বলেছেন হযরত আবদুল্লাহ বিন যুবাইর (রাঃ) একরাতে আমি হেরেম শরীফে প্রবেশ করি। সেই সময় সেখানে কয়েকজন মহিলাকে তাওয়াফ করতে দেখে অবাক হয়ে যাই। তাওয়াফ শেষ করার পর তারা বাবুল হুযাবাইন দিয়ে বের হয়ে যায়। আমি মনে মনে বললাম যে, আমি ওদের পিছনে পিছনে যাব এবং ওদের বাড়ি কোথায় দেখব। সুতরাং ওরা যেতে লাগল। আর, আমি অনুসরণ করতে লাগলাম।
শেষ পর্যন্ত ওরা এক পাহাড়ের উপত্যকায় পৌছাল। তারপর সেই পাহাড়ের উপরে উঠল। তারপর ওরা পাহাড় থেকে নেমে এক বিরান জায়গায় গিয়ে পৌছাল। আমিও পিছনে পিছনে গেলাম, সেখানে দেখলাম কয়েকজন মুরব্বি গোত্রের মানুষ বসে আছে। তারা আমাকে বলল, হে ইবনু যুবাইর! আপনি এখানে কিভাবে এলেন? আমি বললাম, আপনারা কারা? তারা বলল, আমরা জ্বিন। আমি বললাম, আমি এমন কয়েকজন মহিলাকে কাবাঘরের তাওয়াফ করতে দেখলাম, যাদেরকে অন্য প্রজাতির সৃষ্টি বলে মনে হল।
তাই আমি ওদের পিছু নিলাম। এবং ওদের পিছনে পিছনে এখানে এসে পৌঁছে গেলাম। তারা বলল, ওরা ছিল আমাদেরই মহিলা। আচ্ছা হে ইবনু যুবাইর! আপনারা কি খেতে ইচ্ছা করেন। বললাম, আমার মন চাইছে টাটকা খেজুর খেতে। সেই সময় মক্কা শরীফের কোথাও কোনও টাটকা খেজুরের চিহ্ন পর্যন্ত ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা আমার কাছে টাটকা খেজুর নিয়ে এল। আমার খাওয়া হয়ে যাবার পর তারা বলল, যেগুলো অবশিষ্ট থেকে গেছে, ওগুলি আপনি নিয়ে যান।
হজরত ইবনু যুবাইর (রাঃ) বলেছেনঃ এরপর আমি সেখান থেকে উঠি। বাড়ীর পথে পা বাড়াই। আমার উদ্দেশ্য ছিল খেজুর গুলো মক্কার লোকদের দেখানো। বাড়ি ফিরে খেজুরগুলো একটা টুকরিতে রাখলাম। টুকরিটা একটা সিন্দুকে রেখে শুয়ে পড়ি। আল্লাহর কসম! আমি তখন আধাঘুম-আধাজাগা। এমন তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায়। এমন সময় ঘরের মধ্যে হুটোপাটার আওয়াজ শুনলাম এবং শুনলাম এইসব কথাবার্তা-
হ্যাঁ, হ্যাঁ রেখেছে।
সিন্দুকে।
সিন্দুক খোল।
সিন্দুক তো খুললাম, কিন্তু খেজুর কই?
টুকরির মধ্যে
টুকরি খোলো।
টুকরি খোলত পারব না। কারণ, ইবনু যুবাইর বিসমিল্লাহ বলে টুকরি বন্ধ করেছিলেন।
তাহলে টুকরি সমেত সঙ্গে নিয়ে চলো।
সুতরাং তারা টুকরি নিয়ে চলে গেল।
হযরত ইবনু যুবাইর (রাঃ) বলছেনঃ ওরা যখন আমার ঘরের মধ্যেই ছিল, তখন লাফিয়ে কেন যে ওদের ধরিনি,- সে কথা ভাবলে আমার প্রচণ্ড আফসোস হয়।