জীন জাতি মহানবী (সা:) এর প্রতি ঈমান আনার ঘটনা

জীন জাতি মহানবী (সা:) এর প্রতি ঈমান আনার ঘটনা

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়ত লাভের পূর্বে জিন জাতি আকাশ থেকে সংবাদ সংগ্রহ করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়ত লাভের পর থেকে জিন জাতিকে আকাশের সংবাদ সংগ্রহ থেকে নিবৃত রাখা হয়। সে মতে তাদের কেউ সংবাদ শুনার মানসে উপরে গেলে তাকে উল্কাপিন্ড নিক্ষেপ করে বিতাড়িত করা হত। জিনরা এই নতুন পরিস্থিতির কারণ উদঘাটনে সচেষ্ট হলো এবং তাদের বিভিন্ন দল কারণ অনুসন্ধানে পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখন্ডে ছড়িয়ে পড়ল।

একদল হিজাযেও পৌঁছাল। সেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কয়েকজন সাহাবীসহ “বাতনে নাখলা” নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের ওকায বাজারে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। সে যুগে আরবরা আমাদের যুগের প্রদর্শনীর মতো বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ বিশেষ দিনে মেলার আয়োজন করত। এসব মেলায় বহু লোক উপস্থিত থাকত, দোকান খোলা হতো এবং সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতো। ওকায নামক স্থানে প্রতি বছর এমনি ধরনের এক মেলা বসত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্ভবত ইসলাম প্রচারের উদ্যেশ্যে সেখানে গমন করেছিলেন। নাখলা নামক স্থানে তিনি যখন ফজরের নামাজে কোরআন পাঠ করছিলেন। তখন জিনের অনুসন্ধানী দলটি সেখানে গিয়ে পৌঁছাল। তারা কোরআন পাঠ শুনে বলতে লাগল, এই সে নতুন ঘটনা যার কারনে আমাদেরকে আকাশের সংবাদ সংগ্রহে নিবৃত করা হয়েছে।
অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, জিনরা সেখানে পৌঁছে পরস্পর বলতে লাগল, চুপ করে শোন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ শেষ করলে জিনরা ইসলামের সত্যতায় বিশ্বাস স্থাপন করে ঈমান এনে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে গেল এবং তদন্ত কার্যের রিপোর্ট পেশ করে একথাও বলল, আমরা মুসলমান হয়ে গেছি।
তোমাদেরও ইসলাম গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা জিন অবতীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এই জিনদের গমনাগমন এবং তাদের কোরআন পাঠ শুনে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে কিছুই জানতেন না। সূরা জিনে আল্লাহ তাআলা তাঁকে এ বিষয়ে অবহিত করেন।
আরো এক বর্ণনায় আছে, নসীবাঈন নামক স্থানের অধিবাসী এই জিনদের সংখ্যা ছিল নয় অথবা সাত। তাদের প্রচারের ফলে পরবর্তীকালে আরো তিন শত জিন ইসলাম গ্রহনের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়।