তিনটি কবরের বিস্ময়কর সত্য ঘটনা |তিন ভাইয়ের করুন কাহিনী |কবরের আজাব

কবরের আজাব

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন! সাথে আছি আমি মোঃ জাকির

একদা এক ব্যক্তি একটি উঁচু পাহাড়ি এলাকায় একটি কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। বেশ কিছুক্ষন যাওয়ার পর হঠাৎ তার চোখে পড়লো তিনটি কবর। এবং তিনি লক্ষ্য করলেন যে, প্রত্যেকটি কবরে যেন কিছু একটা লেখা আছে। তাই তিনি গভীর আগ্রহে কবরগুলির কাছে গেলেন লেখাগুলি পড়ার জন্য। সেখানে গিয়ে তিনি যা দেখলেন তাতে তিনি বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন। কারন প্রথম কবরে লেখা ছিলো পার্থিব বা দেনন্দিন জিবনের সফলতা কি কোনো কাজে আসতে পারে।

নামাজ ব্যতিত পৃথিবীর সফলতা আখিরাতের কোনো কাজে আসবে না। কারন আল্লাহ তালা ইহকালে এবং পরকালে পৃথিবীর সকল কাজের হিসাব নিবেন। যদি ভালো কর্ম করে থাকেন তাহলে ভালো ফল পাবেন আর যদি খারাপ কর্ম করে থাকেন তাহলে খারাপ ফল পাবেন। দ্বিতীয় কবরে লেখা ছিলো, প্রকৃতপক্ষে আসল মানুষ তো সে, যে চিন্তা করে যেকোনো সময় তার মৃত্যু হয়ে যেতে পারে। যে কোনো সময় তার ক্ষনিকের বসবাস স্থান এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে তার আখিরাতের যাত্রার সাথী তার কবরে শায়িত হতে হবে।

তৃতীয় কবরে লেখা ছিলো, ভয় হয় না কেন সেই সব মানুষদের যারা বুঝতে চায় না কিছুদিন পরেই তার যৌবন বৃদ্ধে পরিনত হবে। শরীরের সকল সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে এবং চামড়া কুচকে যাবে। কবরের এই লেখাগুলো পড়ে সেগুলোর সঠিক অর্থ খুজে বের করার জন্য তিনি ওই এলাকার একজন বৃদ্ধ জ্ঞানী আলেমের কাছে গেলেন। এবং তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি এদের অর্থাৎ এই কবরগুলির কাহিনী জানেন? তখন সেই বৃদ্ধ ব্যক্তিটি বললেন হ্যা, আমি এই তিন ব্যক্তির কাহিনী জানি।

তবে তুমি যদি জানতে চাও তাহলে আমি তা বলতে পারি। তখন সেই ব্যক্তিটি বললো, আমি তাদের কাহিনী জানতে রাজি আছি। তার সেই কথা শুনে বৃদ্ধ ব্যক্তিটি বললো, চলো আমি আজ তোমাকে এই তিন ব্যক্তির কাহিনী শোনায়। এই তিনটি কবর হল তিন ভায়ের। তাদের মধ্যে এক ভাই যে বাদশার সকল কাজের দেখাশোনা করতো। দ্বিতীয় ভাই একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন এবং প্রচুর টাকার মালিক ছিলেন, আর তৃতীয় ভাই অনেক ইমানদার বান্দা ছিলেন। তিনি তার সারাটা জীবন আল্লাহর পথে ইবাদত করে কাটিয়েছেন।

হঠাৎ একদিন দুই ভায়ের কাছে তাদের ইমানদার ভাইয়ের অসুস্থের খবর এসে পৌছালো। ফলে তার দুই ভাই তাদের ইমানদার ভাইয়ের কাছে তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে তারা দেখলেন, তাদের ভাই শেষ নিঃস্বাস গুনছে। তারা তাদের ভাইকে জিজ্ঞাস করলেন তোমার কি কোনো শেষ ইচ্ছা আছে বা তুমি তোমার সম্পতি গুলোকে তোমার ছেলেমেয়েদের মধ্যে কিভাবে ভাগ করতে চাও, আমাদেরকে বলো, আমরা তাই করবো। তখন তার মৃত্যু শয্যা কালীন ভাই বলেন, তাদের দেওয়ার মত আমার কাছে কিছুই নেই।

তখন তার ভাইয়েরা বললেন, তাহলে তুমি আমদের সম্পতির কিছু অংশ নাও, আর সেই অংশ দিয়ে তোমার ছেলেমেয়ের ইচ্ছা পুরন করে যাও। বা তোমার মনের শান্তি পুরন করে যাও। তখন ওই ইমানদার ব্যক্তিটি বললেন না আমার কোনো কিছুর দরকার নাই। তাই তখন তিনি তার ব্যবসায়ী ভাইকে বললেন, ভাই তুমি আমার একটি কাজ করবে। আমি যখন মৃত্যু বরন করবো আর আমাকে গোসল করানোর পর যখন কবর দেওয়া হবে, তখন আমার কবরের উপর লেখে দিবে, যে পার্থিব বা দৈন্দদিন জীবনের সফলতা গ্রহন কি কোনো কাজে আসতে পারে। পৃথিবীর সফলতা আখিরাতের কোনো কাজে আসবে না আর আল্লাহতালা পৃথিবীর সকল কাজের হিসাব নিবেন।

যদি ভালো কাজ করে থাকেন তাহলে ভালো ফল পাবেন আর যদি খারাপ কাজ করে থাকেন তাহলে খারাপ ফল পাবেন। আর এই কথাগুলি লেখে দেওয়ার পর, পরপর তিনদিন আমার কবরের কাছে যাবে। কিছুদিন পর, ওই ইমানদার ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার ব্যবসায়ী ভাই তিনদিন তার কবরের পাশে গেলেন। এবং সর্বশেষ দিনে তিনি যখন তার ভায়ের কবরের কাছ থেকে চলে আসতে লাগলেন, তখন একটি জোরে আওয়াজ শুনতে পেলেন। এবং সেই আওয়াজ শুনে তিনি ভয়ে আতংকে সেখান থেকে চলে আসলেন।

ঘরে পৌছানোর পর তিনি যখন রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন তখন তিনি স্বপ্ন দেখলেন যে, তার ভাই তাকে বলছে, আমি মানুষকে দান করতাম না। তার কারনেই আমি কবরে সাজা পাচ্ছি। এই স্বপ্ন দেখার পর ওই ব্যক্তি নিজের ধনসম্পদ সব বিলিয়ে দিয়ে, সব আরাম আয়েস ত্যাগ করে দিয়ে আল্লাহর পথে ইবাদত করার জন্য মুশাফিরদের সাথে চলে গেলেন। তিনি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সফর করে বেড়াতেন। আল্লাহর পথে ইবাদত করতে করতে যখন তার শেষ নিশ্বাসের সময় হয়ে গেলো তখন তার ভাইকে খবর দেওয়া হল এবং তার ভাই আসার পর সে তার ভাইকে শুধু একটি কথাই বললো, আমার একটি শখ তুমি পুরন করবে।

যখন আমি মৃত্যুবরন করবো এবং আমাকে গোসল করিয়ে কবর দেওয়া হবে, তখন আমার কবরের উপর এই কথাটি লিখে দিবে, আসল মানুষ তো সে, যে চিন্তা যে কোনো সময় তার মৃত্যু হয়ে যেতে পারে। যেকোনো সময় তার ক্ষনিকের বসবাস স্থান এ পৃথিবী ছেড়ে তার আখিরাতের যাত্রা সাথি কবরে শায়িত হতে হবে। আর আমার মৃত্যুর তিনদিন পর্যন্ত তুমি আমার কবরে সাক্ষাৎ করতে যাবে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার কথামত তার ভাই তিনদিন তার কবরে গেলো এবং শেষ দিন তার কবরে একটি শব্দ শুনতে পেলো।

এবং সেই শব্দ শোনার পর তিনি ভয়ে সেখান থেকে চলে আসলেন। বাড়ি আসার পর তিনি যখন ঘুমালেন, তখন তাকে স্বপ্ন দেখানো হল যে, তার ভাই তাকে বলছে, এই পৃথিবীর মায়া বেশিদিন করোনা। ভাইয়ের এই কথা শুনে সে স্বপ্ন থেকে জেগে উঠলো এবং সে তার সন্তান্দের সকল ধন-সম্পতি বন্ঠন করে চলে গেলো সাধারন জীবন জাপনের জন্য। এই ভাবে কিছুদিন কেটে যাওয়ার পর, যখন তার জীবন প্রদিপ নিভে জাওয়ার পথে তখন সেখানে সে তার ছেলেদের ডাকলো।

এবং সে তার ছেলেকে বললো, আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে আর আমার কাছে কোনো কিছুই নাই, যা তোমাদের দিতে পারবো। বাবা হিসাবে আমার শেষ ইচ্ছা, তুমি আমার কবরে লিখে দিবে, ভয় হয় না কেন সেইসব মানুষদের যারা বুঝতে চাই না কিছুদিন পরে তাদের যৌবন বৃদ্ধে পরিনত হবে। শরীরের সকল চামড়া কুচকে যাবে।

বাবার কথামত ছেলেটি তার বাবার কবরে কথাটি লিখে দিলো। এবং বাবা মারা জাওয়ার কয়েকদিন পর রাতে সে যখন ঘুমিয়েছিলো, তখন তার বাবা তার স্বপ্নে এসে তাকে জানিয়ে দিলো, পৃথিবীতে তুমি তোমার সব কাজকর্ম সেরে নাও যত পারো আল্লাহর ইবাদত কর, মানুষের মধ্যে দান করো এবং সৎ পথে চলো। তোমার জীবন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *