ইসলামিক ছবি

সাবধান খোঁটা দেওয়ার ভয়াবহ কুফল

ইসলামে পরোপকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা ঈমানের দাবি এবং আল্লাহ তা‘আলার অত্যন্ত পসন্দনীয় কাজ। এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

خَيْرُ النَّاسِ أَنْفَعُهُمْ لِلنَّاسِ

“যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ।”

মানুষের উপকার করা যায় বিভিন্নভাবে। অর্থ দিয়ে, শক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে এবং বিদ্যা দিয়ে। আল্লাহ তা‘আলা একেকজনকে একেকরকম যোগ্যতা দিয়েছেন। যার যেই যোগ্যতা আছে, সে যদি তার সেই যোগ্যতাকে সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত করে, তবেই তার সেই যোগ্যতা সার্থক হয়। এর দ্বারা সে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে সাফল্যম-িত হয়। বস্তুত আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যে-কোনও যোগ্যতা দেনই এজন্যে যে, সে তা মানব-সেবায় নিয়োজিত করে নিজ জীবনকে সফল করে তুলবে।

পরোপকার যে পন্থায়ই করা হোক, আল্লাহ তা‘আলার কাছে তা কবুল হওয়া এবং একটি মর্যাদাপূর্ণ কাজরূপে গণ্য হওয়ার জন্য শর্ত হল- ইখলাস থাকা। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে করা এবং পার্থিব কোনও উদ্দেশ্য না থাকা। পার্থিব উদ্দেশ্য বলতে- যার উপকার করা হল তার কাছ থেকে কোনও বদলা পাওয়া কিংবা সুনাম-সুখ্যাতি লাভ করা, সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন করা বা অন্য কোনও রকমের সুবিধাভোগ হতে পারে। মু’মিনের পরোপকার এইসকল উপসর্গ থেকে মুক্ত হওয়া জরুরি। তার প্রাণের কথা হবে-

اِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللّٰهِ لَا نُرِیْدُ مِنْكُمْ جَزَآءً وَّ لَا شُكُوْرًا.

অর্থ : ‘আমরা তো তোমাদেরকে খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে। আমরা তোমাদের কাছে কোনও প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও না।’ -সূরা দাহ্র, (৭৬) : ৯

মু’মিন তো এই ভেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবে যে, আল্লাহর দেওয়া জান-মাল ও আল্লাহর দেওয়া জ্ঞান-বুদ্ধিকে সে আল্লাহর বান্দার সেবায় ব্যয় করতে পারছে। এ ব্যয়ের লাভ তো শেষটায় নিজের ভাগেই আসবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা তো মেহেরবানী করে তার প্রদত্ত জান-মাল জান্নাতের বিনিময়ে তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেন-

اِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰی مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ .

অর্থ : ‘আল্লাহ মু’মিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে- এর বিনিময়ে।’ -সূরা তাওবা (৯) : ১১১

এক হাদীসে আছে-

مَنْ نَّفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَ مَنْ يَّسَّرَ عَلٰى مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللهُ عَلَيْهِ فِىْ الدُّنْيَا وَ الْاٰخِرَةِ وَ مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَه اللهُ فِىْ الدُّنْيَا وَ الْآخِرَةِ وَ اللهُ فِىْ عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدِ فِىْ عَوْنِ اَخِيْهِ.

‘যে ব্যক্তি কোনও মু’মিনের দুনিয়াবী সংকটসমূহ থেকে একটা সংকট মোচন করে দেয়, আল্লাহ তা‘আলা তার আখিরাতের সংকটসমূহের একটা সংকট মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনও অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার দুনিয়া ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনও মুসলিমের দোষ-গুণ গোপন করবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬৯৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৬; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৪২৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৭৪২৭

এ হাদীস জানাচ্ছে- পরোপকারের লাভ কেবল আখিরাতেই নয়, দুনিয়ায়ও পাওয়া যায়। তবে তা পাওয়া যায় কেবল তখনই, যখন লক্ষবস্তু হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি।

যে ব্যক্তি পরোপকার করে আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের জন্য, পার্থিব স্বার্থে নয়, সে কখনও এদিকে লক্ষ করে না যে, সে যার উপকার করেছে তার পক্ষ হতে কি রকম আচরণ পাচ্ছে। তাই তার খোঁটা দেওয়ারও কোনও অবকাশ আসে না। খোঁটা দিতে পারে তো কেবল সেই, যে উপকার করে পার্থিব প্রাপ্তির আশায়। সে যখন তার আশানুরূপ ফল না পায়, তখন হতাশ হয়। সেই হতাশারই প্রকাশ ঘটে খোঁটাদানের মাধ্যমে।

অনেক সময় ইখলাসের সংগে উপকার করার পরও নগদপ্রাপ্তির দিকে নজর চলে যায়। ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে বিনিময় তার পাওয়ার ছিল, তা থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। কাজেই পরোপকারের সুফল লাভের জন্য শুরুর ইখলাসই যথেষ্ট নয়, পরবর্তী সময়ে সেই ইখলাসের উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকাও জরুরি। অন্যথায় তার ইখলাসের সংগে কৃত পরোপকারও নিষ্ফল হয়ে যায়। তাইতো আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ثُمَّ لَا یُتْبِعُوْنَ مَاۤ اَنْفَقُوْا مَنًّا وَّ لَاۤ اَذًی ۙ لَّهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ.

অর্থ : ‘যারা নিজ সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে আর ব্যয় করার পর খোঁটা দেয় না এবং কোনও কষ্টও দেয় না, তারা নিজ প্রতিপালকের কাছে তাদের প্রতিদান পাবে। তাদের কোনও ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না।’ -সূরা বাকারা (২) : ২৬২

এ আয়াতে জানানো হচ্ছে- আল্লাহর পথে কৃত ব্যয়ের সুফল লাভের জন্যে শর্ত হল, পরবর্তীকালে সেই দানের জন্য কোনওরূপ খোঁটা না দেওয়া এবং কোনও কষ্ট না দেওয়া। বলা বাহুল্য, কোনও দান আল্লাহর পথে হয় তখনই, যখন তাতে ইখলাস থাকে। তাহলে এই আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, কেবল দানকালীন ইখলাসই যথেষ্ট নয়, বরং দানের পরও ইখলাস রক্ষা জরুরি। খোঁটা দেওয়া ইখলাসের পরিপন্থী। কেননা খোঁটা দেওয়াই হয় পার্থিব প্রত্যাশা পূরণ না হলে।

খোঁটা দ্বারা কেবল দান-খয়রাত ও পরোপকারের ছওয়াবই নষ্ট হয় না; বরং এটা একটা কঠিন পাপও বটে। কেননা এর দ্বারা উপকৃত ব্যক্তির অন্তরে আঘাত দেওয়া হয়। মানুষের মনে আঘাত দেওয়া কবীরা গুনাহ। সুতরাং খোঁটা দেওয়া ইসলাম ও ঈমানের সংগে সংগতিপূর্ণ নয়। কেননা মুসলিম বলাই হয় তাকে, যার হাত ও মুখ থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে (সহীহ বুখারী, হাদীস ১০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪১)। আর মু’মিন সেই, যার ক্ষতি থেকে সকল মানুষ নিরাপদ থাকে (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৫৬১ )। এজন্যেই খোঁটা দেওয়াকে কুরআন মাজীদে কাফের-বেঈমানের কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقٰتِكُمْ بِالْمَنِّ وَ الْاَذٰی ۙ كَالَّذِیْ یُنْفِقُ مَالَهٗ رِئَآءَ النَّاسِ وَ لَا یُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ فَمَثَلُهٗ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَیْهِ تُرَابٌ فَاَصَابَهٗ وَابِلٌ فَتَرَكَهٗ صَلْدًا ؕ لَا یَقْدِرُوْنَ عَلٰی شَیْءٍ مِّمَّا كَسَبُوْا ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْكٰفِرِیْنَ.

অর্থ : ‘হে মু’মিনগণ! খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-সদকাকে সেই ব্যক্তির মত নষ্ট করো না, যে নিজের সম্পদ ব্যয় করে মানুষকে দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ^াস রাখে না। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত এরকম, যেমন এক মসৃণ পাথরের উপরে মাটি জমে আছে, অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ে এবং তা সেই মাটিকে ধুয়ে নিয়ে যায় এবং সেটিকে পুনরায় মসৃণ পাথর বানিয়ে দেয়। এরূপ লোক যা উপার্জন করে, তার কিছুমাত্র তারা হস্তগত করতে পারে না। আর আল্লাহ এরূপ কাফেরদেরকে হেদায়াতপ্রাপ্ত করেন না।’ -সূরা বাকারা (২) : ২৬৪

অর্থাৎ খোঁটা দেওয়া কাফেরদেরই বৈশিষ্ট্য। তারা যেহেতু আখিরাতে বিশ্বাস করে না, তাই ছওয়াবেরও কোনও আশা থাকে না। আশা থাকে কেবল নগদপ্রাপ্তি। হয় সে ব্যক্তি তাকে আরও বেশি দেবে, নয় তার অনুরূপ উপকার তারও করবে। অন্ততপক্ষে তার গুণগান করে তো বেড়াবেই। যখন এর কোনওটা পায় না, তখন মনে করে- বৃথাই টাকা-পয়সা নষ্ট করল। এভাবে সে হতাশার শিকার হয় আর নিমকহারাম, অকৃতজ্ঞ ইত্যাদি বলে গালাগাল করে। এখন মু’মিন-ব্যক্তিও যদি খোঁটা দিয়ে বসে, তবে তা কাফেরসুলভ আচরণই হল। এর দ্বারা প্রমাণ হবে- দান বা উপকার করার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি তার উদ্দেশ্য ছিল না। যেমন কাফের ব্যক্তির সেরকম উদ্দেশ্য থাকে না। আর যে দান-খয়রাত আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য হয় না, তার পরিণাম সম্পর্কে হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

“হাশরের দিন আল্লাহ তা‘আলা এরূপ ব্যক্তিকে বলবেন- তোমাকে আমি যে অর্থ-সম্পদ দিয়েছিলাম, তা দ্বারা তুমি আমার জন্য কী করেছ? সে বলবে, হে আল্লাহ! আমি তা তোমার পথে ব্যয় করেছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। তুমি তো এজন্য করেছিলে যে, লোকে তোমাকে দাতা বলবে। তা বলাও হয়েছে। অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে দান করেছিলে তা পেয়ে গেছ। আজ আমার কাছে তোমার কোনও বদলা নেই। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৫২৮)

অথবা প্রমাণ হবে- উপকার করার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকলেও পরবর্তী সময়ে সেই উদ্দেশ্যের উপর সুদৃঢ় থাকতে পারেনি। নজর চলে গেছে নগদপ্রাপ্তির দিকে। ফলে যেই ছওয়াব তার পাওয়ার ছিল, তা তো বরবাদ করে ফেলেছেই, উপরন্তু আমলনামায় কবীরা গুনাহ যোগ করেছে। কেননা নগদ-বদলা না পাওয়ার কারণে সে তাকে খোঁটা দিয়েছে, অকৃতজ্ঞ বলেছে। এভাবে তার মনে কঠিন আঘাত দিয়েছে।

যে ব্যক্তি কারও উপকার নেয়, সে এমনিতেই মানসিকভাবে দুর্বল থাকে। তার উপর যদি খোঁটা দেওয়া হয়, তবে তা তার অন্তরে রীতিমত রক্তক্ষরণ ঘটায়। সেই রক্তক্ষরণের বিপরীতে তার দান-খয়রাত ও উপকার কোনও ধর্তব্যেই আসে না। বরং আঘাতের উৎপত্তি যেহেতু ওই উপকার থেকে, তাই উপকারটাও উপকৃত ব্যক্তির পক্ষে হয়ে যায় এক পাষাণ ভার। যেন এই উপকার না করাই তার পক্ষে ভালো ছিল। তাই তো ইরশাদ হয়েছে-

قَوْلٌ مَّعْرُوْفٌ وَّ مَغْفِرَةٌ خَیْرٌ مِّنْ صَدَقَةٍ یَّتْبَعُهَاۤ اَذًی ؕ وَ اللّٰهُ غَنِیٌّ حَلِیْمٌ.

অর্থ : ‘উত্তম কথা বলে দেওয়া ও ক্ষমা করা সেই দান-সদকা অপেক্ষা শ্রেয়, যার পর কোনও কষ্ট দেওয়া হয়। আল্লাহ অতি বেনিয়ায ও সহনশীল।’ -সূরা বাকারা (২) : ২৬৩

অর্থাৎ কেউ যদি কারও কাছে কোনও সাহায্য চায় এবং সে কোনও কারণে তা করতে না পারে, তবে তার উচিত নম্র ও ভদ্র ভাষায় তাকে জবাব দিয়ে দেওয়া। আর যদি অনুচিত পীড়াপীড়ি করে, সেজন্য তাকে ক্ষমা করা। আর এভাবে নম্রকথা বলে বিদায় করা ও ক্ষমা করা সেই দান অপেক্ষা বহু শ্রেয়, যে দানের পর খোঁটা দেওয়া হয় কিংবা অপমান করে কষ্ট দেওয়া হয়।

খোঁটা দেওয়া যে কত গর্হিত এবং আল্লাহ তা‘আলার কাছে কত ঘৃণ্য, হযরত আবূ যর (রাযি.)-এর একটি হাদীস দ্বারা তা অনুমান করা যায়। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَ لَا يَنْظُرُ اِلَيْهِمْ وَ لَا يُزَكِّيْهِمْ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ، قَالَ اَبُوْ ذَرٍّ فَقَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ثَلَاثُ مِرَارٍ، قَالَ اَبُوْ ذَرٍّ : خَابُوْا وَ خَسِرُوْا، مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ : اَلْمُسْبِلُ وَ الْمَنَّانُ وَ الْمُنْفِقُ سِلْعَتَه بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ.

‘তিন ব্যক্তি এমন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা যাদের সংগে কথা বলবেন না, তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। আবূ যর (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথাটি তিন-তিনবার বললেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তারা কারা, তারা তো সর্বস্বান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল? তিনি বললেন, (ক) যে ব্যক্তি পরিধেয় কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে রাখে; (খ) যে ব্যক্তি উপকার করার পর খোঁটা দেয় এবং (গ) যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথের মাধ্যমে পণ্য চালায়।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৬

খোঁটা দেওয়া যে কত গুরুতর অপরাধ, এ হাদীস দ্বারা তা আঁচ করা যায়। বস্তুত খোঁটাদানকারী নিজেকে মহানুভবতার উচ্চস্তর থেকে হীনতার গভীর খাদে নামিয়ে আনে। যে পরোপকার করে, সে তা আল্লাহর খলীফা হিসেবেই করে। সৃষ্টির উপর তার হাত যেন আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের হাত। এরূপ হাত সম্পর্কে হাদীস বলছে-

اَلْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ مِّنْ اليَدِ السُّفْلٰى

‘উপরের হাত নিচের হাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।’ -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৪২৭

অর্থাৎ দাতার হাত গ্রহিতার হাত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। খোঁটা দ্বারা দান-উপকারের এই মহিমা নষ্ট হয়। কারণ বিনিময়ের আশাবাদী হওয়ার কারণে সে আর আল্লাহর প্রতিনিধি থাকে না। বাহ্যদৃষ্টিতে সে উপকারকারী হলেও প্রকৃতপক্ষে সে উপকারলাভের ভিখারী। সে উপকার করেছিল স্বার্থচিন্তায় তাড়িত হয়ে। কিংবা উপকার করার পর এখন সেই তাড়না বোধ করছে। সে তার উপকারকে ছলনার স্তরে নামিয়ে এনেছে। শিকারী যেমন সশ্যদানা ছিটিয়ে পাখি বা মাছ শিকার করে, তেমনি সেও উপকারের দানা ছিটিয়ে পার্থিব স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তার হাত আর উপরের হাত থাকল না। নিচের হাত হয়ে গেল।

বান্দার সব আশা ও চাওয়া-পাওয়া তো হবে কেবল আল্লাহরই কাছে। কিন্তু খোঁটা দেওয়ার দ্বারা প্রমাণ হয়- সে মাখলূকের কাছে আশাবাদী ছিল। মাখলূকের কাছে আশাবাদ মনুষ্যত্বের মর্যাদাকে খর্ব করে এবং দৃষ্টিকে করে সংকীর্ণ। মাখলূক কতটুকুই বা দিতে পারে! অথচ আসমান-যমীনের মালিক দান-উপকারের যে বিনিময় ঘোষণা করেছেন, তা সৃষ্টির কল্পনারও অতীত।

খোঁটা দেওয়া একরকম অহমিকাও বটে। কারণ এর দ্বারা সে যাকে উপকার করেছে, তাকে নিজ কৃপাধন্য মনে করে। তাকে হীন ও ছোট ভাবে। অথচ দান-উপকার করা চাই ব্যক্তির মান-সম্ভ্রমের প্রতি লক্ষ রেখেই। অসম্ভব কি আল্লাহ তা‘আলার কাছে বিশেষ কোনও আমলের কারণে সে তার মত বহু দান-খয়রাতকারী অপেক্ষা উচ্চ মর্যাদা রাখে। তাই উপকার করা উচিত সেবার মানসিকতা নিয়ে। অত্যন্ত বিনয় ও নম্রতার সাথে। ভাবা উচিত তাকে উপকার করে প্রকৃতপক্ষে নিজে উপকৃত হচ্ছে। দান-উপকার গ্রহণ করে সে তাকে আল্লাহর কাছে বিপুল মর্যাদালাভের সুযোগ করে দিচ্ছে। যেই উপকারের সাথে এরকম মানসিকতা থাকে, খোঁটা দেওয়ার মত হীনতা তাকে স্পর্শ করতে পারে না।

আসলে খোঁটা দেওয়া একরকম ধৃষ্টতা। কারণ মানুষ খোঁটা কেবল তখনই দেয়, যখন উপকার করতে পারাকে নিজ কৃতিত্ব গণ্য করে, আল্লাহর দান ও তাওফীকের দিকে দৃষ্টি না থাকে। কেবল সামর্থ্য ও ক্ষমতা থাকলেই তো উপকার করা যায় না। এর জন্য আল্লাহর তাওফীকের দরকার হয়। দান করার পরে খোঁটা দিলে সেই তাওফীকের অমর্যাদা করা হয় এবং করা হয় অকৃতজ্ঞতা। এই অকৃতজ্ঞতা ও ধৃষ্টতার কারণেই তো কিয়ামতের দিন সে আল্লাহ তা‘আলার সুদৃষ্টি, সুবাক্য ও পরিশোধন থেকে বঞ্চিত থাকবে এবং তাকে ভোগ করতে হবে কঠিন শাস্তি। যেমনটা উপরের হাদীসে ঘোষিত হয়েছে।

খোঁটা দেওয়ারই পরিণতি যে, যার উপকার করা হয়, একসময় তার ও উপকারকারীর মধ্যে তিক্ততার সৃষ্টি হয়ে যায়। আর এটা এখন এমনই ব্যাপক যে, বলাই হয়ে থাকে- তুমি কারও উপকার করলে প্রস্তুত থেকো একদিন সে তোমার অপকার করবে। আসলে এটা উপকার করার দোষ নয়; বরং খোঁটা দেওয়া ও নিয়ত সহীহ না থাকার পরিণাম। নিয়ত সহীহ না থাকলে বিনিময়ের প্রত্যাশা থাকে। প্রত্যাশা অনুযায়ী সেই বিনিময় না পেলে খোঁটা দেওয়া হয়। যার পরিণামে সৃষ্টি হয় মনোমালিন্য। একপর্যায়ে তা শত্রুতায় গড়ায়। আর তখন ভাবা হয়, এটা সেই উপকার করার পরিণাম। অথচ সহীহ নিয়তে উপকার করলে শত্রুতা সৃষ্টির প্রশ্নই আসে না; বরং শত্রুর সংগেও ভালো ব্যবহার করলে, তার কোনও উপকার করলে এবং আদর-আপ্যায়ন করলে সে বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায়। কুরআন মাজীদে ইরশাদ-

وَ لَا تَسْتَوِی الْحَسَنَةُ وَ لَا السَّیِّئَةُ ؕ اِدْفَعْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ فَاِذَا الَّذِیْ بَیْنَكَ وَ بَیْنَهٗ عَدَاوَةٌ كَاَنَّهٗ وَلِیٌّ حَمِیْمٌ.

অর্থ : ‘ভালো ও মন্দ সমান হয় না। তুমি মন্দের জবাব দাও ভালোর দ্বারা। তাহলে যার ও তোমার মধ্যে শত্রুতা ছিল, সহসাই সে হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।’ -সূরা ফুস্সিলাত (৪১) : ৩৪

বহু হাদীস দ্বারাও এ কথা প্রমাণিত। এবং অভিজ্ঞতাও তাই বলে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস (রাযি.) বলেন, “আমি যে-কোনও ব্যক্তির উপকার করেছি। পরে দেখা গেছে তার ও আমার মধ্যে এক স্নিগ্ধময় সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে গেছে। আর যার প্রতি কখনও আমার দ্বারা মন্দ ব্যবহার হয়ে গেছে, পরে দেখতে পেয়েছি- তার ও আমার মধ্যে সম্পর্কে মলিনতা সৃষ্টি হয়েছে।” (উয়ূনুল-আখবার খ. ২, পৃ. ১৭৭)

সুতরাং দান-খয়রাত ও উপকার করার পরিণাম কখনও খারাপ হতেই পারে না, যদি তাতে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টিই উদ্দেশ্য থাকে এবং পরে কোনও রকম খোঁটা ও কষ্টদান না করা হয়ে থাকে।

উপরের আলোচনা দ্বারা বোঝা গেল, উপকার ও দান-খয়রাত করার পর খোঁটা দেওয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এটা একটি মহাপাপ এবং বহু দোষের আকর। সর্বোপরি এটা ঈমান ও ইসলামের চেতনা-পরিপন্থী কাজ ও কাফের-বেঈমানদের বৈশিষ্ট্য। মু’মিনমাত্রেরই এর থেকে বিরত থাকা অবশ্য-কর্তব্য।

বস্তুত উপকার করা অপেক্ষা কৃত উপকারকে হেফাজত করা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এমনিতে উপকার করা তো একটি নফল কাজ, কিন্তু তার হেফাজত করা ফরয এবং নষ্ট করা মহাপাপ। সেই হেফাজতের জন্যই কর্তব্য খোঁটাদান থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقٰتِكُمْ بِالْمَنِّ وَ الْاَذٰی.

অর্থ : ‘হে মু’মিনগণ! তোমরা তোমাদের দান-সদকাকে প- করো না খোঁটাদান ও কষ্ট দেওয়ার দ্বারা।’ -সূরা বাকারা (২) : ২৬৪

কারও উপকার করার পরে কোনও অবস্থাতেই যাতে খোঁটাদানের অপরাধ ঘটে না যায়, সেজন্যে কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করা যেতে পারে।

১. উপকার করার সময় এবং তার পরও আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টিলাভের চেতনাকে অন্তরে জাগ্রত রাখা। কিছুতেই পার্থিব কোনও বিনিময়ের আশাবাদী না হওয়া। সে বিনিময় বৈষয়িক হোক বা সুনাম-সুখ্যাতি হোক কিংবা হোক উপকৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা।

২. যার উপকার করা হবে, উপকার করার সময়ও এবং তার পরও তার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখা। মনে করতে হবে প্রকৃতপক্ষে সেই আমার উপকারকারী। কেননা আমার কাছে সাহায্য চেয়ে এবং আমার উপকার গ্রহণ করে সে আমাকে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। এ ব্যাপারে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস (রাযি.)-এর একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন,

“আমি তিন ব্যক্তির বদলা দিতে সক্ষম নই। (ক) যে আমাকে প্রথম সালাম দেয়; (খ) যে আমাকে মজলিসে বসার সুযোগ করে দেয় এবং (গ) যে সালাম-কালামের ইচ্ছায় আমার কাছে আসার জন্যে নিজ পদযুগলকে ধুলোমলিন করে। আর চতুর্থ এক ব্যক্তি আছে- আমার পক্ষ থেকে এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ তাকে বদলা দিতে পারবে না। জিজ্ঞেস করা হল, সে কে? তিনি বললেন- ওই ব্যক্তি, যে কোনও বিপদের সম্মুখীন হয়েছে, তারপর সারা রাত চিন্তা করেছে সাহায্যের জন্য কার কাছে যাবে। অবশেষে আমাকেই তার উপযুক্ত মনে করল এবং আমার কাছে এসে তার সেই মসিবতের কথা বলল।” (উয়ূনুল-আখবার খ. ২, পৃ. ১৭৭)

অর্থাৎ কোনও বিপন্ন ব্যক্তি যদি সাহায্যের আশায় কারও কাছে যায়, তবে এটা তার প্রতি সেই ব্যক্তির বিশেষ আস্থা এবং তাকে বিশেষ মর্যাদা দানেরই পরিচয় বহন করে। এর মাহাত্ম্য অনুধাবন করা উচিত।

৩. নিজের দান-খয়রাত ও উপকারকে ক্ষুদ্র গণ্য করা। অর্থাৎ কল্পনা করতে হবে যে, তার যা প্রয়োজন সে অনুপাতে আমি অতি সামান্যই করতে পারছি এবং আমার যা করণীয় ছিল, সে অনুযায়ী যা করছি তা খুবই নগণ্য। আর খোদা না করুন, যদি এটা কবুল না হয়, তবে তো নিতান্তই তুচ্ছ। মানুষ মানুষের উপকারার্থে কতকিছুই করছে। সে হিসেবে আমি যা করছি তা কোনও ধর্তব্যেই আসে না। কথাটিকে এভাবে বলা যায় যে, দান করার সময় তা করতে হবে বিনয়ের সংগে এবং পরেও সেই বিনয়ভাব বজায় রাখা চাই।

৪. উপকারের বিষয়টাকে গোপন রাখা। অর্থাৎ যার যেই উপকার করা হবে, যথাসম্ভব তা গোপন রাখার চেষ্টা করতে হবে। কেননা প্রকাশ করলে যেমন ইখলাস নষ্ট হতে পারে, তেমনি তা একরকম খোঁটায়ও পর্যবসিত হবার আশংকা থাকে। কেননা উপকারের কথা যদি প্রচার করে বেড়ানো হয় আর এভাবে তা তার কানে গিয়ে পৌঁছায়, তবে তা তার জন্যে নিশ্চিত পীড়াদায়ক হবে। এটাও একরকম খোঁটাই বটে। এ ব্যাপারে একটি হাদীস স্মরণ রাখা যেতে পারে। তাতে সাত ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে; হাশরের ময়দানে তারা আরশের ছায়াতলে জায়গা পাবে। তার মধ্যে এক ব্যক্তি হল-

رَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَاَخْفَاهَا حَتّٰى لَا تَعْلَمَ شِمَالُه مَا تُنْفِقُ يَمِيْنُه.

‘ওই ব্যক্তি, যে কোনও দান-সদকা করে এবং তা গোপন রাখে এমনকি তার বামহাত জানে না ডানহাত কী খরচ করে।’ -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৩১

৫. উপকার করার কথা ভুলে যাওয়া। জনৈক ব্যক্তি তার সন্তানদের উপদেশ দিয়েছিল- তোমরা যদি কারও কোনও উপকার করো, তবে তা ভুলে যেয়ো। কেননা তা স্মরণ রাখলে খোঁটা দেওয়ার আশংকা থেকে যায়। আর খোঁটা দিলে উপকার নিষ্ফল হয়ে যায়।

প্রশ্ন করা যেতে পারে, উপকৃত ব্যক্তিরও তো কর্তব্য উপকারকারীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকা। কেননা হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

مَنْ صَنَعَ اِلَيْكُمْ مَعْرُوْفًا فَكَافِئُوْهُ فَاِنْ لَّمْ تَجِدُوْا مَا تُكَافِئُوْنَه فَادْعُوْا لَه.

‘যে ব্যক্তি তোমাদের কোনও উপকার করে, তোমরা তার বদলা দিও। যদি বদলা দেওয়ার মত কিছু না পাও, তার জন্য দু‘আ করো।’ -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৬৭২; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ২৫৬৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৩৪০৮

তো কেউ যদি উপকার গ্রহণ করার পরে বদলা না দেয় বা দু‘আ না করে, এককথায় কৃতজ্ঞতা না জানায়, তবে স্বাভাবিকভাবেই খোঁটার ব্যাপারটা এসে যায় না কি? উত্তর হল, এটা সম্পূর্ণই তার ব্যাপার। উপকার লাভের পরে কৃতজ্ঞতা না জানালে সে দ্বীনের শিক্ষা অমান্য করল। এজন্য আল্লাহ তা‘আলার কাছে তার জবাবদিহি করতে হবে। যে ব্যক্তি উপকার করল, তাকে বলা হয়নি যে, তুমি তার কৃতজ্ঞতার অপেক্ষায় থেকো। বরং তাকে যেই চেতনার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তা হচ্ছে-

اِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللّٰهِ لَا نُرِیْدُ مِنْكُمْ جَزَآءً وَّ لَا شُكُوْرًا.

অর্থ : ‘আমরা তো তোমাদেরকে খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে। আমরা তোমাদের কাছে কোনও প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও না।’ -সূরা দাহ্র, (৭৬) : ৯

সুতরাং সে কৃতজ্ঞতা না জানালে খোঁটা দেওয়ার অবকাশ আসবে কেন? আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সবরকম জাহেরী ও বাতেনী ফিতনা থেকে রক্ষা করুন এবং সর্বপ্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দিন- আমীন। 

Jahirul.Islam

Recent Posts

How Much Paint to Paint a Car?

If you're planning to give your car a new look, one of your first questions…

47 minutes ago

How Much Does It Cost to Build a Barndominium in 2025

If you're thinking about building a barndominium in 2025, you're not alone. These barn-style homes…

5 days ago

How Long Does It Take to Charge a Car Battery

A dead or drained car battery can be a frustrating issue, especially when you're in…

6 days ago

How Can I Plan a Trip to PR by Myself

Dreaming of a tropical escape but want to explore on your own terms? If you’ve…

6 days ago

How to Teach My Four Year Old to Share

Teaching your child to share is one of the most valuable lessons they’ll learn in…

6 days ago

How to Dispose of Old Gasoline Safely and Legally

Old gasoline sitting in your garage or shed can pose serious risks to your health,…

6 days ago