মানব শরীর সত্যিই বিস্ময়কর। এটি একটি অভূতপূর্ব মেশিন। এই আশ্চর্য মেশিনটাকে ঢেকে রাখা হয়েছে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পোষাক দিয়ে, যার নাম চামড়া। এর উপরিভাগে আবার রয়েছে এক কোটি লোমকূপ।
আমাদের শরীরে যত ধমনী, শিরা উপশিরা রয়েছে তার সবগুলোকে বাইরে এনে একটার সাথে আরেকটাকে জড়িয়ে লম্বা করলে এটি লম্বায় হবে ৬০ হাজার মাইল। অর্থাৎ, একটি মানুষের শরীরের শিরা উপশিরা দিয়ে একজন মানুষ গোটা পৃথিবী ৩বার ঘুরে আসতে পারবে।
একজন মানুষের শরীরে রক্ত চলাচলের জন্য যে শিরা আছে, তার সবগুলো পাশাপাশি সাজালে দেড় একর জমির প্রয়োজন হবে। মানব শরীরে আছে ফসফরাস। যা আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে। মানব শরীরের ফসফরাস দিয়ে প্রায় ১২০০ দিয়াশলাই তৈরী করা যাবে।
আমাদের শরীরগুলো এতই শক্তিশালী যে প্রতিবারে ২৭৯ কেজি ওজন বল প্রয়োগ করতে পারে। আমাদের রুচিবোধের জন্য অর্থাৎ, কোনটা আমরা পছন্দ করি এটি বলে দেয়ার জন্য রয়েছে ৯ হাজার ছোট সেল। এগুলোকে আবার সাহায্য করার জন্য রয়েছে ১ কোটি ৩০ লক্ষ নার্ভ সেল।
শরীরের বাইরের বস্তুগুলোর অনুভূতির জন্য রয়েছে ৪০ লক্ষ বহির্মুখী সেল। এগুলোর দ্বারাই আমরা বুঝি কোনটা গরম, কোনটা ঠান্ডা, কোনটায় কষ্ট এবং কোনটাতে আরাম।
পৃথিবীর সকল জীবন্ত প্রাণীর দেহ গঠনের মৌলিক উপাদান একই- পানি, প্রোটিন এবং খনিজ। একই উপাদান দ্বারা সকল প্রাণীর সৃষ্টি সত্ত্বেও প্রতিটি জীবের মাঝে আছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য।
যেমন আমরা নাক দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ি কিন্তু হরিণ নিঃশ্বাস ছাড়ে চোখ দিয়ে। আবার সকল প্রণীই সাঁতার কাটার সময় সামনে যায়। তবে চিংড়ি মাছ শুধু পিছনের দিকেই সাঁতরাতে পারে। সাঁতারে ওরা সামনে যেতে পারে না।
প্রায় সকল প্রাণীই স্বাদ গ্রহণ করে জিভ দিয়ে কিন্তু প্রজাপতি স্বাদ গ্রহণ করে পেছনের পা দিয়ে। যাইহোক যেহেতু আমরা এই সংখ্যায় মানব দেহ নিয়ে আলোচনা করছি; প্রাণী বৈচিত্র নিয়ে ইনশা-আল্লাহ অন্য সংখ্যায় আলোচনা হবে।
সমগ্র মানব দেহকে আমরা নারী ও পুরুষ হিসেবে ভাগ করতে পারি। নারী ও পুরুষ একই উপাদানে সৃষ্টি হওয়ার পরও দুইয়ের মাঝে রয়েছে দৈহিক দিক দিয়ে ব্যাপক পার্থক্য। প্রধান কয়েকটি পার্থক্য তুলে ধরছি।
০১. মেয়েদের শরীর চুম্বকধর্মী আর পুরুষের শরীর বিদ্যুৎধর্মী।
০২. মেয়েদের শরীর অম্লধর্মী পুরুষের শরীর ক্ষারধর্মী।
০৩. রক্তের লাল কণিকা মেয়েদের চাইতে পুরুষের অনেক বেশী। পুরুষের এক কিউবিক মিলিমিটার রক্তে ৫০ লক্ষ রক্ত কণিকা থাকে এবং মেয়েদের থাকে ৪৫ লক্ষ।
০৪. মেয়েদের হৃদপিন্ড পুরুষের হৃদপিন্ড হতে ওজনে ৬০ গ্রাম কম।
০৫. নাড়ীর স্পন্দন পুরুষের চেয়ে নারীর মিনিটে ৫টি বেশী।
০৬.পুরুষের শরীর সামনের দিকে ভারী আর নারীর শরীর পেছনের দিকে ভারী। এজন্য নারীর মৃতদেহ পানিতে ভাসে চিৎ হয়ে আর পুরুষের মৃতদেহ ভাসে উপুড় হয়ে। আর এজন্য নারীরা হাইহিল জুতো পরে স্বাচ্ছন্দে হাটতে পারে।
উপরে উল্লেখিত পার্থক্য ছাড়াও এত বেশী পার্থক্য রয়েছে যা ক্ষুদ্র পরিসরে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।