ফজিলত পূর্ণ দুয়া

সাধারণ দিনগুলোর যে ৫ সময় দোয়া কবুল হয় , জেনে নিন ।

কোনো উপলক্ষ্য কিংবা বিশেষ দিনক্ষণ ছাড়া সাধারণ দিনগুলোতে এমন কিছু মুহূর্ত রয়েছে, যখন দোয়া করলে মহান আল্লাহ বান্দার চাওয়াগুলো পূরণ কবুল করে নেন। মানুষ দোয়া কবুলের এসব মুহূর্তগুলো অবহেলায় কাটিয়ে দেয়। একটু সচেতন হলেই কাঙিক্ষত সময়ে আল্লাহর কাছে ধরণা দেয়া সহজ হয়।

প্রশ্ন হলো- সাধারণ দিনগুলোর সেই কাঙ্ক্ষিত সময়গুলো কখন? বান্দা আল্লাহর কাছে কী চাইবে? বান্দার চাওয়ার সঙ্গে আল্লাহর রাগ হওয়া কিংবা অন্য জাতি সৃষ্টি করার সম্পর্কই বা কী?

দোয়া হলো আল্লাহর কাছে চাওয়া। আল্লাহর কাছে নিজেকে ছোট হিসেবে উপস্থাপন করা। এ দোয়াই ইবাদতের মূল। আল্লাহর কাছ ছোট না হলে, কোনো কিছু প্রার্থনা না করলে, মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন না। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার কাছে কোনো কিছু চায় না, ওই ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তাআলা রাগান্বিত হন।’

‘হ্যাঁ’, বান্দা মহান প্রভুর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করবে। কেননা বান্দা ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক গোনাহ করে থাকে। আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়। এ সবের কারণেই বান্দা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি আশ্রয় প্রার্থনা করবে। আর এতেই মহান আল্লাহ খুশি হন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, বিশেষ উপলক্ষ্য বা বিশেষ দিনক্ষণ ছাড়াও সাধারণ দিনগুলোতে দোয়া কবুলের মুহূর্তগুলোতে বেশি বেশি আশ্রয় চাওয়া। আর সে মুহূর্তগুলো হলো-

> আজানের সময়
যখন নামাজের জন্য আজান দেয়া হয়, সে সময়টিতে দোয়া কবুল হয়। ওই সময়টিতে আজানের উত্তর দেয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে দোয়া করা। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন আজান দেয়া হয়, তখন আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং ওই সময় দোয়া কবুল করা হয়। (তারগিব)

> ঠিক দুপুরে
সূর্য যখন বরাবর মাথার উপরে অবস্থান করে অর্থাৎ জোহরের আজানের আগ মুহূর্তে দোয়া কবুল হয়। কারণ এ সময়টিতে আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, সূর্য যখন মধ্যাকাশ থেকে পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়তে শুরু করে। অতঃপর জোহরের নামাজ পর্যন্ত তা আর বন্ধ করা হয় না।’ (সহিহ জামে)

> নামাজের জন্য অপেক্ষাকালীন সময়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা এই মর্মে সুসংবাদ গ্রহণ কর যে, তোমাদের রব আসমানের দরজাসমূহ খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলছেন- ‘আমার বান্দাগণ আমার নির্দেশিত ফরজ আদায়ের পর পরবর্তী ওয়াক্তের ফরজ নামাজের জন্য অপেক্ষা করছে’। (ইবনে মাজাহ)

> আল্লাহর প্রশংসার সময়
বান্দা যখন আল্লাহর প্রশংসা করেন, তখন আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করেন। এ জন্য সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর প্রসংশার কথা বলেছেন আল্লাহ তাআলা। আবার কোনো বান্দা যখন এই তাসবিহ পড়ে তখন আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়-
اللهُ أكبرُ كبيرًا والحمدُ للهِ كثيرًا وسبحانَ اللهِ بكرةً وأصيلًا
‘আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও ওয়া আসিলা’

একদিন আমরা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম। ওই সময় লোকদের মধ্য থেকে এক জন বলে ওঠলো-
اللهُ أكبرُ كبيرًا والحمدُ للهِ كثيرًا وسبحانَ اللهِ بكرةً وأصيلًا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও ওয়া আসিলা।’
অর্থ : ‘আল্লাহ অতি মহান; আল্লাহ তাআলার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি।’

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ শেষ করে জানতে চাইলেন- এই কথাগুলো (তাসবিহ) কে বলেছে?
উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন বলল- হে আল্লাহর রাসুল! আমি।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- ‘এ দোয়ায় আমি খুব আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে।
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এ কথা শোনার পর থেকে এ তাসবিহ-এর পাঠ আমি কখনো ছেড়ে দেইনি।’ (মুসলিম, তিরমিজি)

> রাতের শেষ সময়ে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অর্ধেক রাত অতিবাহিত হওয়ার পর একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন-
-‘কোনো আবেদন পেশকারী আছে কি? তার আবেদন গ্রহণ করা হবে।
– কারো চাওয়া-পাওয়ার কিছু আছে কি? তার চাওয়া-পাওয়া কবুল করা হবে।
– আছে কোনো বিপদগ্রস্থ ব্যক্তি? তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করা হবে। ওই সময় পেশাদার ব্যভিচারী (নারী-পুরুষ) ব্যতিত কোনো মুসলিমের দোয়াই বিফলে যায় না।’ (তারগিব)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো উপলক্ষ্য বা বিশেষ দিন ছাড়াও আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। সাধারণ দিনগুলোর এ সময়গুলো অবহেলা ও ঘুমে কাটিয়ে দেয় অনেকেই। না, এ সময়গুলোকে কাজে লাগানোই মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সাধারন দিনগুলোর এ সময়গুলোতে ক্ষমা প্রার্থনা ও আশ্রয় লাভের তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন ।

Jahirul.Islam

Recent Posts

How Much Does It Cost to Build a Barndominium in 2025

If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…

4 days ago

How Long Does It Take to Charge a Car Battery

A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…

5 days ago

How Can I Plan a Trip to PR by Myself

Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…

5 days ago

How to Teach My Four Year Old to Share

Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…

5 days ago

How to Dispose of Old Gasoline Safely and Legally

Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…

5 days ago

How to Date an Entity Hentai

If you’re a fan of anime and are curious about the stranger, more supernatural side…

5 days ago