Home কেয়ামতের আলামত সিরিয়া যুদ্ধের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত

সিরিয়া যুদ্ধের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত

by Jahirul.Islam
12 views

মূলত খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০০ বছর থেকে সিরিয়ার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়। সিরিয়াতে ইসলাম আসার সময়, সিরিয়া মূলত ‘শাম’ নামে পরিচিত ছিল এবং শাম এর বৃহত্তর অংশের অন্তর্ভুক্ত ছিল বর্তমান জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন, প্যালেস্টাইন ও দখলদার ইসরাইল। ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে হযরত ওমর (রাঃ) এর খেলাফতের সময় সিরিয়া রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এরপর হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ও হযরত আবু ওবায়দা (রাঃ) এর নেতৃত্বে একে একে পুরো বৃহত্তর সিরিয়া (শাম) ইসলামিক খেলাফতের অধীনে আসে এবং দলে দলে সেখানকার মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে। খুলাফায়ে রাশেদিনদের পরে  ১০৯৮ সাল পর্যন্ত জাজিরাতুল আরব (সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরাত,কাতার, বাহরাইন ও ওমান) ভিত্তিক উমাইয়া বংশ , আব্বাসীয় বংশ ও মিশরভিত্তিক ফাতেমীয় রাজতন্ত্রের অধীনে শাসিত হয়। ১০৯৮ থেকে ১১৮৯ সাল পর্যন্ত ক্রুসেড যুদ্ধের সময় বর্তমানের মূল সিরিয়াসহ বৃহত্তর শামের বিভিন্ন অংশ জার্মান, ইংরেজ, ইতালি ও ফ্রান্সের দ্বারা শাসিত হয়। পরবর্তীতে সেলজুক, আইয়ুবি, মামলুকদের হাত ঘুরে এই ভূখণ্ড ১৫১৬ সালে অটোম্যান সাম্রাজ্যের অধীনে আসে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে অটোম্যান সাম্রাজ্যের পরাজয়ের পর মূলসিরিয়াসহ বৃহত্তর সিরিয়া ব্রিটিশ ও ফ্রান্স সেনাবাহিনীর অধীনে আসে। এবং এই দুই সাম্রাজ্যবাদী জাতি তখন একটা চুক্তির মাধ্যমে এর উপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে। যদিও ১৯২০ সালে হাশেমি পরিবারের ফয়সাল নামক একজন তল্পিবাহককে আমীর করে একটি কয়েকমাসের ক্ষণস্থায়ী ‘সিয়িয়ান রাজতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু তা পরে আবার ‘ফ্রান্স ম্যান্ডেট’ এর অধীনে চলে আসে।

এমনিভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত ফ্রান্স সেনাবাহিনী এবং সিরীয় জাতিয়তাবাদে বিশ্বাসীদের মধ্যে দফায় দফায় কয়েকটি যুদ্ধ সংগঠিত হয় এবং ১৯৩৬ সালে সিরীয় জাতীয়তাবাদীদের ও ফ্রান্সের মধ্যে স্বাধীনতা চুক্তি সম্পাদিত হয়। এবং হাসিম আল তাসিকে প্রথম রাষ্ট্রপতি করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে তা আবার ফ্রান্স সেনাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং ১৯৪৬ সালে এপ্রিল মাসে সেনা প্রত্যাহার করে প্রজাতন্ত্রী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।

১৯৪৬ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত শুধু আরব ইসরাইল যুদ্ধ (১৯৪৮) আর ঘন ঘন সামরিক অভ্যুত্থানের ইতিহাস।  এর মাঝে সুয়েজ খাল নিয়ে ১৯৫৬ সালে দ্বিতীয় আরব ইসরাইল যুদ্ধের পরে সিরিয়া রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) এর সাথে মৈত্রী চুক্তি করে। এর ফলে সিরিয়া রাশিয়া থেকে সমর সরঞ্জাম এর সাথে সমাজতন্ত্রের চেতনাও আমদানী করতে সক্ষম হয়। ১৯৫৮ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি সিরিয়া এবং মিশর ‘সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্র’ এর ঘোষণা দেয় এবং ১৯৬১ সালে তা ভেঙ্গে যায়। এর মাঝে সিরিয়াতে আরব জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক সমাজতান্ত্রিক মতবাদ ‘বাথিজম’ এর উত্থান ঘটে এবং একে কেন্দ্র করেই সিরিয়ায় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হতে থাকে। ১৯৬৬ সালে সালেহ জাদিদ (হাদ্দাদিন গোত্রের), মুহাম্মদ উমরান (খাইয়্যাতিন গোত্রের) এবং হাফিজ আল আসাদ (কাল্বিয়্যা বা বনু কাল্ব গোত্রের) মিলে আরেক দফা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা হাতে নেয়। এবং আশ্চর্যজনকভাবে তিনজন অফিসারই শিয়া নুসাইরিয়া আকিদার। এরমাঝে ১৯৬৭ সালে সিরিয়া আবারও ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং গোলান মালভূমি হাতছাড়া হয়। এই বিষয়কে ভিত্তি করে  যুদ্ধকালীন সামরিক প্রধান হাফিজ আল আসাদ ও অপর সামরিক শাসক সালাহ জাদিদের সাথে মতপার্থক্য প্রকট হয়। যার ফলস্বরূপ, এক রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৭০ সালে হাফিজ আল আল আসাদ ক্ষমতায় আসীন হয় এবং ২০০০ সালে তার মৃত্যুর পর ৩০ বছরের শাসন শেষে তার ছেলে বাশার আল আসাদ ক্ষমতায় আসে। উল্লেখ্য, এ নুসাইরিয়া সম্প্রদায় সিরিয়ার মাত্র ১৩% শিয়ার একটি অংশ।

মূলত ১৯৭০ সালে হাফিজ আল আসাদের ক্ষমতায় আসার মাধ্যমে সিরিয়া নামক গোটা ভূখণ্ডে ইসলাম আসার পরের ইতিহাসে প্রথম কোন ব্যক্তি সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হল যে কিনা আরবদের গোত্র পরিচয়ের দিক থেকে বনু কাল্ব গোত্রের এবং আকিদাগত দিক থেকে শিয়া নুয়াইরিয়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত এবং জন্মগতভাবে পাহাড়ি উপত্যাকার একটি গ্রাম কারদাহা থেকে । আর ইমাম মাহদী আঃ এর আগমনের পূর্বে সিরিয়াতে সুফিয়ানী নামক যে অত্যাচারী বাদশার আবির্ভাব হবে সেও কিন্তু বানু কাল্ব গোত্রের লোক হবে এবং একটি পাহাড়ী উপত্যকা থেকেই। তাই ভবিষ্যৎ ইসলামের ইতিহাসের জন্য বানু কাল্ব গোত্রের লোকজন কেমন হবে তাই আমার আলোচনার বিষয় বস্তু।

২০১১ সালে আরব বসন্ত উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি বিরাট নিয়ে আসে। এক নিমিষেই আরব বিশ্বের অহংকারী ও প্রতাপশালী রাজাদের ক্ষমতার মসনদের টনক নড়ে যায়। একে একে ক্ষমতা হারান তিউনেসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেন আলী, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গদ্দাফি, মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ। কেবল ব্যাতিক্রম ঘটে সিরিয়ায়, রক্ত পিপাসু বাসার আল আসাদের কাছে হেরে যায় আরব বসন্ত।

২০১১ সালে সিরিয়ার সাধারণ মানুষ যখন আসাদের পতনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে, তখন রক্ত পিপাসু আসাদ অস্ত্র নিয়ে জনগণের উপর চরাও হয়। শুরু হয় সিরিয়ার যুদ্ধ, সিরিয়ার আসাদ বিরোধী জনগণের কাছে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। আসাদ বিরোধী জনগণের সাথে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর একটি অংশ-FSA, ইরাকের জিহাদী গোষ্ঠী ইসলামিক ইস্টেট, সিরিয়ার জিহাদী গোষ্ঠী জাবাহাত আল নুসরা, সৌদি – তুরস্ক পন্থী আহরার আল শাম, জাইশুল ইসলাম সহ আরো অনেক গুলো দল।  অপর দিকে প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয় রাশিয়া, ইরানের IRGC, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরাক ও আফগানিস্তানের শিয়া মিলিশিয়ারা।
প্রথম দিকে আসাদ বিরোধীরা একে একে দখল করে নেয় আলেপ্পো, রাক্কা, ইদলিব, দারা, দেইর আল জুর, পালমিরা, এছাড়াও রাজধানী দামেস্কের ও হোমস প্রদেশের কিছু এলাকা।

হঠাৎ করে ২০১৪ সালে ইরাক ও সিরিয়ার দুই জিহাদী গোষ্ঠী ইসলামিক ইস্টেট ও জাবাহাত আল নুসরার বিরোধ প্রকাশ পেতে শুরু করে। এই বিরোধের জেরে ইরাকের জিহাদী গোষ্ঠী ইসলামিক ইস্টেট তাদের নিয়ন্ত্রিত ইরাক ও সিরিয়ার এলাকায় খেলাফত ঘোষণা করে। এর পর তাদের উপর চরাও হয় যুক্তরাষ্ট্র, কুর্দি বাহিনী YPG, SDF, ও ইরাকের শিয়া মিলিশিয়ারা।
এর মধ্যে ২০১৫ সালে হঠাৎ করেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্লাদিমির পুতিন বাসার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয়। রাশিয়ার প্রকাশ্য অংশ গ্রহনের ফলে পুরো যুদ্ধের মোড়ই ঘুরে যায়। ২০১৬ সালে তুরস্কও সরাসরি সিরিয়ার যুদ্ধে জড়িয়ে যায়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল কুর্দি বাহিনীর অগ্রযাত্রা প্রতিরোধ করা। ২০১৭ সালে এসে আসাদ সরকার সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকাই পুনঃদখল নিতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে নতুন করে যুদ্ধের গুঞ্জন শুরু হয় ইরাকের কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে।

সিরিয়া যুদ্ধের প্রথম দিকে আমরা দেখেছিলাম ইরাকের ইসলামিক ইস্টেট(Islamic State of Iraq and Syria-ISIS) ও সিরিয়ার জাবাহাত আল নুসরা(বর্তমান হায়াতা তাহরির আল শাম-HTS) সবাই কে অবাক করার মত সাফল্য পেয়েছিল।একে একে তারা দখল করে নিয়েছিল আলেপ্পো, রাক্কা, ইদলিব, দেইর আল জুর (Deir-ez-zur), দ্বারা (Daraa),পালমিরা, হোমস প্রদেশের এর কিছু অংশ এবং হামা এর কিছু অংশ দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা গুলো ধরে রাখতে পারছে না। বরং ২০১৫ সালে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো (Aleppo) থেকে ইসলামপন্থী দের পতন এবং পরবর্তীতে ধারাবাহিক ভাবে দ্বারা (Daraa),এবং উত্তর আলেপ্পো, রাক্কা, হোমস, পালমিরা, দেইর আল জুর পতন হয়। যার কারণে অনেক মানুষ যারা পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শাসনের স্বপ্ন দেখতে ছিল তারা মারাত্মক ভাবে ব্যথিত হয়। আসুন এখন আমরা বর্তমান সময়ের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ কয়েকটি হাদিসের বর্ননা দেখে নেই।

**হযরত উমার ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমাদের শামে (সিরিয়া) ও ইয়ামেনে অপনি বরকত দান করুন। লোকেরা বলল, আমাদের নজদেও। তিনি পুনরায় বললেন, হে আল্লাহ! আমাদের শাম (সিরিয়া) দেশে ও ইয়ামেনে বরকত দান করুন। লোকেরা আবারও বলল, আমাদের নজদেও। তখন তিনি বললেন, সেখানে তো রয়েছে ভূমিকম্প ও ফেতনা-ফ্যাসাদ; আর শয়তানের শিং সেখান থেকেই বের হবে (তার উত্থান ঘটবে)।

(বোখারি : ১০৩৭)

* হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, শাম (সিরিয়া) দেশের ফিতনা এত মারাত্মক আকার ধারণ করবে যে, যার কারণে সমাজের সম্মানিত লোকজন প্রথমে বিজয়ী হবে। অবশ্যই সেটা খুব অল্প সময়ের জন্য। পরবর্তীতে তাদের উপর নিন্ম শ্রেণীর লোকজন বিজয়ী হবে, যাদের জ্ঞান বুদ্ধি খুবই কম। যাতে করে তোমাদেরকে কৃতদাস বানিয়ে রাখতে পারে, যেরকম পূর্বযুগে রাখা হত।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং ৬৭৯)

এই হাদীসের সাথে বর্তমান সিরিয়ার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভাবে মিলে যাচ্ছে। IRGC, হিজবুল্লাহ, কুর্দি বাহিনী, SDF শিয়া মিলিশিয়ারা বিজয়ী এলাকা গুলোতে সাধারণ সুন্নি মুসলিমদের উপর বর্তমানে কৃতদাসের মতই আচরণ করছে।

বর্তমানে সিরিয়াতে ইসলামিক ইস্টেট খুব নাজুক অবস্থায় আছে, উত্তর আলেপ্পো, পালমিরা, হোমস, দারা, রাক্কা, দেইর আল জুর থেকে প্রতিনিয়ত বিতারিত হচ্ছে। অপর জাবাহাত আল নুসরা আরো কয়েকটি ছোট ছোট ইসলামিক দল নিয়ে HTS (হায়াতা তাহরির আল শাম) নামে একটি জোট করেছে। যারা ইদলিব, দারা, আলেপ্পোর কিছু অংশ, হোমস এর কিছু অংশ  নিয়ন্ত্রণ করছে। সিরিয়াতে বর্তমানে যাদেরকে সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী জোট হিসাবে গণ্য করা হয়। ধারণা করা হয় এই  জোটের সৈন্য সংখ্যা ৩১ হাজারেরও বেশি।

গত 20 September 2017 কাজাকিস্তানের রাজধানী আস্তানায় ইরান, রাশিয়া, ও তুরস্কের মধ্যে ইদলিব প্রদেশ থেকে HTS (তাহরির আল শাম ) ও আফরিন শহর থেকে কুর্দি বাহিনীকে বিতাড়িত করার জন্য একটি চুক্তি হয়। এই তিনটি দেশ ইদলিব থেকে HTS কে বিতাড়িত করে সেখানে স্থায়ী ভাবে সৈন্য মোতায়েন করবে।  ছবিতে দেখুন।

** হযরত ওয়ালিদ ইবনে ইয়াজিদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কালো পতাকাবাহী হয়ে তুর্কি সম্প্রদায় বেড়িয়ে আসবে। তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক, তাদের ঘোড়ার নিশ্বাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত। যতক্ষণ না পশ্চিমারা বের হয়ে আসবে।

(আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৭৪৭)

হাদিসটিতে এরকম বুঝানো হয়েছে যে, যখন তুর্কিরা (তুরস্ক) তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসবে, তাদের যুদ্ধের সরঞ্জাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করতে থাক। যতক্ষণ পর্যন্ত পশ্চিমারা (মাগরিব অঞ্চল অর্থাৎ মরোক্কো, তিউনেসিয়া, আলজেরিয়া, লিবিয়া থেকে বর্বর বাহিনী অর্থাৎ আবকা জাতি বের হয়ে না আসবে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরাক ও সিরিয়ায় চাপের মুখে থাকা ইসলামিক ইস্টেট শুধু লিবিয়াতে ১২হাজার সৈন্য জড়ো করে জড়ো হতে শুরু করেছে এবং  নতুন অনুসারীদেরকে লিবিয়াতে হিজরত করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছে। তাই পরবর্তীতে যেকোন সময় তারা ইরাক ও সিরিয়ার মত বড় অভিযান শুরু করতে পারে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর আফ্রিকায় আল কায়দার  মাগরিব অঞ্চলের চারটি জোট একত্রিত হয়ে (Jamat Nusrat Al Islam wal Muslimin-JNIM) নামে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মালি, আলজেরিয়া, লিবিয়া ও মিশরে তাদের তৎপরতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর আমরা সবাই জানি ইসলামিক ইস্টেট ও আল কায়দার অনুসারীরা কালো পতাকা ব্যবহার করে।

* হযরত আবু কাবীল (রহঃ) বলেন, নিঃসন্দেহে পশ্চিমারা এবং ফুজাআ ও মারওয়ানের সন্তানগণ শাম দেশের মূল ভূখণ্ডে কালােপতাকার নিচে সমবেত হবে । বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হোজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি একদা মিসর বাসীকে সম্মোধন করে বলেন, হে মিশরীগণ! যখন পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের দিকে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান আসবে এবং তারা পুলের (অর্থাৎ ব্রিজের) উপর থাকা অবস্থায় তোমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে ।তোমাদের এবং তাদের মিলিয়ে প্রায় সত্তোর হাজার যোদ্ধা হবে ।সে তোমাদেরকে মিশর এবং শামদেশ থেকে লাঞ্ছিত অবস্থায় কাফের আখ্যায়িত করে বের করে দিবে । ঐ পরিস্থিতিতে  জনৈকা আরবী মহিলা পচিশ দেরহাম নিয়ে দামেস্কের গেইটে অবস্থান করবে । অতঃপর পশ্চিমারা (অর্থাৎ মাগরিব অঞ্চল থেকে আগত হলুদ পতাকাবাহী দল) হিমস নগরীতে দীর্ঘ আঠার মাস পর্যন্ত অবস্থান করবে । এদিন গুলােতে তারা যাবতীয় সম্পদ বিলি করবে এবং নারী-পুরুষদের সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করবে । কিছুদিন পর আসমানের নিচে অবস্থনরত সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোকদের অন্যতম একজন তাদের প্রতি ধেয়ে আসবে এবং তাদের সাথে যুদ্ধ করে তাদেরকে পরাজিত করবে । এক পর্যায়ে  তারা হিমস নগরী ছেড়ে দিয়ে মিশরের ভূখণ্ডে প্রবেশ  করবে।

(আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৭৬৪)

হাদীসের সারাংশ এরকম যে, প্রথমে ইসলামিক মাগরিব (মরোক্কো, তিউনেসিয়া, আলজেরিয়া, লিবিয়া ও মিশরের) লোকজন, যারা মারওয়ান ও ফুজায়া গোত্রের লোকজন আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ নামক এক ব্যক্তির আওতায় কালো পতাকার নিচে একত্রিত হবে। এবং তারা ইসলামিক মাগরিব বিজয়ী হয়ে মিশর পর্যন্ত জয় করবে। ঠিক তখনই মিশরের প্রেসিডেন্ট পালিয়ে ইউরোপ চলে যাবে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য  ইউরোপ ও আমরিকার নিকট সাহায্য চাইবে। এর পর আবকা জাতির পক্ষ থেকে আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান হিন্দ নামের আরেকজনের নেতৃত্বে হলুদ পতাকাবাহী দল আত্মপ্রকাশ করবে। তিনি কালো পতাকাবাহী দলকে পরাজিত করে মাগরিব অঞ্চল (মরোক্কো, তিউনেসিয়া, আলজেরিয়া, লিবিয়া ও মিশর) মুক্ত করবেন এবং সিরিয়ার হোমস নগরীতে ১৬মাস অবরুদ্ধ করার পর জয়লাভ করবে এবং সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক জয় করবে। আর তাদেরকেই আবকা জাতি বলা হবে, যারা অর্ধেক সিরিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখবে । আর এই হলুদ পতাকাবাহী বর্বর আবকা জাতিকে হাদিসের ভাষায় নিকৃষ্ট জাতি বলা হয়েছে। তারা নির্বিচারে নারী পুরুষ সবাইকে হত্যা করবে। এর কিছু দিন পর আসমানের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোকটি (অর্থাৎ প্রথম সুফিয়ানী) আত্মপ্রকাশ করবে এবং আসহাব ও আবকা উভয় দলের উপর সে বিজয়ী হবে। আর আবকা জাতি সুফিয়ানীর কাছে পরাজিত হয়ে মিশরে চলে যাবে। আর আসহাব জাতি সুফিয়ানীর কাছে পরাজিত হয়ে ইরাকের কূফা নগরীতে অবস্থান করবে।

হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) এর আগমনের পূর্বে সিরিয়ায় বানু কাল্ব গোত্রের সুফিয়ানী বাদশা আত্মপ্রকাশ করবে। আর এই সুফিয়ানী বাহিনী সরাসরি ইমাম মাহদী (আঃ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। যদিও সুফিয়ানী তার প্রকৃত নাম নয়, তার আসল নাম হবে আজহার ইবনে কাল্ব, অথবা উসমান, যারা বংশ গত দিক থেকে বানু উমাইয়া গোত্রের আবু সুফিয়ানের বংশের লোক হবে। আর তাদের সহযোগিরা হবে বানু কাল্ব গোত্রের। অবশ্য বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তার পিতা হাফিজ আল আসাদও কিন্তু বানু কাল্ব গোত্রের লোক, যাদেরকে আলাবী মুসলমান বলা হয়ে থাকে।

* হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, শাম (সিরিয়া) দেশে তিন ঝাণ্ডা বিশিষ্ট তিনজন লোক আত্মপ্রকাশ করবে। আসহাব , আবকা ও সুফিয়ানী ঝাণ্ডা।
আসহাব বের হবে মাশরিক (অর্থাৎ সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল ইরাক) থেকে, আবকা বের হবে মিশর থেকে এবং সুফিয়ানী বের হবে শাম দেশ (সিরিয়া) থেকে। আর সুফিয়ানী তাদের উভয়ের উপর বিজয়ী হবে।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৮৪৫)

সিরিয়াতে যখন কালো পতাকাবাহী দলের মধ্যে মতবিরোধ চরম আকার ধারণ করবে তখন মিশরে হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তারা সিরিয়ায় এসে প্রথমে হোমস শহরকে ১৬ কিংবা ১৮ মাস অবরুদ্ধ করে রাখবে, তারপর তারা হোমস শহরটি বিজয় করতে  সক্ষম হবে। হোমস (Homs) শহরটির অবস্থান হল রাজধানী দামেস্কাস (Damascus) এর উত্তরে আর আলেপ্পো (Aleppo) শহরের দক্ষিণে। অর্থাৎ দামেস্কাস এবং আলেপ্পো শহরের মাঝখানে, এটি সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর । তারপর তারা যখন সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কাস বিজয় করবে তখন দামেস্কাস শহরের আরম জনপদ ও বড় মসজিদের (অর্থাৎ বনি উমাইয়া মসজিদ, যে মসজিদে হযরত ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন) পশ্চিম পাশের দেয়াল ভূমিকম্পের কারণে বা, বড় ধরনের মিসাইলের আঘাতের কারনে ধ্বংসে পরবে। যার কারণে সেখানে ১ লক্ষ লোক নিহত হবে।

আসহাব জাতি হবে বনি হাশেম বংশের পরবর্তী প্রজন্মের সন্তানেরা। যারা সিরিয়ার পূর্বাংশ অর্থাৎ (দেইর আল জুর, হাসাকা, আবু কামাল, রাক্কা) নিয়ন্ত্রণ করবে। তারা আসবে মাশরিক অঞ্চল অর্থাৎ ইরাক ও খোরাসানের দিক থেকে। আর আবকা জাতি হবে উমাইয়া বংশের খলিফা মারওয়ানের বংশধর দের থেকে। আবকা জাতি আসবে মিশরের দিক থেকে। যারা সিরিয়ার পশ্চিমাংশ (অর্থাৎ হোমস, হামা, লাটাকিয়া দামেস্কাস শহর) নিয়ন্ত্রণ করবে।

হযরত আবু কাবিল (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, বনি হাশেম গোত্রের এক ব্যক্তি রাজত্বের মালিক হওয়ার সাথে সাথে বানি বানু উমাইয়া গোত্রের একজনকে হত্যা করবে। এভাবে চলতে চলতে সামান্য কিছু লোকজন বাকি থাকবে যাদেরকে হত্যা করা হবেনা।
হঠাৎ বনি উমাইয়া গোত্রের একজন রাজত্বের মালিক হওয়ার সাথে সাথে একজনের বিপরীতে দুইজন কে হত্যা করতে থাকবে। যার ফলে নারী ব্যতীত কোন পুরুষ লোক থাকবে না।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৮২১)

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, ইসলামিক ইস্টেট এর প্রধান আবু বকর আল বাগদাদী কিন্তু বংশগত দিক থেকে কুরাইশ বংশের লোক । আর কুরাইশ বংশ কিন্তু বনি হাশেম গোত্রের একটি শাখা।
আর আমরা সবাই জানি, আবু বকর আল বাগদাদী সিরিয়া যুদ্ধের শুরু থেকেই বাশার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধরত শিয়াদের বিরুদ্ধে মারমুখী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে,  যারা কিনা সুফিয়ানী বাহিনীর সমর্থক । সুতরাং আমরা একথা বলতেই পারি যে, ইসলামিক ইস্টেট এর পরবর্তী প্রজন্মের অনুসারীরাই হচ্ছে আসহাব জাতি। কারণ তাদের দলের প্রধান হচ্ছে বনি হাশেম গোত্রের লোক, আর তারা এসেছে মাশরিক অঞ্চল বা, পূর্বাঞ্চল (অর্থাৎ সিরিয়ার পূর্ব দিক) ইরাক থেকে।

“কিন্তু বর্তমানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাহিনী যেভাবে ইসলামিক ইস্টেট ও HTS(তাহরির আল শাম) এবং আহরার আল শামের বিরুদ্ধে সকল এলাকায় বিজয়ী হচ্ছে অনেকের মনে হতে পারে, কবে আসহাব ও আবকা জাতি হোমস আর দামেস্কাস বিজয় করবে? “
আসল কথা হচ্ছে মিশরের নীল নদ যখন পানির অভাবে শুকিয়ে যাবে এবং মিশরের অর্থনীতি ভেঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে তখনই হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতি এবং তাদের সমর্থনকারী আমরিকান ও ইউরোপের বর্বর জাতি মিশরে এসে হাজির হবে এবং পরবর্তীতে তারা সিরিয়ায় এসে হাজির হবে।

মিশরের নীল নদ শুকিয়ে যাওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করতেছে ইথিওপিয়া  সরকার, তারা ৬.৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করে নীল নদের উপর Grand Euthiopian Regiment Dam নামে পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম বাধ নির্মাণ করছে। ২০১১ সালে এই বাধ নির্মাণ শুরু হয়ে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে শেষ হওয়ার থাকলেও এখন পর্যন্ত ৭০% শতাংশের মত কাজ শেষ হয়েছে। এই বাধ নির্মাণ সম্পন্ন হলে মিশরে নীল নদের পানি আসা বন্ধ হয়ে যাবে। কারন নীল নদের পানি আসে আফ্রিকার রুয়ান্ডা নদী থেকে ইথিওপিয়া ও সুদানের উপর দিয়ে মিশরে আসে । বর্তমানে মিশরের অর্থনীতির ৭০%- ৮০% আসে কৃষি খাত থেকে। আর মিশরের কৃষি খাত সম্পূর্ণ রূপে নীল নদের  নির্ভরশীল।
তাই আগামী ১০ বছর পর মিশরের ভবিষ্যৎ কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন।

যখন আসহাব জাতি (অর্থাৎ ইরাক আসা বাহিনী ) ও আবকা জাতি (মিশর থেকে আসা বাহিনী) মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করবে তখন দামেস্কাস এর দক্ষিণ দিক থেকে ওয়াদিউল ইয়াবেস (শুষ্ক উপত্যকা)  নামক যায়গা (অর্থাৎ দারা শহর) থেকে প্রথম সুফিয়ানী বের হবে। যে কিনা বংশগত দিক থেকে বানু কাল্ব গোত্রের লোক হবে। সে নিজেকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা দাবি করবে। যারা তাকে খলিফা মানতে অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের সবাইকে সে হত্যা করবে। প্রতি মাসে তার বাহিনীতে ৩০ হাজার লোক যোগদান করবে। আর আসহাব জাতি (ইরাক থেকে আসা বাহিনী ) ও আবকা জাতি (মিশর থেকে আসা বাহিনী) তার বিশাল সৈন্য দেখা মাত্রই পরাজিত হবে।

**বিশিষ্ট সাহাবী হযরত সুবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই এমন একজন খলিফার আবির্ভাব ঘটবে, লোকজন যার হাতে বাইয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে । এবং তার নায়েব তার দুশমন হয়ে যাবে। যার কারণে একাকী পথ চলা ব্যাতিত তার কোন উপায় থাকবে না, অবশ্যই সে শাম দেশে বিজয়ী হবে। ইরাকবাসী তাকে ইবায় ফেরত নিতে চাইলে সে অস্বীকৃতি জানাবে।সে বলবে যুদ্ধের জন্য এটাই উপযুক্ত স্থান। যার কারণে ইরাকবাসী তাকে ছেড়ে চলে যাবে। এবং তার বিরুদ্ধে হিমসে সৈন্য সমাবেশ ঘটাবে।

(আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৮৭২)

এই হাদীসের প্রথমাংশের সাথে ইতোমধ্যেই আমরা পরিচিত হয়ে গেছি, সিরিয়া যুদ্ধের প্রথম দিকে ইসলামিক ইস্টেটের খলিফা আবু বকর আল বাগদাদী ও জাবাহাত আল নুসরার(বর্তমান HTS) আমির আবু মুহাম্মদ জাওলানী ছিলেন খুবই ঘনিষ্ঠ এবং তারা দুজন একত্রে বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। যখন আবু বকর আল বাগদাদী খিলাফতের ঘোষণা দিলেন তখনই আবু মুহাম্মদ জাওলানী তার শত্রু হয়ে গেলেন। হয়তো পরবর্তী সময়ে ইসলামিক ইস্টেট থেকে ইরাকবাসীও মতবিরোধে লিপ্ত হয়ে আলাদা হয়ে যাবে।

* হযরত ওযীন ইবনে আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, চতুর্থ ফিতনা মূলত রিক্কাহ (রাক্কা) থেকে শুরু হবে।
(আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৮৬৮)
ইসলামিক ইস্টেট যখন রাক্কা বিজয় করল, এর পরই তারা খিলাফতের ঘোষণা দিয়েছে, যার ফলে জাবাহাত আল নুসরা (বর্তমান HTS) সহ সিরিয়ার সকল আসাদ বিরোধীদের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এবং পরবর্তীতে ইসলামিক ইস্টেট রাক্কা শহরকে তাদের খিলাফতের রাজধানী ঘোষণা করে।

আসহাব জাতি (অর্থাৎ ইরাক থেকে আসা বাহিনী ) ও হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতি (অর্থাৎ মিশর থেকে আসা বাহিনী ) এর পতনের পর অবশ্যই দেইর-আল-জুর এর নিকটবর্তী কিরকিসিয়া নামক স্থানে তুর্কি (তুরস্ক) এবং রোমান জাতি (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স জার্মানী) সাথে সুফিয়ানী বাহিনীর (বাশার আল আসাদের  পরবর্তী শিয়া শাসক) সাথে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড়ের দখলকে কেন্দ্র করে একটি মারাত্মক যুদ্ধ হবে। যে যুদ্ধে ১ লক্ষ কোন কোন মতে, ১ লক্ষ ৬০ হাজার লোক নিহত হবে।  

***হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“সেই পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না ফোরাত থেকে সোনার পাহাড় বের হবে। তার জন্য মানুষ যুদ্ধ করবে এবং প্রতি একশ জনে নিরানব্বই জন লোক মারা যাবে। যে কজন জীবনে রক্ষা পাবে, তারা প্রত্যেকে মনে করবে, বোধ হয় একা আমিই জীবিত আছি”।

(সহিহ মুসলিম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২১৯)

অধিকাংশ মানুষ মনে করে ফোরাত নদী কেবল ইরাকে রয়েছে।  আসলে ফোরাত নদী তুরস্ক থেকে সিরিয়া হয়ে ইরাকে এসে শেষ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্ক সরকার ফোরাত নদী উপর তুরস্ক সরকার Sanliurfa province এ Autaturk Baraji Dam নামে একটি বাধ নির্মাণ করে,  এর পর সিরিয়ার সরকার Raqqa Province এ Tabqa Dam নির্মাণ করার কারনে ফোরাত নদীর পানি দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। আর হাদীসে বলা হয়েছে ফোরাত নদীর পানি শুকিয়ে স্বর্নের পাহাড় আবিষ্কার হবে।

এখন প্রশ্ন সেই স্বর্নের পাহাড় কবে আবিষ্কার হবে?

***বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, চতুর্থ ফেতনা হল অন্ধকার অন্ধত্বপূর্ণ ফেতনা। যা সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় উত্তাল হয়ে আরব অনারব প্রত্যেকটি ঘরেই প্রবেশ করবে। এই ফেতনার দ্বারা তারা (মুসলমানরা) লাঞ্ছিত ও অপদস্থ হয়ে যাবে। যে ফেতনাটি শাম দেশে (সিরিয়া) চক্কর দিতে থাকলেও রাত্রি যাপন করবে ইরাকে আর হাত পা দ্বারা আরব উপদ্বীপে (সৌদি আরব, দুবাই, কাতার, ওমান, বাহরাইন) নারা চারা করতে থাকবে। ফেতনাটি এতোই মারাত্মক আকার ধারণ করবে, যার কারণে মানুষ ভাল মন্দ কিছু বুঝতে পারবে না। একদিকে একটু শান্তির সুবাতাস আসলেও অন্য দিকে ফেতনাটি তীব্র আকার ধারণ করবে। আর কেউ এই ফেতনাটি থামানোর সাহস ও করবে না। এক পর্যায়ে সকলের কাছে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। **এই অবস্থা ১২বছর স্থায়ী থাকবে**। এরপর ফোরাত নদীতে স্বর্নের ব্রিজ প্রকাশ পাবে। যার কারনে সবাই এটি দখল করতে চাইবে এবং প্রতি ৯জনের ৭জন নিহত হয়ে যাবে।

(আল ফিতানঃ হাদীস নং ৬৭৬)

আল্লাহু আকবর, এই হাদীসে সিরিয়ার বর্তমান যুদ্ধের ১২ বছর পর (অর্থাৎ ২০২৩ সালের পর) ফোরাত নদীর তীরে স্বর্ণের পাহাড় সিরিয়ার দেইর আল জুর শহরের এর নিকটবর্তী কিরকিসিয়া নামক স্থানে ভেসে উঠবে।আর আসরে যুহুরী বইটিতে আল্লামা আলী আল কুরানী বলেছেন সিরিয়া যুদ্ধের ১৮ বছর পর (অর্থাৎ ২০২৯ সালের পর)  এই স্বর্নের পাহাড় টি ভেসে উঠবে তখন এটি দখলের জন্য তুরস্ক ও ন্যাটো বাহিনীর জোট কিরকিসিয়ার প্রান্তরে হাজির হবে আর তখনই বনি কাল্ব গোত্রের সুফিয়ানী বাহিনী অর্থাৎ ( বাশার আল আসাদের পরবর্তী শিয়া শাসক) তাদের কে প্রতিরোধ করার জন্য এগিয়ে যাবে। আর তখনই এই ভয়াবহ যুদ্ধটি হবে। হাদীসে বলা হয়েছে, এই যুদ্ধে ১ লক্ষ বা, ১ লক্ষ ৬০ হাজার লোক নিহত হবে। আর নিহতের মধ্যে বেশিরভাগ তুরস্কের সেনাবাহিনীর সৈন্য থাকবে। আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে তুর্কিরা (তুরস্ক) দুইবার বের হয়ে আসবে একবার তারা ৭০০বছর মুসলিম বিশ্ব শাসন করেছিল আর দ্বিতীয় বার বের হয়ে আসবে কিরকিসিয়ার ময়দানে। আর কিরকিসিয়ার যুদ্ধের পর তুর্কিদের (তুরস্কের অভ্যন্তরে) নিজেদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হবে।যার কারণে তারা অস্তিত্ব সংকটে পরবে। এরপর আর কোন তুর্কি (তুরস্কের ক্ষমতা) থাকবে না।

কিরকিসিয়া যুদ্ধের পর প্রথম সুফিয়ানী ইরাকের কুফা নগরীতে আসহাব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য আসবেন। কিন্তু কুফা নগরীতে এসেই তিনি অসুস্থ হয়ে আবার সিরিয়ার দিকে ফেরত যাবেন এবং ইরাক সিরিয়ার বর্ডারে এসে মৃত্যু বরণ করবেন। তার পর পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক বেরিয়ে আসবে যাকে আসল সুফিয়ানী বলা হবে । আর তিনি কুফার গনহত্যাটি ঘটাবেন। আর দ্বিতীয় সুফিয়ানী ইমাম মাহদী আঃ এর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করবেন।
আসহাব জাতি অর্থাৎ (ইসলামিক ইস্টেট) কিরকিসিয়া যুদ্ধের পর ইরাকের কুফা নগরীতে যে বৃহৎ হত্যাকাণ্ডের শিকার হবে, যার কারণে তাদের ৭০ হাজার কোন কোন মতে ১ লক্ষ লোক নিহত হবে। অবশ্য এর পূর্বে তারা বড় বড় ৭ যুদ্ধে সুফিয়ানী বাহিনীর কাছে পরাজিত হবে।

সিরিয়া যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি হাদীসের আলোকে যেভাবে ধীরে ধীরে ইমাম মাহদী (আঃ) এর আগমনের  দিকে মোড় নিবে সেটাই এই পর্বে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হবে। বর্তমান সিরিয়ার যুদ্ধটি ইরাক ও মিশরকে গ্রাস করে থেমে থাকবে না বরং পুরো মধ্য প্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, মধ্য এশিয়াকে একটি ভয়ংকর অসমাপ্ত যুদ্ধের দিকেই ঠেলে দিবে। সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ভবিষ্যতে যে ঘটনাগুলো ঘটবে সেগুলো সময়ের সাথে মিল রেখে উল্লেখ করা হবে। ( ইনশাল্লাহ)

১, ২০১১ সালে আরব বসন্ত সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে মোড় নেয়া।

২, ২০১২ সালে সিরিয়া যুদ্ধে ইরাকের জিহাদী গোষ্ঠী ইসলামিক ইস্টেট  (Islamic state of Iraq) প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ ।

৩, ২০১২ সালে ইরানের IRGC, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া ও আফগানিস্তানের শিয়া মিলিশিয়াদের প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয়া।

৪, ২০১৪ জাবাহাত আল নুসরা (বর্তমান HTS) এর সাথে বিরোধের জেরে ইসলামিক ইস্টেট (Islamic state of Iraq and syria – ISIS) খিলাফত ঘোষণা।

৫, ২০১৪ সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক ইস্টেট কে নির্মূল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের বিমান হামলা শুরু।

৬,২০১৫ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্লাদিমির পুতিনের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয়া।

৭, ২০১৬ সালে সিরিয়া যুদ্ধে ইসলামিক ইস্টেট ও কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে তুরস্কের অংশগ্রহণ।

৮, ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের জয় জয়কার অবস্থা।

৯, ২০১৭ সালে ইরাকের স্থায়ত্বশাষিত কুর্দিস্থান সরকারের সাথে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধের শুরু।

১০,সিরিয়াতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসা এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের মৃত্যুর পর  শিয়া নুসাইরি লোকজন ব্যাপকভাবে হত্যার সম্মুখীন হওয়া।

“ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত ইরাক আক্রান্ত হবে এবং নিরপরাধ ইরাকবাসী সিরিয়াতে আশ্রয় নিবে। সিরিয়া পুনঃনির্মিত হবে এবং ইরাক পুনঃনির্মিত হবে”। (মুন্তাখাব কানাজুল উম্মাল, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৫৪)

**হযরত কা’ব (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি এরশাদ করেন, বিশাল একটি জামাআতকে(দলকে) সুফিয়ানী (বাশার আল আসাদ) দুইবার পরাজিত করে তাদের উপর কর আরােপ করবে এবং তাদের জনগণকে বন্দি করবে। কুরাইশের জনৈকা নারীকে জবাই করার মাধ্যমে হত্যা করে, তার পেটচিড়ে বাচ্চা বেরকরে আনবে। এরপর সুফিয়ানী মারা গেলে তার পরিবারের সদস্যদের থেকে কতিপয় লোক ব্যাপক ভাবে হামলার মুখে পড়বে । কয়েক বৎসর পর  নিষ্ঠুরতম এক লোক(প্রথম সুফিয়ানী যে মুসলিম বিশ্বের খলিফা দাবি করবে) , অভিশপ্ত জাতির অন্তর্ভুক্ত লোকজনকে (অর্থাৎ বনিকাল্ব গোত্রের শিয়া নুসাইরি ও তাদের সহযোগী দের) তার প্রতি আহবান জানাবে। তার নাম হবে আবদুল্লাহ। সে নিজে যেমন অভিশপ্ত হবে , তার অনুসারীরাও অভিশপ্ত হবে । তাদের প্রতি আসমান ও জামিনের সবাই অভিশাপ দিবে। সে হিমস নগরীতে এসে পৌঁছবে এবং দামেস্ক নগরীতে আগুন জালিয়ে দিবে। সে বনি আব্বাসের দুই ব্যক্তিকে (অর্থাৎ আসহাব জাতি ও আবকা জাতিকে) পরাজিত করে দিবে।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৮৬৬)

১১, আসহাব জাতি অর্থাৎ ইসলামিক ইস্টেট Islamic state of Iraq and syria পরবর্তী প্রজন্ম ) পুনরায় সংগঠিত হবে এবং সিরিয়ার যুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রুপ হয়ে আত্মপ্রকাশ ।

১২, কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতির (অর্থাৎ ইসলামিক ইস্টেট এর পরবর্তী প্রজন্ম) দ্বন্দ্বে নিজেদের মধ্যে দুই ভাগ হয়ে যাওয়া এবং হিমস (Homs) শহরে  ভয়ংকর যুদ্ধ হবে।

১৩, নীল নদের উপর ইথিওপিয়া সরকারের (Grand Regiment Dam) এবং আল নাহদা বাধ (Al nahda  dam)  এর কারনে মিশরের নীল নদ শুকিয়ে গিয়ে মিশরের অর্থনীতি ভেঙ্গে যাওয়া এবং দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়া।

মিশরের নীল নদের পানি আসে আফ্রিকার রুয়ান্ডা নদী থেকে ইথিওপিয়া ও সুদানের উপর দিয়ে। বর্তমানে নীল নদের পানি উল্লেখ যোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে Al Nahda Dam এর কারণে নীল নদের কমে যাওয়ায় মিশর, ইথিওপিয়া, সুদান সরকার সবাই যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি সরবরাহ পায় এজন্য একটি চুক্তি করে। আর ইথিওপিয়া সরকার Grand regiment dam নামে ৪.৮ বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে  পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম বাধ নির্মাণ করছে, এর কাজ এখন ৭০% শেষ হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, এই বাধটি নির্মাণ শেষ হলে মিশর শুকিয়ে মরুভূমি হবে।
লিংকঃhttps://twitter.com/thenewkhaleej/status/920334871402250240

১৪, মাগরিব অঞ্চল (মরোক্কো, আলজেরিয়া, তিউনেসিয়া, আলজেরিয়া, লিবিয়া, মিশর)থেকে সাময়িক সময়ের জন্য কালো পতাকাবাহী দলের (Islamic state) এর উত্থান।

১৫, মাগরিব অঞ্চলে কালো পতাকাবাহী দলকে দমনের জন্য হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতি (Tuareg) দলের আবির্ভাব এবং সিরিয়ায় এসে কালো পতাকাবাহী দল থেকে হিমস (Homs) শহর দখল নিবে।

১৬, সিরিয়াতে আসহাব জাতি (অর্থাৎ Islamic state) ও মিশর থেকে  হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতি (অর্থাৎ Tuareg) দলের দ্বন্দ্বের কারণে সমগ্র সিরিয়ার মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হবে।

১৭,ভূমিধ্বসের কারনে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক (Damascus)  এর আরম নামক জনপদ ও বনি উমাইয়া মসজিদের পশ্চিম দেয়াল (যে মসজিদে হযরত ঈসা আঃ আকাশ থেকে নামবেন) ধ্বসে পরবে।

১৮,ওয়াদিউল ইয়াবেস (অর্থাৎ সিরিয়ার দারা (Daraa) শহর) থেকে বানু কাল্ব গোত্রের প্রথম সুফিয়ানী আত্মপ্রকাশ করে, নিজেকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা দাবি করবে এবং আসহাব জাতি (Islamic state) ও আবকা জাতির (Tuareg) দের উপর বিজয়ী হবে।

১৯,ফোরাত নদীর তীরে সিরিয়ার দেইর আল জুর (Deir-ez-zur) এর নিকটবর্তী কিরকিসিয়া নামক স্থানে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠবে এবং এটি দখলকে কেন্দ্র করে তুরস্ক ও আমেরিকানদের বিরুদ্ধে প্রথম সুফিয়ানীর ভয়াবহ যুদ্ধ হবে এবং ১ লক্ষ লোক নিহত হবে ।

২০, হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতিকে (Tuareg) দেরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার জন্য দ্বিতীয় সুফিয়ানী মিশর আক্রমণ করবে এবং পুরো মিশরকে ধ্বংস করে দিবে।

২১, কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতিকে(Islamic state) সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করার জন্য প্রথম সুফিয়ানী ইরাকের কুফা(মসূল)  নগরীতে সৈন্য পাঠাবে এবং পথিমধ্যে সে মারা যাবে।

২২, প্রথম সুফিয়ানীর মৃত্যুর পর পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি আসল সুফিয়ানী ক্ষমতা গ্রহণ করবে এবং ইরাকের কুফা নগরীতে কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতির (Islamic state) এর ৭০ হাজার বা, ১ লক্ষ লোক হত্যা করবে পরবর্তীতে পুরো ইরাকে হামলা করবে ।

**হযরত আরতাত (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন,দ্বিতীয় সুফিয়ানীর যুগে নিকৃষ্ট চরিত্রের কিছু
লোকের আবির্ভাব ঘটবে এবং শামের দিকে বিভিন্ন ধরনের ফেৎনা প্রকাশ পাবে। একপর্যায়ে প্রত্যেক জাতী মনে করবে, যে তার পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন থেকে বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে ।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৬৪৮)

প্রথম ২২টি বিষয়ে আগের পর্ব গুলোতে আলোচনা করা হয়েছে তাই এই পর্বে আর উল্লেখ করছি না। যারা আগের পর্ব গুলো পড়েননি তারা সিরিয়া যুদ্ধের বর্তমান ও ভবিষ্যৎঃ এর তিনটি পর্ব দয়া করে পড়ে নিবেন।

২৩, খোরাসান (আফগানিস্তান ও তার পার্শ্ববর্তী দেশ) থেকে হারস হাররাস নামক যুবকের নেতৃত্বে ও তার সহযোদ্ধা প্রবিন শুয়াইব বিন সালেহ সাহায্যে কালো পতাকাবাহী দল বের হবে এবং তারা ইরাকের কুফা নগরীতে ভয়ংকর যুদ্ধে আসল সুফিয়ানীকে পরাজিত করে ইরাক, সিরিয়াতে কর্তৃত্ব পাবে।

** হযরত ইবনুল হানাফিয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খোরাসান(আফগানিস্তান) থেকে কালাে ঝান্ডাবাহী দল এবং শুয়াইব ইবনে সালেহ ও মাহদী (আঃ) এর আত্মপ্রকাশ আর মাহদী (আঃ) এর হাতে ক্ষমতা  আসা বাহাত্তর মাসের (অর্থাৎ ৬বছর) মধ্যেই সংঘাত হবে ।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৮০৪)

ইরাকের কুফা নগরীতে কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতি (অর্থাৎ ইসলামিক ইস্টেট) এর হত্যাকাণ্ডের পর পরই খোরাসান(আফগানিস্তান) থেকে আরেকটি কালো পতাকাবাহী দল এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মাত্র ৪ হাজার সৈন্য নিয়ে সিরিয়ার বাদশা সুফিয়ানীর উপর হামলা করবে। আর এই আফগানিস্তান থেকে কালো পতাকাবাহী দলটি নেতৃত্ব দিবেন হারস হাররাস নামের এক যুবক, যিনি আসবেন মধ্য এশিয়া(উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, কাজাকিস্তান ও চীনের জিংজিয়াং) একটি দেশ থেকে। তাকে চিনার উপায় হচ্ছে তার বাম হাতে অথবা, বাম কাধে বড় একটি তিল থাকবে। আর তার সহযোগী যোদ্ধা হিসেবে বয়সে প্রবিন শুয়াইব বিন সালেহ নামে আরেক জন ব্যক্তি থাকবেন। আর এই বাহিনীতেই ইমাম মাহদী (আঃ) এবং মনসুর সাধারণ যোদ্ধা হিসেবে থাকবেন কিন্তু তখন তাদেরকে কে চিনবে না।

**হযরত আরতাত (রাঃ) বলেন,
“সুফিয়ানি কুফায় প্রবেশ করবে। তিনদিন পর্যন্ত সে দুশমনদের বন্দীদেরকে সেখানে আটকে রাখবে এবং সত্তর হাজার কুফাবাসীকে হত্যা করে ফেলবে। তারপর সে আঠার দিন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে তাদের (কুফাবাসীদের) সম্পদগুলো বণ্টন করবে। সুফিয়ানির কুফায় প্রবেশ করার ঘটনাটি তুরস্ক ও পশ্চিমাদের সাথে ‘কিরকিসিয়্যা’ এর ময়দানে যুদ্ধের পর ঘটবে। তাদের মধ্যে একদল খোরাসানে ফেরত যাবে। সুফিয়ানির সৈন্যবাহিনী আসবে এবং কুফার বিল্ডিংগুলো ধ্বংস করে সে খোরাসানবাসীদেরকে তালাশ করবে। খোরাসানের একটি দলের আবির্ভাব ঘটবে, যারা ইমাম মাহদির দিকে আহ্বান করবে। এরপর সুফিয়ানি মদিনার দিকে সৈন্য পাঠিয়ে রাসুলের বংশীয় লোকদেরকে বন্দী করবে। বন্দীদের কুফায় নিয়ে যাওয়া হবে। অতঃপর মাহদি ও মানসুর (একজন সেনাপতি) উভয়ে উভয়ে কুফা থেকে পলায়ন করবে। সুফিয়ানি উভয়ের তালাশে সৈন্য প্রেরণ করবে। অতঃপর যখন মাহদি ও মানসুর মক্কায় পৌঁছে যাবে, তখন সুফিয়ানির বাহিনীকে ‘বায়দা’ নামক স্থানে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। এরপর মাহদি মক্কা থেকে বের হয়ে মদিনায় যাবেন এবং ওখানে বনু হাশেমকে মুক্ত করবেন। এমন সময় কালো পতাকাবাহী লোকেরা এসে পানির উপর অবস্থান করবে। কুফায় অবস্থিত সুফিয়ানির লোকেরা কালো পতাকাবাহী দলের আগমনের কথা শুনে পলায়ন করবে। কুফার সম্মানিত লোকেরা বের হবে যাদেরকে ‘আসহাব’ বলা হয়ে থাকে, তাদের কাছে কিছু অস্ত্র শস্ত্রও থাকবে এবং তাদের মধ্যে বসরা’বাসীদের থেকে একজন লোক থাকবে। অতঃপর কুফাবাসী সুফিয়ানির লোকদেরকে ধরে ফেলবে এবং কুফার যে সব লোক তাদের হাতে থাকবে, তাদেরকে মুক্ত করবে। পরিশেষে কালো পতাকাবাহী দল এসে মাহদির হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে”।

(আল ফিতানঃ ৮৫০, মুহাক্কিক আহমদ ইবনে সুয়াইব এই হাদিসটির সনদকে ‘লাবাসা বিহা’ বা ‘বর্ণনাটি গ্রহণ করা যেতে পারে’ বলেছেন)

**হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
“সুফিয়ানির ঘোড়াগুলো (সৈন্যবাহিনী) কুফায় প্রবেশ করবে। সে তার সৈন্যদেরকে খোরাসানবাসীদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করবে। খোরাসানবাসীরা লোকদেরকে ইমাম মাহদির দিকে আহ্বান করবে (ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশের পূর্বে)। তখন সে (সুফিয়ানি) কালো পতাকাবাহী একদল হাশেমীদের মুখোমুখি হবে যার স্মমুখভাগের নেতৃত্ব দিবে শুহাইব বিন সালেহ। সে সুফিয়ানির বাহিনীকে ‘ইস্তাখর এর ফটকে’ ব্যস্ত রাখবে। এই দুই বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হবে এবং কালো পতাকাবাহী বাহিনী জয়লাভ করবে। কিন্তু সুফিয়ানির ঘোড়াগুলো (সৈন্যবাহিনী) পলায়ন করবে। এটাই হবে সেই সময় যখন লোকজন ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশের জন্য খুব আশা করতে থাকবে কারণ, তাঁকে (ইমাম মাহদিকে) তাদের প্রয়োজন”।

(নুয়া’ইম ইবনে হাম্মাদ, আল ফিতান)

‘ইস্তাখর’ বর্তমানে ইরানের সিস্তান প্রদেশের অন্তর্গত একটি পরিত্যাক্ত ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত  শহর। যা কিনা বৃহত্তর খোরাসানের অন্তর্গত।

২৪,সৌদি আরবে ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তিনজন রাজপুত্রের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে এবং এই যুদ্ধে বনি কায়েস গোত্রের (অর্থাৎ আফগানিস্তানের পশতুন বা, পাঠান জাতি) কালো পতাকাবাহী দল মারমুখী যুদ্ধ চালাবে ।

**হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“তোমাদের ধনভাণ্ডারের (রাজত্বের জন্য)  নিকট তিনজন বাদশাহ এর সন্তান যুদ্ধ করতে থাকবে। কিন্তু ধনভাণ্ডার (রাজত্ব) তাদের একজনেরও হস্তগত হবে না। তারপর পূর্ব দিক (খোরাসান) থেকে কতগুলো কালো পতাকাবাকী দল আত্মপ্রকাশ করবে। তারা তোমাদের সাথে এমন ঘোরতর লড়াই লড়বে, যেমনটি কোন সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে লড়েনি”।
বর্ণনাকারী বলেন, তারপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেন,

“তারপর আল্লাহর খলীফা মাহদির আবির্ভাব ঘটবে। তোমরা যখনই তাঁকে দেখবে, তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদি এজন্য তোমাদেরকে বরফের উপর দিয়ে হামাগুড়ি খেয়ে যেতে হয়, তবুও যাবে। সে হবে আল্লাহর খলীফা মাহদি”।

(সুনানে ইবনে মাজা; খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫১০)

২৫,ইরাকের কুফা নগরীতে খোরাসান থেকে আগত কালো পতাকাবাহী দল পুনরায় সুফিয়ানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত হবে।

২৬, নফসে জাকিয়া (পবিত্র আত্মা) কে হত্যা করা হবে। সম্ভবত খোরাসান (আফগানিস্তান)  থেকে আগত কালো পতাকাবাহী দলকে নেতৃত্ব প্রদানকারী হারস হাররাস কে বুঝানো হয়েছে।

২৭, সিরিয়ার বাদশা সুফিয়ানী সৌদি আরবে কালো পতাকাবাহী দলকে দমন করার জন্য আক্রমন করে ব্যপক হত্যাকাণ্ড ও লুটপাট চালাবে এবং সেখান থেকে ইমাম মাহদী (আঃ) ও মনসুর কে আটক করে ইরাকের কুফা নগরীতে নিয়ে যাবে ।

২৮, ইরাকের কুফা (মসূল)  নগরী থেকে ইমাম মাহদী (আঃ) ও মনসুর পালিয়ে যাবে।

২৯, পূর্ব আকাশে পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল একটি তারকা ভেসে উঠবে, যা পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে দেখা যাবে।

** হযরত কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন বনি আব্বাসীয়দের ধ্বংসের পূর্বে মাঝ আকাশে একটি নক্ষত্র দেখা যাবে তারপর বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগ দেখা দিবে। এসব কিছু হবে মূলতঃ রমযান মাসে। লালিমা প্রকাশ পাবে রমাযান মাসের পাচ
তারিখ থেকে বিশ তারিখের মধ্যে। আর বিকট শব্দ প্রকাশ হবে রমাযানের পনের তারিখ থেকে বিশ
তারিখের মধ্যে, আর দূর্বল ও রুগ্নতার আবির্ভাব হবে বিশ রমাযান থেকে  চব্বিশ রমজানের মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে। অতঃপর এমন একটি তারকা উদিত হবে ,যার আলাে হবে চন্দ্রের আলোর ন্যায়। এরপর উক্ত তারকা সাপের ন্যায় কুন্ডুলী পাকাতে থাকবে ।যার কারনে তার উভয় মাথা একটা আরেকটার সাথে মিলিত হওয়ার উপক্রম হবে । অতপর বড় একটি রাতে দুইবার ভূমিকম্প হওয়া এবং আসমান থেকে জমিনের দিকে যে তারকাটি নিক্ষিপ্ত হবে ,তার সাথে থাকবে বিকট আওয়াজ। এক পর্যায়ে সেটা পূর্ববাকাশে (অর্থাৎ চীন, জাপান, কোরিয়া) গিয়ে পতিত হবে । যা দ্বারা মানুষ বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবতের সম্মুখীন হবে ।

(নুয়াইম বিন হাম্মাদের আল ফিতানঃ হাদীস নং – ৬৪৩)

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে গত ১৭ অক্টোবর ২০১৭ বিজ্ঞানীরা দেখেন যে, মহাকাশে দুটি উজ্জ্বল নক্ষত্র (Neotron star) কে সাপের কুণ্ডলীর মতো পরস্পরের দিকে ঘুরতে থাকে এবং বিস্ফোরণ সহকারে একত্রিত হতে দেখে বিস্মিত হন। এই দুটি নক্ষত্রের বিস্ফোরণে স্বর্ন ও  প্লাটিনাম মহাকাশে ছড়িয়ে পরতে দেখে আশ্চর্য হয়ে যান। দেখুন Al jazeera news নিউজ লিংকঃ
https://twitter.com/AJENews/status/920295907169636352

৩০, পবিত্র রমজান মাসে দুইবার সূর্য গ্রহণ হবে এবং ১৫ই রমজান শুক্রবার রাতে উক্ত উজ্জ্বল তারকাটি পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে (জাপান, চীন, কোরিয়া) বিকট আওয়াজ সহকারে ধ্বসে পরবে।

**হযরত ফিরোজ দাইলামী (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন নবী করিম (সাঃ) থেকে ইরশাদ করেন যে, রমজান মাসে আকাশ থেকে একটি বিকট আওয়াজ আসবে। তখন সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন এটা কি রমজান মাসের শুরুতে হবে?  নাকি মধ্যভাগে? নাকি শেষে? উত্তরে তিনি বলেন, ১৫ই রমজান জুমার (শুক্রবার) রাতে হবে। যার কারণে ৭০ হাজার লোক জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে, ৭০ হাজার লোক বোবা হয়ে যাবে, ৭০ হাজার লোক অন্ধ হয়ে যাবে, ৭০ হাজার লোক বধির হয়ে যাবে। অতপর সাহাবীরা জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসূল, ঐদিন কারা এই আজাব থেকে মুক্তি পাবে? উত্তরে তিনি বলেন, যারা নিজের ঘরে অবস্থান করবে, উচ্চস্বরে আল্লাহু আকবর বলে তাকবির দিবে, এবং সেজদায় লুটিয়ে পরবে, তারাই মুক্তি পাবে।

(মুজমাউল কাবিরঃ অধ্যায় ১৮,পৃষ্ঠা – ৩৩২)

৩১,  পুরো আরব উপদ্বীপে (সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, ওমান) এলাকায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পরবে। এবং হজ্জ্বের সময় সৌদি আরবের মিনায় হাজীদেরকে ব্যপক হারে হত্যা করা হবে।

**হযরত ফিরোজ দাইলামী (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ঘটনা পরিক্রমায় এরকম হবে যে, বিকট আওয়াজ আসবে রমজান মাসে, ঘোরতর যুদ্ধ হবে শাওয়াল মাসে, আরবের বিভিন্ন গোত্রের মাঝে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা হবে জিলকাদ মাসে, হাজীদের লুণ্ঠন করা হবে জিলহাজ্জ মাসে। মুহাররমের শুরুটা আমার উম্মতের জন্য বিপদ আর শেষে রয়েছে মুক্তি।

(মুজমাউল কাবিরঃ অধ্যায় ১৮, পৃষ্ঠা – ৩৩২)

৩২,সাধারণ মানুষ পবিত্র কাবাঘরে ইমাম মাহদী আঃ কে চিনতে পারবে এবং তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা নির্বাচিত করা হবে।

** হাফসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেনঃ “অচিরেই এই ঘরের অর্থাৎ কা’বা ঘরের পাশে একদল লোক আশ্রয় গ্রহণ করবে। শত্রুর সাথে মোকাবেলা করার মত তাদের কোন উল্লেখযোগ্য সৈনিক কিংবা অস্ত্র-শস্ত্র বা প্রস্তুতি থাকবেনা। তাদেরকে হত্যা করার জন্য একদল সৈনিক প্রেরণ করা হবে। সৈন্যরা যখন ‘বায়দা’ নামক স্থানে পৌঁছবে তখন যমিন তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে।

কেবল মাত্র ৩১৩ জন মানুষ ইমাম মাহদী আঃ এর হাতে বাইয়াত করার সৌভাগ্য লাভ করবেন, বলতে গেলে প্রথম অবস্থায় পুরো পৃথিবীর সবাই ইমাম মাহদী (আঃ) কে জঙ্গী, সন্ত্রাসী বলেই গালি দিবে । পরবর্তীতে  আল্লাহর সাহায্যে ১ রাতের মধ্যেই তিনি পরিপূর্ণ মাহদী আঃ পরিনত হবেন।

Related Articles

Leave a Comment