মহিলা সাহাবাদের কাহিনী

সকালের যে ৮ টি অভ্যাস প্রতিটি মুসলমান নারীর করা উচিত।

একটি দিনের সূচনা হয় সকালের মধ্যে দিয়ে। দিনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হল সকাল। আর একজন মুসলমান নারীর জন্য এটা আরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তবে পুরুষ বলে কেউ এই লেখা এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। কারণ সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লে আপনি নিজেও উপকৃত হবেন ইন শা আল্লাহ। প্রথমেই বলেছিলাম দিনের শুরু হয় সকালের মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য, তুমি তোমার ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তোমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।

( সূরা: গাফির:৫৫)

আসুন এবার জানি সকালে উঠার উপর গবেষণা করে গবেষকরা কী বলছেন,

  • গবেষণায় দেখা গেছে ভোরে উঠা লোকদের মধ্যে আশাবাদী, সন্তুষ্টি এবং অধ্যবসায়ের মতো চরিত্রের বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
  • টেক্সাস ইউনিভার্সিটির পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা প্রতিদিন ভোরে জেগে উঠে তারা প্রকৃতপক্ষে ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তিদের তুলনায় ভাল পরীক্ষার স্কোর এবং সামগ্রিক গ্রেড পয়েন্ট অর্জন করেছে।
  • অন্য গবেষণায়, গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে ভোরে ঘুম থেকে উঠা লোকেরা প্রো অ্যাক্টিভ হয়ে থাকে। এর মানে হল যে তারা তাদের জীবনের সফলতা অর্জনে অধিক আগ্রহী হয়।

যাই হোক আজকের এই লেখায় আমরা জানবো সকালে উঠার পর মুসলিম নারীদের যে ৮টি অভ্যাস করা প্রয়োজন।

সকালের অভ্যাস

১. তাহাজ্জুদের জন্য উঠুন

তাহাজ্জুদ নামাজ হয়তো ফরজ নয় কিন্তু এর সওয়াব অনেক বেশী। আপনি ফজরের ২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে নিতে পারেন। এটা আপনার পরকালের নেকীর পাল্লাকে যেমন ভারী করবে সেই সাথে আপনি আল্লাহ তায়ালার নৈকট্যও অর্জন করতে পারবেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল তাহাজ্জুদের সালাত। আর রমযানের সাওমের পর সর্বোত্তম সাওম হল মুহাররম মাসের সাওম (আশূরার সাওম)।

(সূনান নাসাঈ (ইফাঃ) : ১৬১৭)

২. কুরআন তিলাওয়াতে কিছু সময় দিন

তাহাজ্জুদ কিংবা ফজর নামজের পর বাকী সময়টুকু কুরআন তিলাওয়াতে মনোনিবেশ করুন। কুরআন তিলাওয়াত করলে আপনার মন এবং দেহে এক ধরণের প্রশান্তি অনুভব করবেন। আর কুরআনের প্রতিটি অক্ষর পাঠের ব্যাপারেতো নেকীর কথা উল্লেখ আছে। এছাড়া কুরআন শ্রবণের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।

(সুরা আরাফ : আয়াত ২০৪)

৩. ফজর নামাজ সুন্নাত সহ আদায় করুন

ফজর নামায আদায় করলে অবশ্যই সুন্নাত সহ আদায় করা জরুরি। কেননা ফজরের সুন্নাত হল সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। তাই অবহেলা বশত কখনোই ফজরের সুন্নাত ছেড়ে দেয়া যাবে না।

৪. চা কিংবা উষ্ণ পানি পান করুন

ইবাদাতের পর নিজের মনকে এবং দেহকে প্রাণবন্ত এবং সতেজ রাখতে চা কিংবা উষ্ণ পানির বিকল্প নেই। প্রয়োজনে গ্রিন টি পান করতে পারেন। এটা আপনার ক্লান্তি দূর করতে বেশ সহায়তা করবে। ভাল স্বাস্থ্য থাকলে ইবাদাতে মনোযোগ আসে।

৫. সারা দিনের পরিকল্পনা তৈরি করুন

রুটিন কিংবা প্রতিদিনের পরিকল্পনা আপনার লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আপনার কাজের গতি আনবে। আপনি কোন কাজের পর কোন কাজ করবেন এরকম একটি রুটিন নিজের মনে একে নিন। দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলোকে আলাদা গুরুত্ব দিন।

৬. প্রকৃতির সঙ্গে কিছু সময় ব্যয় করুন

বিশ্বাস করুন আর না করুন আল্লাহর দেয়া এই প্রকৃতির সঙ্গে কিছুটা সময় ব্যয় করাটা আপনার দেহ এবং মনের জন্য অনেক বেশী দরকারি। এটা আপনাকে স্রষ্টার প্রতি আরও বেশী কৃতজ্ঞতা বোধ তৈরি করবে। সন্তুষ্টি এবং আশাবাদী করে তুলবে আপনাকে। আল্লাহ তায়ালার দেয়া নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা নেয়ামতকে বৃদ্ধি করে দেয়। তাই কয়েক মুহূর্ত সময় নিন আল্লাহকে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য। আপনার হৃদয় মধ্যে কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা অনুভব করুন আল্লাহর প্রতি।

এবং সকালে আপনি হালকা একটু ব্যায়ামও করে নিতে পারেন এটাও আপনার দেহের জন্য বেশ উপকারী হবে।

৭. পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নাস্তার তালিকায় রাখুন

আপনার শরীরকে জাগিয়ে তোলতে স্বাস্থ্যকর খাবার জ্বালানীর মত কাজ করবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে সকালের খাবার সারাদিনের শক্তি যোগায় তাই স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার দেহকে সারাদিন শক্তিশালী রাখবে এটাই স্বাভাবিক। পুষ্টিকর খাবারকে প্রথমে পছন্দে রাখুন। কাজকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে সকালের নাস্তাকে অবহেলা করবেন না। এছাড়া রাসূল (ﷺ) বলেন,

‘যে ব্যক্তি সকাল বেলা সাতটি খেজুর খায় সারাদিন তাকে বিষ কিংবা যাদু কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’

(বুখারি: ৫৪৪৫, মুসলিম: ২০৪৭)

৮. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করুন

প্রতিদিন সকালের কিছু সময় ব্যয় করুন ঘর কিংবা নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায়। অনেকে সপ্তাহে একবার ঘর কিংবা অনান্য আসবাপত্র পরিষ্কার করে। কিন্তু এক সপ্তাহ পর কাজের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় এটা  আপনার মানসিক চাপ এবং দেহের উপরও চাপ ফেলে। কিন্তু প্রতিদিন করলে সপ্তাহ শেষে আর কাজ করতে হয় না।

শেষ কথা

পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের মুসলিম সমাজে ইসলামী জীবনধারা হারিয়ে যেতে চলছে। আর এই হারানোর দায় নারী-পুরুষ উভয়ের। মুসলমান নারী এবং পুরুষ উভয়কে ইসলামী জীবনধারা অনুসরণ করা উচিত। উপরে উল্লেখিত লেখা সূমহ আপনার অভ্যাস পরিবর্তনের পাশাপাশি একজন সফল নারীতে রূপান্তর করবে ইন শা আল্লাহ।

দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।

Jahirul.Islam

Recent Posts

How Much Does It Cost to Build a Barndominium in 2025

If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…

5 days ago

How Long Does It Take to Charge a Car Battery

A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…

6 days ago

How Can I Plan a Trip to PR by Myself

Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…

6 days ago

How to Teach My Four Year Old to Share

Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…

6 days ago

How to Dispose of Old Gasoline Safely and Legally

Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…

6 days ago

How to Date an Entity Hentai

If you’re a fan of anime and are curious about the stranger, more supernatural side…

6 days ago