েছি। কিন্তু আপনি তো আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এখন আমি কোথায় যাব? তখন কবর থেকে আওয়াজ এলো- ‘যাও তোমাকে ক্ষমা করা হয়েছে’। হজরত আলী [রা.] বলেন, ওই আওয়াজ উপস্থিত সবাই শুনতে পেয়েছিল। [শাওয়াহেদুন নবুয়ত, মদিনা পাবলিকেশন্স পৃ. ১৪৩-১৪৪]
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল [রহ.], ইমাম হাকিম, ইমাম তাবরানি সহি সনদের সঙ্গে বর্ণনা করেন, মারওয়ান দেখতে পেল এক ব্যক্তি হুজুর [সা.]-এর রওজা মোবারক জড়িয়ে ধরে তাতে মুখ ঘষতে ঘষতে কান্নাকাটি করছেন। মারওয়ান তাকে লক্ষ্য করে বলল, ‘ওহে তুমি জান, তুমি কী করছ?’ ওই ব্যক্তি মুখ তুলে মারওয়ানের দিকে তাকালে মারওয়ান ঘাবড়ে গেল এবং দেখল তিনি হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ [সা.]-এর বিশিষ্ট সাহাবি হজরত আবু আইয়ুব আনসারী [রা.]। আবু আইয়ুব আনসারী তাকে উত্তরে বললেন, ‘তুমি কী দেখছ না আমি কার কাছে এসেছি? আমি কোনো পাথরের নিকট আসিনি, আমি আমার প্রিয়তম নবী [সা.]-এর নিকট এসেছি, যিনি জীবিত আছেন এবং আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন।’ ওই হাদিসটি হাফেজ ইবনে কাসির ও তার তফসিরে সহিসনদের সঙ্গে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং যারা বলে রাসূল [সা.] মরে গেছেন, তিনি উম্মতের কোনো ফরিয়াদ শুনতে ও প্রতিকার করতে পারেন না তারা মিথ্যা এবং গোমরাহীর মধ্যে বসবাস করছেন।9
If you're planning to give your car a new look, one of your first questions…
If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…
A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…
Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…
Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…
Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…